পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নদী দলখ মুক্ত করার পর এবার রাজধানীর বুড়িগঙ্গা, তুরাগ,শীতলক্ষ্যা এবং বালু নদীর সীমানা পিলারের ভিতরে সরকারি জায়গায় থাকায় মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল, কলেজ, মাজার, মন্দিরসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আন্ত:মন্ত্রণালয়ের সুপারিশের পরে এ অভিযানে নামবে বিআইডব্লিউটিএ।
বিআইডব্লিউটিএর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, শিক্ষা ও ধর্ম এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে এসব প্রতিষ্ঠান গুলো স্থানান্তর এবং উচ্ছেদ অভিযানের কাজ শুরু হবে।
অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) পাকা-আধাপাকা ৪৫টি প্রতিষ্ঠান অনুমোদন ছাড়াই নির্মাণ করা অর্ধশতাধিক ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। নদীর সীমানা পিলারের ভিতরে সরকারি জায়গায় থাকায় মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল, মাজার, মন্দিরসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল, মাজার, মন্দির ও ইট ভাটা রয়েছে। অনুমোদন ছাড়া এসব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের দোকান ও গোডাউন নির্মাণ করে ভাড়া দিয়ে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। নদী দখল করে এসব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার মাধ্যমে সরকারি দলের প্রভাবশালীরা নদীর তীর ভরাট করে ফেলছে বলে স্থানীয়রা জানান। ইতোমধ্যে নদীর রক্ষা ও সীমানা পিলার স্থাপন বিষয়ে ৮৫০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন করেছে পরিকল্পনা কমিশন। এজন্য নদী দূষণ ও দখলদারদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে মন্ত্রলালয়।
এ বিষয়ে নৌ-প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ইনকিলাবকে বলেন, ঢাকার আশপাশের নদী দখল করে যারা বিশাল অট্টালিকা, মসজিদ, মন্দির ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেছে। দখলদার যত বড় প্রভাবশালী হোক না কেন, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অব্যাহত থাকবে। এক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স বজায় থাকবে। ঢাকার চারপাশের নদী তীর ঘেঁষে তৈরি হওয়া ৪৫টি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান উচ্ছেদ নয় স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ জন্য শিক্ষা ও ধর্ম এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটিতে ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়ররা এবং ইসলামি ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক ও শিক্ষা বিশেষজ্ঞদের রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমডোর এম মাহবুব-উল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, চারটি নদীর তীর উচ্ছেদ করে সীমানা পুনরায় নির্ধারণ করা হবে। এসব নদীর রক্ষা ও সীমানা পিলার স্থাপন বিষয়ে ৮৫০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন করেছে পরিকল্পনা কমিশন। এই প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে দুই বছর। ১০ হাজার সীমানা পিলার স্থাপন করা হবে। আন্ত:মন্ত্রণালয়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এখনো এ কমিটির সভা হয়নি।
বিআইডব্লিউটিএ সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা নদী বন্দরের বুড়িগঙ্গা ও তুরাগ নদীর তীরে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে ৩টি, আদি বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে রয়েছে ৬টি, টঙ্গী এলাকায় তুরাগ নদীর তীরে রয়েছে ৯টি এবং নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে রয়েছে ১১টি অবৈধ প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে ঢাকার শ্যামপুরে মসজিদে নূর মোহাম্মদীয়া, সূত্রাপুরে দেয়ালবাবা হযরত গঙ্গা শাহ (রাহঃ) নুরানী গায়েবী বাবা দরবার শরীফ ও উল্টিগঞ্জ এলাকায় উল্টিগঞ্জ জামে মসজিদ ও মাজার, শ্যামবাজারে শ্যামবাজার জামে মসজিদ। এই মসজিদের নিচতলায় ১টি পানের দোকান ও আন্ডারগ্রাউন্ডে কাঁচামালের গোডাউন ভাড়া দেয়া হয়। এছাড়া সদরঘাট এলাকায় সাড়ে চারতলা বায়তুল নাজাত জামে মসজিদ এবং সদরঘাট ছিন্নমূল এতিমখানা। এই মসজিদের নিচতলায় ২১টি পাকা দোকান ভাড়া দিয়ে বাণিজ্যিক কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। কোতোয়ালি এলাকায় নদীর তীরে অবৈধভাগে গড়ে উঠেছে বিনা স্মৃতি স্নানঘাট। কেরানীগঞ্জের মান্দাইল এলাকায় মান্দাইল জামে মসজিদ, খয়েজ নগরে খয়েজ নগর শাহী জামে মসজিদ, কেরানীগঞ্জের খোলামোড়া লঞ্চঘাট এলাকায় খোলামোড়া ঘাট জামে মসজিদ ও খোলামোড়া মহিলা মাদ্রাাসা, কামরাঙ্গীর চরের বরিশুরঘাট এলাকায় বায়তুন নূর জামে মসজিদ, কামরাঙ্গীরচরের নিজামবাগ এলাকায় জামিয়া তালবিয়া আশ্রাফুল উলুম মাদ্রাসা, কামরাঙ্গীরচরের আশ্রাফাবাদ এলাকায় বাইতুল নূর জামে মসজিদ, আশ্রাফাবাদ এলাকায় বাইতুল হোসনা জামে মসজিদ, কামরাঙ্গীরচরের নবাবচর এলাকায় নূর এতিমখানা ও মাদ্রাসা, কামরাঙ্গীর চরের মাদবরপাড়া এলাকায় বুড়িগঙ্গা গণপাঠাগার সমাজকল্যাণ সংস্থা,পূর্ব কামরাঙ্গীর চরের মুসলিমবাগ এলাকায় মুসলিমবাগ টাওয়ার জামে মসজিদ,কামরাঙ্গীর চরের বেড়িবাঁধের নূরবাগ এলাকায় বাইতুর রহমান জামে মসজিদ, কামরাঙ্গীর চরের লালগুদাম এলাকায় আল-আকসা জামে মসজিদ, কামরাঙ্গীরচরে কয়লাঘাট এলাকায় জামে মসজিদ, আশ্রাফাবাদ এলাকায় নুরজাহান জামে মসজিদ, মিরপুরের ব্রিজঘাট এলাকায় শাহী জামে মসজিদ, বড়বাজার এলাকায় বড়বাজার জামে মসজিদ, বড়বাজার মসজিদ, দারুস সালাম এলাকায় জাহানাবাদ বাইতুল রহমান জামে মসজিদ গড়ে উঠেছে। এদিকে লালবাগের ইসলামবাগে চারতলা জান্নাতুল বা’কী জামে মসজিদ, শহীদনগর বেড়িবাঁধ এলাকায় জান্নাতুল মাওয়া জামে মসজিদ, হাজারীবাগ এলাকায় ‘আ. রহিম চিশতি দরবার শরীফ, ইসলামবাগের খলিফাঘাট এলাকায় চন্দ্রপাড়া খানকা শরীফ, আব্দুল্লাপুর এলাকায় বায়তুল নূর জামে মসজিদ, টঙ্গীবাজারে দুটি পাকা বিল্ডিংয়ে টঙ্গীবাজার কেন্দীয় জামে মসজিদ, ঢাকার দক্ষিণখানের বায়তুন নূর জামে মসজিদ, উত্তর খানের গুদারঘাট এলাকায় মসজিদুল হুদা, খিলক্ষেত পাতিরা এলাকায় পাতিরা ঋষিপাড়া কালীমন্দির, খিলক্ষেতের ডেলনা এলাকায় ডেলনা এতিমখানা ও ইসলামীয়া মাদ্রাসা, কায়েতপাড়া বাউলের বাজারে শ্রীশ্রী সুধারাম বাউল সেবাশ্রম গড়ে উঠেছে। নারায়ণগঞ্জ বন্দরে গাউসুল আজম জামে মসজিদ, সিদ্ধিরগঞ্জের সাইলোগেট এলাকায় পাঁচতারা জুনিয়র হাইস্কুল, সিদ্ধিরগঞ্জের শ্মশানঘাট এলাকায় কালী-শিবমন্দির, সিদ্ধিরগঞ্জের কাঁচপুর ল্যান্ডিং স্টেশন এলাকায় পাঞ্জেগানা নামাজ ঘর, রূপগঞ্জের রূপসী এলাকায় দক্ষিণ রূপসী বায়তুল আনাম জামে মসজিদ, রূপগঞ্জ এলাকায় হযরত পাঁচপীর শাহ দরগাহ শরীফ, চানপাড়া এলাকায় মেসের পাগলের মাজার। এসব প্রতিষ্ঠানের বেশিরভাগ অংশ নদীর তীর দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে। নদীর সীমানা পিলারের ভিতরে যতটুকু অংশ পড়বে তা উচ্ছেদ করে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো স্থানান্তর করা হবে বলে জানিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।