বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ির কবলে শবে বরাত-৩
সুনানে ইবনে মাজায় বর্ণিত হয়েছে : হযরত আলী ইবনে আবু তালেব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ
গত আলোচনায় উল্লিখিত কোরআন মাজীদের সে সমস্ত পরিষ্কার ও বিশদ নির্দেশ ছাড়াও মাপজোখে অবিশ্বস্তকারীদের কেয়ামতের কঠিন আজাব সম্পর্কে এমনভাবে ভীতি প্রদর্শন করেছে, যার অন্তরে আল্লাহর ভয়ের সামান্যতমও স্থান রয়েছে সে অবশ্যই কেঁপে উঠবে।
ভুলক্রমেও তার দ্বারা কখনো এ ধরনের খেয়ানত বা অবিশ্বস্ততা সংঘটিত হবে না। ইরশাদ হয়েছে, ‘বিরাট অকল্যাণ ও মন্দ পরিণতি রয়েছে মাপজোখে ভ্রষ্টাচারদের জন্য। (যাদের আচরণ হলো এই যে, যখন মানুষের কাছ থেকে তারা নিজের জন্য মেপে নেয়, তখন ভরপুর নেয়। পক্ষান্তরে অন্যদেরকে যখন তারা কোনো বস্তু-সামগ্রী মেপে দেয়, তখন কম করে দেয়। এরা কি এ বিষয়টি লক্ষ্য করে না যে, (মৃত্যুর পর হিসাব ও প্রতিদানের) মহাদিবসের জন্য তাদেরকে পুনজ্জীবিত করে তোলা হবে, যেদিন সমস্ত মানুষ মহা পরাক্রমশালী রাব্বুল আলামীনের দরবারে দন্ডায়মান হবে?’ (সূরা তাতফীফ : আয়াত ১-৬)।
যে লোক সত্যিকার মনে কোরআন মাজীদকে আল্লাহর কিতাব হিসাবে মান্য করবে, সে লোক এ আয়াতগুলো শোনার পর মাপজোখে অবিশ্বস্ততা কেমন করে করতে পারে? যারা নিজেদের ঈমানদার বলে দাবি করে তাদের মধ্যেও যদি কোথাও এ ধরনের লোক দেখা যায়, তাহলে বুঝতে হবে, তাদের অন্তর প্রকৃত ঈমান থেকে বঞ্চিত।
হারামখোরীর একটি অতি অভিশপ্ত রূপ হলো, কারও ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক পুরুষের পোশাক পরে অর্থাৎ, দীনি আলেম-ওলামা কিংবা ওলী-দরবেশের ভোল বা ছদ্মবেশ ধরে নানা রকম ধোঁকা-প্রতারণার মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার সরল প্রাণ বান্দাদের কাছ থেকে ভেট-নজরানা আদায় করা।
এ ধরনের লোকদের সাধারণ পন্থা হলো- আদায় ওয়াসিলের এর ধারাকে চিরকাল অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে এবং ভবিষ্যত বংশধরদের জন্য সংরক্ষণ করার উদ্দেশে তারা পুরোপুরি চেষ্টা করে, যাতে তাদের এ ফাঁদে পড়ে সাধারণ মানবকুল সঠিক ধর্মীয় শিক্ষা থেকে অজ্ঞ থাকে এবং আল্লাহ তায়ালার নিষ্ঠাবান বান্দা এবং সত্য দ্বীনের সত্যিকার খাদেম ও দাওয়াতকর্মীদের কাছ থেকে দূরে সরে থাকে।
মহানবী (সা:)-এর আমলে এ ধরনের অধিকাংশ লোক ছিল ইহুদি। কিন্তু আমাদের এ যুগে দুর্ভাগ্যক্রমে স্বয়ং মুসলমানদের মধ্যে এ ধরনের পেশাধারী একটা দুর্বৃত্ত শ্রেণী বিদ্যমান রয়েছে। তাদের কাজকর্ম ও ব্যবসা এটাই। যাহোক, এ ধরনের লোক ইহুদি হোক বা খ্রিস্টানই হোক কি মুসলমান।
কোরআন মাজীদে তাদের সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘হে ঈমানদারগণ, অনেক পাদ্রী ও যাজক আল্লাহর বান্দাদের সম্পদ অবৈদ পন্থায় ভোগ করে এবং (সেসব লোকের কোনো রকম ধর্মীয় ফায়দা পৌঁছানো কিংবা আল্লাহর পথ প্রদর্শনের পরিবর্তে উল্টা তাদেরকে) আল্লাহর পথ থেকে বিরত রাখে। (সূরা তাওবাহ : আয়াত ৩৪)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।