পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
‘সাবাস, বাংলাদেশ/ এ পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়/ জ্বলে পুড়ে-মরে ছারখার তবু মাথা নোয়াবার নয়’ (সুকান্ত ভট্টচার্য)। আগামী প্রজন্ম তথা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা জ্বলে পুড়ে-মরে ছারখার হয়েও বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। বাধা-বিপত্তির মুখেও তারা নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। চরম উত্তেজনাময় পরিস্থিতিতে এ যেন ইংরেজি রেডিও ড্রামা ‘দ্য ওয়ার অব দ্য ওয়ার্ল্ডস’ এবং কলকাতার জনপ্রিয় রেডিও রোমাঞ্চ গল্প ‘সানডে সাসপেন্স’ এর মতোই ডাকসুর ফলাফল ‘টুয়েসডে সাসপেন্স’ রোমাঞ্চকর ঘোষণা দেয়া হলো। ক্যালেন্ডারের পাতায় মঙ্গলবার শুরু; রাতের প্রথম প্রহর পৌনে চারটা, সবাই যখন ঘুমিয়ে; তখনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রোমান্স, ড্রামা, সাসপেন্স, অ্যাকশনে ভরা মিষ্টি মধুর কণ্ঠে ঘোষণা করেন ডাকসুর ভিপি নির্বাচিত হয়েছেন নুরুল হক নূর। ঘোষণা শুনেই একদিকে সূর্যের নতুন আলো; অন্যদিকে অন্ধকার। গতকালের সকালটা ছিল ডাকসু নির্বাচনে ২৫ আসনের মধ্যে ২৩টিতে বিজয়ী ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের কাছে ‘জটিলেশ্বর মুখোপাধ্যায়’ এর গান ‘এ কোন সকাল রাতের চেয়েও অন্ধকার’ হয়ে ধরা দেয়।
আগের দিনের ডাকসু নির্বাচনে জাল ভোট প্রদান, সিলযুক্ত ব্যাটল বাক্স উদ্ধার, সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের ভোট দানে বাঁধা, প্রার্থীদের মারধরসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গসংগঠন ছাত্রলীগ ছাড়া সব প্যানেলের প্রার্থীরা নির্বাচন বর্জন করে অবস্থান কর্মসূচি নেয়। ডাক দেয়া হয় ধর্মঘটের। বিক্ষোভ, অবস্থান, পাল্টা বিক্ষোভে উত্তল হয়ে ওঠে প্রাচ্যের অক্সফোর্ডখ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। শিক্ষার্থী ভোটার ও সাধারণ মানুষের ভাষায় কর্তৃপক্ষের একচোখা নীতির কারণে ব্যাপক নির্বাচনে কারচুপি করা হয়েছে। কারচুপি করে ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গ-সংগঠন ছাত্রলীগের বিজয় নিশ্চিত করা হয়েছে। কিন্তু ভোট গণনার পর দেখা যায় এতো কিছুর পরও কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের প্লাটফর্ম বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের প্রার্থী বিপুল ভোটের ব্যবধানে ভিপি নির্বাচিত হয়েছেন।
নির্বাচনের এই ফলাফল ঘোষণার পর পাল্টে যায় দৃশ্যপট। বাম সংগঠনগুলোর জোট প্রগতিশীল ছাত্র ঐক্য, ছাত্রদল, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, স্বাধিকার স্বতন্ত্র পরিষদ, ছাত্র ফেডারেশন ও স্বতন্ত্র জোটের আন্দোলনের মধ্যেই ছাত্রলীগও উল্টো আন্দোলনে নামে। ভিসির বাসা ঘেড়াও করে ডাকসুর ভিপি পদে নির্বাচিত নুরুল হক নুরকে মেনে না নেয়ার ঘোষণা দেয়। একই সঙ্গে নবনির্বাচিত ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর ও প্রগতিশীল ছাত্রজোটের ভিপি প্রার্থী লিটন নন্দীসহ ৪০ জনের বিরুদ্ধে ভাঙচুর ও প্রভোস্টকে লাঞ্ছনার অভিযোগে থানায় মামলা করে।
দিনভর বিক্ষোভ, টান টান উত্তেজনা। ছাত্রলীগ ও অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের অবস্থা ‘কেউ কারো নাহি ছাড়ে সমানে সমান’ অবস্থা। নবনির্বাচিত ভিপি নুরুল হক নুর ক্যাম্পাসে (টিএসসি) এলে তাকে ধাওয়া করে ছাত্রলীগের উৎশৃংখল নেতাকর্মীরা। তাদের হুংকার কোনোভাবেই নুরকে ভিপি মেনে নেয়া হবে না। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা পর সবকিছুই শীতল হয়ে যায়। পাল্টে যায় দৃশ্যপট। ছাত্রলীগের সভাপতি ও ডাকসু নির্বাচনে পরাজিত ভিপি প্রার্থী রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন নতুন ভিপি নুরুল হক নুরকে অভিনন্দন জানান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থানরত ছাত্রলীগ নেতাদের উদ্দেশে নুরকে ভিপি পদে মেনে নেয়ার আহ্বান জানান। এরপর ছাত্রলীগ সভাপতি অনুসারীদের নিয়ে টিএসসিতে যান। সেখানে নির্বাচিত ভিপি নুরের সঙ্গে কোলাকুলি করেন। মুহূর্তেই শত শত ক্যামেরার ক্লিক ক্লিক অন্যরকম দৃশ্যের অবতারণা হয়। শোভন বলেন, ২৮ বছরে পর আমাদের ডাকসু নির্বাচন হয়েছে। আমরা চাই না এ নিয়ে আমাদের ক্যাম্পাসে কোনোও সমস্যা সৃষ্টি হোক। আমরা চাই প্রত্যেকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় থাকুক। আমরা শিক্ষাবান্ধব বিশ্ববিদ্যালয় গড়তে একসঙ্গে কাজ করতে চাই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভোটে নুর নির্বাচিত হয়েছে। তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীকে এই ফল মেনে নিতে হবে। আমি এই নির্বাচনের ফল সবাইকে মেনে নেয়ার আহ্বান জানাই। আমি এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগ তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করব। এর জবাবে ভিপি নুর বলেন, আমার কাছে ভালো লেগেছে শোভন ভাই আমাকে শুভেচ্ছা জানাতে এসেছেন। আমরা একই পদে নির্বাচন করেছি। আমি বিজয়ী হয়েছি। তিনি আমাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এটা খুবই ভালো লেগেছে। ঢাবি দেশের বাতিঘর। সবাই এখানে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করব। শিক্ষাবান্ধব ক্যাম্পাস হিসেবে ঢাবিকে গড়ে তুলব। এর আগে অবশ্য নুরুল হক নুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলেছিলেন, নিরপেক্ষ নির্বাচন দিন আমরা সবগুলো আসনে বিজয়ী হব। ছাত্রলীগ একটি পদও পাবে না।
রেজাল্ট ঘোষণার পরই ছাত্রলীগের ঘেরাও
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদে নবনির্বাচিত ভিপি নুরুল হক নুরের সাথে একসাথে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছে ছাত্রলীগ। এরআগে গত সোমবার নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে ও প্রার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ভোট শেষ হওয়ার ১ ঘণ্টা আগে নির্বাচন বর্জন করে ছাত্রলীগ ছাড়া বাকি সব সংগঠন। দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর গতকাল মঙ্গলবার ভোর চারটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট অডিটরিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করে ভিসি প্রফেসর ড. মো. আখতারুজ্জামান। এতে কেন্দ্রীয় ভিপি পদে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ থেকে ভিপি প্রার্থী নুরুল হক নুর ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনকে পরাজিত করেন। জিএস এজিএসসহ কেন্দ্রীয় সংসদের ২৫ পদের ২৩ পদে জয় পায় ছাত্রলীগ। ভিপির নাম ঘোষণার পরপরই মানি না মানব বলে প্রতিবাদ জানায় শোভনের অনুসারী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এসময় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ভিসিকে অবরুদ্ধ করে রাখে। আধা ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর উপস্থিত শিক্ষক ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সহযোগিতায় বের হয়ে আসেন ভিসি। রাতেই শোভনের অনুসারীরা ভিসি বাসভবনের সামনে অবস্থান গ্রহণ করেন। এসময় বাসভবনের সামনে টায়ারে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বলেন, ভোটারদের ইমোশনালি ম্যানুপুলেট করা হয়েছে। ভিপি পদের ফল ছাত্রলীগ মানে না। তিনি ভিপি পদে পুনরায় নির্বাচনের আয়োজন করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান।
নতুন ভিপিকে ছাত্রলীগ ধাওয়া শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ
গতকাল দুপুর দেড়টায় নির্বাচনে কারচুপির প্রতিবাদ ও নুরুল হক নুরের সমর্থনে ক্যাম্পাসে মিছিল বের করে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে আসলে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে গেলে ছাত্রলীগের শোভন গ্রুপের নেতাকর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে নুরুল হক নুরুকে ধাওয়া দেয়। এসময় তিনি টিএসসিতে আশ্রয় নিলে হামলাকারীরা টিএসসিতে ঢুকে পড়ে। টিএসসিতে থাকা ছাত্রদল ও বাম শিক্ষার্থীরা ছাত্রদল নেতা আনিসুর রহমান খন্দকার অনিকের নেতৃত্বে হামলাকারীদের ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়। তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় ছাত্রলীগ বিরোধী বিভিন্ন জোটের নেতাকর্মীরা। এসময় তারা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। বিক্ষোভ মিছিলটি ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক পদক্ষিণ করে রাজুভাস্কর্যের সামনে এসে শেষ হয়। এসময় নব-নির্বাচিত ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর ভোট কারচুপির প্রতিবাদ জানান এবং ভিপি ও সমাজসেবা বাদে অন্য পদে আবার নির্বাচনের দাবি জানান। নুরুল হক নুর সংবাদিকদের বলেন, ছাত্রলীগ একটা গুজবের সংগঠন। তিনি প্রশাসনকে ছাত্রলীগের অপকর্মের সহযোগি উল্লেখ করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করার দাবি জানান। এসময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনে অনেক কারচুপি হয়েছে। ফলাফল ঘোষণা নিয়েও নাটক করা হয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ছাত্রলীগ একটা সদস্য পদেও জয়ী হতে পারতো না। এসময় তিনি পুনঃনির্বাচনের ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হিসেবে সকল সংগঠনের সাথে বসে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানান।
বিকেলে নুরের সাথে কাজ করার ঘোষণা দেয় ছাত্রলীগ
এদিকে বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিটে ভিপি পদে পুনঃনির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনরত নেতাকর্মীদের ভিসি বাসভবনের সামনে থেকে সরে যেতে নির্দেশ দেন ছাত্রলীগ সভাপতি। সেখানে উপস্থিত হয়ে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ক্যাম্পাসের পরিবেশ ঠিক রাখতে সবাইকে নিয়ে আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে। ছাত্রলীগের মন বিশাল। আমরা বাংলাদেশকে ধারণ করি। নুরুল হক নুরের সাথে কাজ করতে ছাত্রলীগের কোনো সমস্যা নেই উল্লেখ করে তিনি সেখান থেকে অনুসারীদের সরে যেতে নির্দেশ দেন। এরপরেই টিএসসি অডিটরিয়ামে এসে সেখানে অবস্থানরত নুরুল হক নুরকে বরণ করে নেন ছাত্রলীগ সভাপতি। এ সময় সেখানে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী ও অন্যান্য দলের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। ডাকসুর নির্বাচিত ভিপির সাথে কোলাকুলি করে ভিপি পদে পরাজিত এ প্রার্থী বলেন, আমি পারিনি কী হয়েছে, নুরুল হক নুর আমাদের সবার চাওয়া-পাওয়া পূরণ করবে। সে জন্য সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে, যেন স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ ঠিক থাকে। এসময় নুরুল হক নুর ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের কর্মসূচি থেকে সরে এসে বলেন, ছাত্রলীগ আমাকে অভিনন্দন জানিয়েছে। আমি সব সংগঠনের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে চাই। আমার ওপর ছাত্রলীগ যে হামলা করেছে, সেটার বিচারের দায়িত্ব আমি ছাত্রলীগ সভাপতির ওপর দিলাম। তিনি বড় ভাই হিসেবে এটা দেখবেন। তবে তিনি পুনঃনির্বাচনের দাবি অব্যাহত থাকবে বলে জানান।
৩১ মার্চের মধ্যে পুনঃনির্বাচন চান ভিপি চলতি মাসের ৩১ মার্চের মধ্যে পুনঃনির্বাচনের দাবি জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের নব-নির্বাচিত ভিপি নুরুল হক নুর। গতকাল সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে বাম ঐক্যের সঙ্গে বৈঠকের পর এ দাবি জানান তিনি। একইসঙ্গে ফল বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের সঙ্গে থাকারও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। নুরুল হক নুর বলেন, ডাকসু নির্বাচনের প্রতিটি পদেই কারচুপি হয়েছে। নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সবাইকে পদত্যাগ করে আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে পুনঃনির্বাচন দেয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে নির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল। ভিসির বাড়ির সামনে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি শোভনের আশ্বাস এবং সৌজন্যমূলক আচরণে ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। এসময় সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ প্যানেলের জিএস প্রার্থী রাশেদ খান, এজিএস প্রার্থী ফারুক হাসান, বামপন্থী প্যানেলের ভিপি প্রার্থী লিটন নন্দী প্রমুখ। ফারুক হাসান বলেন, নুরের শপথ নেয়ার বিষয়টি ব্যক্তিগত। এ বিষয়ে সাংগঠনিক কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। লিটন নন্দী বলেন, আমরা আশা করি নুর শপথ নেবেন না। তারপরও যদি তিনি শপথ নেন সেটা তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত ।
সংবাদ সম্মেলনে নুরুল হক নুর বলেন, ছাত্ররা যেরকম আশা করেছিল, সে রকম নির্বাচন হয়নি। ছাত্রলীগ বাদে সবাই ভোট বর্জন করেছে। তাদের পক্ষ থেকে সব পদ নেয়ার চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু সাধারণ ছাত্ররা ভিপি ও সমাজসেবা পদে আমাদের একচেটিয়া ভোট দিয়েছেন; যে কারণে তারা ইঞ্জিনিয়ারিং করেও ওই দুই পদ নিতে পারেনি। কারচুপি করেও আমাদের ঠেকানো সম্ভব হয়নি। শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হিসেবে আমি বলতে চাই, যেহেতু আরও অনেক প্যানেল নির্বাচনে অংশ নিয়েছে, আমরা তাদের দাবির সঙ্গে একমত। এ নির্বাচন পুনরায় হতে হবে এবং নির্বাচনে যারা দায়িত্ব পালন করেছে তাদের পদত্যাগ করতে হবে। তিনি বলেন, হাইকোর্টের আগের নির্দেশনা অনুসারে ৩১ মার্চের মধ্যে ডাকসু নির্বাচন হওয়ার কথা। সেই সময়ের মধ্যেই পুনঃনির্বাচন হোক। আবার নির্বাচন হলে তিনি পুরো প্যানেল জয়ী হবে মন্তব্য করে সাধারণ শিক্ষার্থীর যেকোনও আন্দোলনের সঙ্গেও থাকার প্রতিশ্রুতি দেন।
উল্লেখ্য, গত ১১ মার্চ দীর্ঘ ২৮ বছর ১০ মাস পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচন নিয়ে প্রতিদ্ব›দ্বী দলগুলোর দিনভর অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ ও বেশ কিছু ছাত্র সংগঠন, প্যানেল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়ে আন্দোলনে নামে। রাতে ফলাফল ঘোষণা হলে ১৮টি হল সংসদের ১২টিতে ভিপি ও ১৪টিতে জিএস পদে ছাত্রলীগ এবং ৬টিতে স্বতন্ত্ররা ভিপি পদে ও ৪টিতে জিএস পদে জয়লাভ করে। এরপর গভীর রাতে ডাকসু নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা হলে সিংহভাগ পদে ছাত্রলীগ জয়ী হলেও ভিপি পদে কোটা সংস্কার আন্দোলনের যুগ্ম-আহ্বায়ক নুরুল হক নুর জয়লাভ করেন। নুরুল হক নুর পান ১১ হাজার ৬২ ভোট ও তার নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন পেয়েছেন ৯ হাজার ১২৯ ভোট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।