Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

এমপিওভুক্ত না হওয়ায় শিক্ষক কর্মচারীদের মানবেতর জীবন

আশাশুনিতে ৩ প্রতিবন্ধী স্কুলের হালচাল

প্রকাশের সময় : ১৯ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

জি এম মুজিবুর রহমান, আশাশুনি (সাতক্ষীরা) থেকে
আশাশুনি উপজেলায় অবস্থিত ৩টি বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও প্রতিবন্ধী স্কুল বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ছেলেমেয়েদের পাশে দাঁড়িয়ে এলাকায় সাড়া জাগিয়েছে। প্রতিষ্ঠা লাভের পর থেকে দীর্ঘ সময় শিক্ষাদানের কাজ করে চললেও এমপিওভুক্ত না হওয়ায় চরম মানবেতর জীবন-যাপন করছেন স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারীরা। আশাশুনি সদরে অবস্থিত ‘বুদ্ধি প্রতিবন্ধী স্কুল’ ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠিত। সোপান পরিচালিত স্কুলটির ৫০ শতক জমি রয়েছে। নিবন্ধন নং ৫৩৭/২০০৪। সেই থেকে স্কুলটি হাঁটিহাঁটি পা পা করে দাঁড়িয়ে রয়েছে। সমাজের চরম অবহেলিত বিশেষ শ্রেণির শিশুদের নিয়ে কষ্টসাধ্য সাধনা করে চলেছেন শিক্ষকরা। তাদের শূন্য থেকে শিক্ষাদানের যোগ্য পরিবেশ লাভের স্বীকৃতি স্বরূপ একাডেমিক স্বীকৃতি প্রদান করা হয় ২২/১২/২০১৫ তারিখে। বর্তমানে স্কুলে আশাশুনি সদর, শোভনালী, বড়দল, বুধহাটা ও চাম্পফুল ইউনিয়নের ২২৭ জন শিক্ষার্থী রয়েছে, যার মধ্যে নিয়মিতভাবে দু’শিফটে প্রায় ১৮০ জন উপস্থিত হয়ে থাকে। ১১০জন স্কুল ফিডিং ও ৩৩ জন উপবৃত্তির আতওায় রয়েছে। শিক্ষক সংখ্যা ১৫ ও কর্মচারী ১২ জন। কক্ষ ১২টি। ৭টি স্কুল ভ্যানে (৫টি রানিং) শিক্ষার্থীদের বাড়ি থেকে আনা-নেয়া করা হয়ে থাকে। শিক্ষার ধরণ-শ্রবণ, বাক, দৃষ্টি, বুদ্ধি ও অটিজম। শিক্ষার্থীদের আচার-আচারণ, জীবন দক্ষতা, কম্পিউটার, সেলাই, সাইকেল চালনা ও অটিজম কর্ণারে শিক্ষাদান করা হয়। শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বই, স্কুল ড্রেস, যাতয়াতসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেয়া হয়ে থাকে। রয়েছে সুপেয় পানি ও সেনিটেশন ব্যবস্থা। ২০০৯ সালের নীতিমালার আলোকে শিক্ষক-কর্মচারীদের নিয়োগ দান ও স্কুল পরিচালনা করা হচ্ছে। এসএমসি সভাপতির দায়িত্বে আছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুষমা সুলতানা। শিক্ষকরা সিডিডি, সিআরপি, গণ-স্বাক্ষরতা অভিযান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। ইতিমধ্যে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব এবিএম ওমর ফারুক চৌধুরী ও এম এম সুলতান মাহমুদ, জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসান ও আবুল কাশেম মো. মহি উদ্দিন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার (দুই জন), সমাজ সেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক, সহকারী কমিশনার (ভূমি), মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা, শিক্ষা অফিসার এবং জাতীয় দলের ক্রিকেটার কার্টার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান স্কুলটি পরিদর্শন করেছেন। এতদিন অতিবাহিত হলেও স্কুলটি এখনো সরকারি বেতন-ভাতা না পাওয়ায় শিক্ষকরা চরম বিপাকে পড়েছেন। আশাশুনির দরগাহপুরে অবস্থিত ‘দরগাহপুর প্রতিবন্ধী স্কুল’। স্কুলটি ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠিত এবং ২২/১২/১৫ তাং স্বীকৃতি প্রাপ্ত। ১৬ শতক জমি রেজিস্ট্রিকৃত এবং ২ বিঘা প্রক্রিয়াধীন। ছাত্রছাত্রী ২৪০ জন এবং ৯০ জন নিয়মিত। শিক্ষক ১৫, কর্মচারী ১৫ জন। পাইকগাছা উপজেলার ৮টি, আশাশুনির ২টি ও তালার ১টি ইউনিয়ন থেকে শিক্ষার্থীরা স্কুলে এসে থাকে। ৫টি স্কুল ভ্যান রয়েছে। শিক্ষার ধরণÑ বাক প্রতিবন্ধী, অটিজম, ডাউন সিনটম ও শারীরিক। শিক্ষার্থীদের যাতায়াত ও চিকিৎসা খরচ স্কুল বহন করে। শেখ আঃ সামাদ স্মৃতি প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে মরহুম শেখ আঃ সামাদের পেনশনের টাকা থেকে শিক্ষকদের ৫০০ টাকা ও কর্মচারীদের ৩০০ টাকা সম্মানী ভাতা প্রদান করা হয়। ফাউন্ডেশনের সভাপতি মরহুম আঃ সামাদের স্ত্রী ফাতেমা বেগম। এসএমসি সভাপতি ইউএনও সুষমা সুলতানা। স্কুলটি সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব মোখলেছুর রহমান খান, যুগ্ম সচিব এম এম সুলতান মাহমুদ, উপ-পরিচালক শেখ মুহসিন আলি পরিদর্শন করেছেন। বুধহাটা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে অবস্থিত ‘বুধহাটা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়’। স্থাপিত ২০১০। শিক্ষক ৫ ও কর্মচারী ৬ জন। জমির পরিমাণ ৫৩ শতক (রেজিঃ কার্যক্রম চলমান)। শিক্ষার্থী ৭৫ জন। কক্ষ ৬টি। স্কুল ভ্যান ২টি। বুধহাটা, কুল্যা, ফিংড়ী, কাদাকাটি, শোভনালী ইউনিয়নের শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা করে। বুধহাটা প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশন পরিচালিত স্কুলটির প্রধান শিক্ষক সুরাইয়া খাতুন ও সভাপতি জুবায়ের হোসেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: এমপিওভুক্ত না হওয়ায় শিক্ষক কর্মচারীদের মানবেতর জীবন
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ