Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভূমি মন্ত্রণালয়ের ১৭ হাজার কর্মীর সম্পদের হিসাব জমা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১০ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে পাঁচটি দফতরের কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের (ক্যাডার বহির্ভূত) মধ্যে ১৭ হাজার ২০৮ জন সম্পদ বিবরণী জমা দিয়েছেন। এছাড়া ৩৬৮ জন কর্মচারী বিভাগীয় মামলায় সাময়িক বরখাস্ত এবং দীর্ঘমেয়াদি ছুটিতে থাকার কারণে সম্পদের বিবরণী দাখিল করতে পারেননি। এসব সম্পদ বিবরণী যাচাই করতে শিগগির কমিটি গঠন করা হবে। কমিটিকে সুপারিশসহ প্রতিবেদন প্রস্তুত করতে সময়ও বেঁধে দেয়া হবে জানিছেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাক্ছুদুর রহমান পাটওয়ারী।
গতকাল শনিবার ভূমি মন্ত্রণালয় থেকেএ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, ভূমি মন্ত্রণালয় ও এর অধীন সংস্থায় মোট তৃতীয ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর সংখ্যা ১৭ হাজার ৫৭৬ জন। বিভাগীয় মামলায় সাময়িক বরখাস্ত এবং দীর্ঘমেয়াদি ছুটিতে থাকায় ৩৬৮ কর্মচারী সম্পদের বিবরণী দাখিল করতে পারেননি। সম্পদ বিবরণী যাচাইয়ের মধ্য দিয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ে শক্তভাবে শুদ্ধি অভিযান শুরু হবে।
ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ইনকিলাবকে বলেন, প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ- এতো দ্রুত সময়ে কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব গ্রহণ তার একটি প্রমাণ। এ ব্যাপারে সহযোগিতা করার জন্য আমি সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। সম্পদ বিবরণী দাখিলের ফলে অনিয়ম-দুর্নীতি করতে সবাই নিরুৎসাহিত হবেন। মন্ত্রী বলেন, এখন থেকে সম্পদের হিসাব বিবরণী দাখিলের কর্মসূচি চলবে। নিয়মিত মনিটরিং করার মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে ভূমি অফিস দুর্নীতিমুক্ত করা সম্ভব হবে।
মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, প্রতিমন্ত্রী থেকে ভূমিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর গত ১২ জানুয়ারি চট্টগ্রামে প্রথম সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ঘোষণা করেন। ভূমি মন্ত্রণালয় এবং এর আওতাধীন সব দফতরকে দুর্নীতিমুক্ত করতে তিনি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এ জন্য প্রথমেই তিনি তার মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সব দফতর-সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পদ বিবরণী গত ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জমা দেয়ার নির্দেশ দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ৯০ ভাগ এবং ৬ মার্চের মধ্যে অবশিষ্ট সবার সম্পদ বিবরণী জমা পড়েছে। মন্ত্রণালয় এবং এর আওতাধীন পাঁচটি দফতর ও দেশের ৬৪ জেলায় কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা ১৭ হাজার ৫৭৬ জন। এর মধ্যে ১৭ হাজার ২০৮ জন সম্পদ বিবরণী দাখিল করেছেন। অবশিষ্ট ৩৬৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী বিভাগীয় মামলায় সাময়িক বরখাস্ত এবং দীর্ঘমেয়াদি ছুটিতে থাকায় সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে পারেনি।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন গুরুত্বপূর্ণ দফতর রয়েছে ৫টি। এগুলো হল- ভূমি সংস্কার বোর্ড, ভূমি আপিল বোর্ড, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতর, ভূমি প্রশাসন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং হিসাব নিয়ন্ত্রকের দফতর। এ ছাড়া নির্দেশনা অনুযায়ী মাঠপর্যায়ের সব ভূমি অফিস এবং মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব (নন-ক্যাডার) কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও সম্পদ বিবরণী দাখিল করেছেন। মাঠপর্যায়ের সম্পদ বিবরণী ডিসি অফিসের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ে জমা হয়েছে।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, কেউ সম্পদের কোনো তথ্য গোপন করলে তাও যাচাই-বাছাইয়ে ধরা পড়বে। যারা দুর্নীতির টাকায় পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজনের নামে সম্পদ কিনেছেন, তা তদন্তের আওতায় আসবে। ইতিমধ্যে এ বিষয়ে কাউন্টার ইনটেলিজেন্স সিস্টেমে দুর্নীতি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিষয়ে বিশদ তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি নিজে দুর্নীতিকে ঘৃণা করেন এবং এই ঘৃণিত কাজ কাউকে করতে দেবেন না। এর আগে এ মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় যেটুকু পারেননি, তা এবার শতভাগ করার ব্যাপারে তিনি আশাবাদী।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন