Inqilab Logo

শনিবার ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ২৯ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

নির্বাচন বাতিল চান সাবেক শিক্ষার্থীরা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

ভোট ডাকাতির অভিযোগ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন বাতিল ও পুনরায় নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরা। গতকাল (সোমবার) বিকাল ৫টার দিকে শাহবাগ মোড়ে জাতীয় জাদুঘরের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরা এক সমাবেশে এসব অভিযোগ করেন।
সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী জুলহাস নাইন বাবু বলেন, ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠন যে এই সরকারের পা-চাটা দলে পরিণত হয়েছে সেটা এবারের ডাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে প্রমাণিত হলো। প্রশাসনের সহায়তায় ডাকসু নির্বাচনে ভোট ডাকাতি ও ভোট চুরি হয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হলগুলো থেকে ভোট ডাকাতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা হয়েছে। ছাত্র হলগুলোতে তা করা হয়নি। কারণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হলগুলো ক্ষমতাসীন সরকারের ছাত্র সংগঠনের দখলে। সেখানে সাধারণ ছাত্রদের মেরুদন্ড ভেঙে অকার্যকর ও অচল করে রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা অবিলম্বে এই নির্বাচন বাতিলের দাবি করছি। এই নির্বাচন বাতিল করে পুনরায় ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হোক। শিক্ষার্থীরা যদি ঘুরে দাঁড়ায় এবং এই নির্বাচনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে, তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে রক্ষা করা সম্ভব।
সাবেক শিক্ষার্থী সুস্মিতা রায় সুপতী বলেন, গত ৩০ ডিসেম্বর সারা দেশে যেভাবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে ঠিক তেমনভাবেই ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো। হলগুলোতে ভোট ডাকাতি ও ভোট চুরি করে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তিনি বলেন, এই নির্বাচনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাই শিক্ষার্থীদের ভোট জালিয়াতিতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। রাষ্ট্র ও প্রশাসনের মতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেও কলুষিত করেছেন এই সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। আসুন আমরা সবাই ভোট জালিয়াতির এই ডাকসু নির্বাচনকে বর্জন করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রনেতা মানবেন্দ্র দেব বলেন, গত কয়েকদিন ধরেই আমরা আলোচনা করছিলাম, ডাকসু নির্বাচন ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে, নাকি ১০ মার্চ রাতে হবে। এরপর মনে হলো, না এটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, এখানে এমনটা হবে না। এরপর আগের রাত থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসন ব্যারিকেড দিয়ে দিলো। তখন মনে হলো- না, বহিরাগতরা সেখানে প্রবেশ করতে পারবে না। সুষ্ঠু ভোট হবে। কিন্তু আমাদের ধারণা ভুল প্রমাণিত হলো। প্রশাসনের সহায়তায় নিরাপত্তা ব্যারিকেড দিয়ে ভোট চুরি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, কুয়েত মৈত্রী হলের ছাত্রীরা প্রমাণ করে দিয়েছেন এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ওই হল থেকে জালিয়াতি ও ডাকাতির বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করেছেন। ডাকসু নির্বাচনের এই ভোট ডাকাতি ও জালিয়াতির সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও কর্মচারী যুক্ত ছিলেন না। যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিদ্যাপাঠ করান এবং আদর্শের কথা বলেন, সেসব শিক্ষক এই ভোট ডাকাতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য ও ইতিহাসে কোনও পরাজয় নেই। সব সময় জয় হয়েছে। আমরা হারতে শিখিনি। ভোট জালিয়াত ও ডাকাতদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলে আমরা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবারও জয়ী হবে।
সাবেক শিক্ষার্থী বাকি বিল্লাহ বলেন, যেভাবে ভোট ডাকাতি হয়েছে তা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী হিসেবে আমি লজ্জিত। তবে এরমধ্যেও আশার দিক হচ্ছে, ক্যাম্পাসে সাহসী শিক্ষার্থীরা এই ভোট ডাকাতির বিরুদ্ধে আন্দোলনের মাধ্যমে জবাব দিচ্ছেন। তাদের এই সাহসী আন্দোলনে সাবেক শিক্ষার্থী হিসেবে আমাদের অংশগ্রহণ করা নৈতিক দায়িত্ব বলে মনে করি। আমাদের সবাইকে তাদের আন্দোলনে শরিক হতে হবে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ডাকসু

৩ নভেম্বর, ২০২১
১৪ মার্চ, ২০২০
২৯ ডিসেম্বর, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ