Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

যেভাবে শিক্ষার্থীদের মনের মধ্যে জায়গা পান নুরুল হক

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি | প্রকাশের সময় : ১৩ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

দীর্ঘ ২৮ বছর পর হওয়া ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রলীগের প্রার্থীকে হারিয়ে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে নির্বাচিত হয়েছেন নুরুল হক নুর। ২০১৮ সালে বছরব্যাপী সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনকরী শিক্ষার্থীদের প্লাটফর্ম বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের প্যানেলে নির্বাচনে অংশ নেন তিনি।
কেন্দ্রে কেন্দ্রে ছাত্রলীগের একক আধিপত্য থাকা স্বত্তেও জয় পেয়ে চমক দেখান তিনি। সংগঠনটির প্যানেলে নির্বাচন করা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের বিরুদ্ধে অনশনকারী শিক্ষার্থী আখতার হোসেনও জয় লাভ করেন। অধিকাংশ হল সংসদ ও কেন্দ্রেীয় সংসদে ছাত্রলীগের প্যানেল নিরঙ্কুশ জয় পেলেও সর্বোচ্চ পদে জয় পেয়ে তাক লাগিয়ে দেন নুরুল হক। প্রতিদ্বন্ধী ছাত্রলীগের প্রার্থীর চেয়ে ১৯৩৩ ভোট বেশি পেয়ে জয় লাভ করেন এ হেভিওয়েট প্রার্থী। তার মোট প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ১১ হাজার ৬২, যেখানে ছাত্রলীগের প্রার্থী রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন পান ৯ হাজার ১২৯ ভোট। নুরুল হক নুর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার বাড়ি পটুয়াখালীতে। এর আগে কোটা সংস্কার, নিরাপদ সড়কের দাবিতে স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের বিরুদ্ধে আন্দোলনে স্বকীয় ভূমিকা রেখে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান তিনি। এসব আন্দোলন করতে গিয়ে বারবার হামলা, মামলা ও কারাবরণের মুখোমুখি হতে হয় তাকে। সাধারণ পরিবার থেকে উঠে আসা নুরুল হক নুরের জীবন শুরু হয় অন্য আর দশজন ছেলের মতো। ক্যাম্পাস জীবনের শুরুতে তার তেমন কোনো পরিচিতি না থাকলেও শিক্ষার্থীদের অধিকার নিয়ে আন্দোলন করায় তাকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে নিয়ে আসে। কোটা প্রথা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের সংগঠিত করতে ভূমিকা রাখেন তিনি। হাসান আল মামুন, রাশেদসহ অন্য সহপাঠীদের নিয়ে গড়ে তোলেন সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। এই পরিষদে যুগ্ম আহ্য়বাক হিসেবে কাজ করাই তাকে ব্যাপক পরিচিতি এনে দিয়েছে।
তুমুল কোটা আন্দোলন চলাকালে প্রশাসন ও ছাত্রলীগের অব্যাহত হামলার মুখেও কখন তাকে দমে যেতে দেখা যায়নি। হামলার হুমকির মুৃখেও একের পর এক কর্মসূচি দিয়েছেন, মাঠে থেকেছেন কখনও পিছু হটেননি। তাদের আন্দোলনের মুখেই শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবি কোটাব্যবস্থা সংস্কারের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। পরবর্তীতে যুক্ত হন নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের সাথে। এসময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সরকারি ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের অবস্থান তুমুল সমালোচনা করেন তিনি। রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতারা যেখানে নিজ দলের লেজুড়বৃত্তি করে, সেখানে নুর শিক্ষার্থীদের প্রকৃত দাবিগুলো নিয়ে আন্দোলন করেন। এটিই অন্যদের চেয়ে তার গ্রহণযোগ্যতা বাড়িয়ে দেয়। প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের দলীয় কর্মসূচিতে বাধ্য করারও প্রতিবাদ করেছেন তিনি।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ডাকসু

৩ নভেম্বর, ২০২১
১৪ মার্চ, ২০২০
২৯ ডিসেম্বর, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ