পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কাদিয়ানীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা ও রাশেদ খান মেননের বিচার দাবিতে গতকাল বাদ জুমা বায়তুল মুকাররম উত্তর গেটে আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়াত বাংলাদেশ ও ঢাকা মহানগর হেফাজত ইসলাম-এর যৌথ উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাবেশ শেষে একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বায়তুল মুকাররম উত্তর গেট থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়কে প্রদক্ষিণ করে। ঢাকা মহানগর হেফাজতে ইসলাম-এর আমির ও তাহাফফুজে খতমে নবুওয়াত-এর সহ-সভাপতি মাওলানা নুর হুসাইন কাসেমীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন হেফাজতে ইসলাম মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী।
তিনি বলেন, রাশেদ খান মেনন খতমে নবুওয়াতকে অস্বীকার করে কাদিয়ানীদের পক্ষ নেয়ায় কাফের হয়ে গেছে। যারা কাদিয়ানীরকে এবং মেননকে কাফের বলবে না তাদের ঈমান থাকবে না।
তিনি বলেন, মেনন হেফাজতের বিরুদ্ধে কথা বলেছে। আহমদ শফী ও ওলামায়ে কেরামের বিরুদ্ধে অশালীন মন্তব্য করেছে। তাই মেননকে সংসদ থেকে বের না করলে আমরা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব। হেফাজতে ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বললে হেফাজতে ইসলাম কঠিন কর্মসূচি দেবে। কওমী মাদরাসার বিরুদ্ধে কথা বললে জিহ্বা ছিঁড়ে ফেলা হবে। আল্লামা বাবুনগরী বলেন, রাশেদ খান মারা গেলে জানাযা দেয়া যাবে না, কবরস্থানে দাফন করা যাবে না। রাশেদ-ইনু-শাহরিয়ার কবিরদের ঠাঁই এদেশে হবে না। তিনি বলেন, আক্বিদায়ে খতমে নবুওয়াত করতে বুকের তাজা রক্ত দিতে এদেশের তৌহিদী জনতা প্রস্তু‘ত রয়েছে।
খেলাফত আন্দোলনের আমির ও আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়াত-এর সহ-সভাপতি মাওলানা শাহ আতাউল্লাহ বলেন, মেনন ইসলাম, কুরআন, কওমি শিক্ষা, আহমদ শফীসহ আলেম-ওলামাদের নিয়ে কটাক্ষ করে সংসদ অপবিত্র করেছে। তাকে সংসদ থেকে বের করে দিতে হবে। ইসলাম, আলেম-ওলামা ও কওমী শিক্ষার বিরুদ্ধে কথা বললে তৌহিদী জনতা তার দাত ভেঙে দিবে।
সভাপতির বক্তব্যে আল্লামা নুর হুসাইন কাসেমী বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে মেননের বিচার করতে হবে। সংসদে দেয়া তার বক্তব্য কার্য্যবিবরণী থেকে বাদ দিতে হবে। তিনি সরকারের নিকট অবিলম্বে কাদিয়ানীদের কাফের ঘোষণার দাবি করেন। কাদিয়ানীদের কাফের ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। নতুন নতুন কর্মসূচি দেয়া হবে।
আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়াত বাংলাদেশ-এর মহাসচিব আল্লামা নুরুল ইসলাম বলেন, মেননকে মন্ত্রী পরিষদ থেকে বাদ দেওয়ায় সে পাগল হয়ে গেছে। কাদিয়ানীদের খুশি করতে সংসদে গিয়ে তাদের পক্ষে বক্তব্য দিয়েছে। তিনি কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণা এবং মেননের বিচার দাবিতে আগামীতে সকল কর্মসূচি সফল করতে তৌহিদী জনতার প্রতি আহ্বান জানান।
মাওলানা ফজলুল করিম কাশেমীর পরিচলালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, মাওলানা আব্দুল হামিদসহ আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়াত বাংলাদেশ ও হেফাজত ইসলামের নেতা মাওলানা আব্দুল লতিফ নেজামী, মাওলানা জুনাইদ আল-হাবিব, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মাওলানা আবুল হাসান তামিনী, মাওলানা আব্দুর রবিউস সুফি, ড. আহমদ আবদুল কাদের, মাওলানা মনজুরুল ইসলাম, মাওলানা মুুহিউদ্দীন ইকরাম, মাওলানা মুুহিউদ্দীন রাব্বানী, অধ্যাপক আবদুল করীম, মুফতি সাখাওয়াত, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, মাওলানা শুয়াইব আহমদ, মাওলানা এনামুল হক মূসা, মাওলানা মুসলিম আহমদ, মাওলানা রফিকুল ইসলাম, মাওলানা ফখরুল ইসলাম প্রমুখ।
সিলেটে বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশ
সিলেট ব্যুরো : জাতীয় সংসদে কওমী মাদরাসাকে বিষবৃক্ষের সাথে তুলনা, আল্লামা শাহ আহমদ শফীসহ আলেম সমাজকে কটাক্ষ করায় ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননকে গ্রেফতারের দাবিতে সিলেটে বিক্ষোভ মিছিল করেছে মাদানী কাফেলা বাংলাদেশ। এছাড়া অনুরূপ দাবিতে শুক্রবার বাদ জুম’আ নগরীর কোর্ট পয়েন্টে হেফাজতে ইসলাম সিলেটের উদ্যোগেও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
গতকাল শুক্রবার বাদ জুম’আ বন্দরবাজার জামে মসজিদের সামনে থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট প্রদক্ষিণ করে স্থানীয় কোর্ট পয়েন্টে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মাদানী কাফেলা বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা সালেহ আহমদ শাহবাগীর সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক হাফিজ শাহীদ আহমদ হাতিমীর পরিচালনায় সমাবেশে বক্তারা বলেন, সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন সংসদে দাঁড়িয়ে ইসলামের মৌলিক আকিদা খতমে নবুওয়ত অস্বীকারকারী কাফের কাদিয়ানীদের পক্ষে উদ্দেশ্যপ্রনোদিত বক্তব্য রেখেছেন। কুরআন হাদীস ও শরীয়তের বিধান হলো যারা আকীদায়ে খতমে নবুওয়ত স্বীকার করেনা তারা কাফের ও অমুসলিম।
বক্তারা আরো বলেন, রাশেদ খান মেনন কওমী মাদরাসাকে ‘বিষবৃক্ষ’ বলে আলেম-উলামা, ছাত্র শিক্ষক ও তৌহিদী জনতার অন্তরে আঘাত করেছেন। তিনি সংবিধান লংঘন করেছেন। জাতীয় সংসদকে অপমানিত করেছেন। অবিলম্বে তার সংসদ সদস্য পদ বাতিল করতে হবে। তার বক্তব্য ইসলামী শিক্ষা, নাগরিক অধিকার ও রাষ্ট্রবিরোধী। এজন্য তাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। অন্যথায় কঠিন কর্মসূচি দিয়ে সমুচিত জবাব দেয়া হবে।
সমাবেশে অন্যান্যর মধ্যে বক্তব্য রাখেন- জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম সিলেট মহানগর সভাপতি মাওলানা খলিলুর রহমান, সহ সভাপতি একরামূল আজিজ, জামেয়া হেদায়াতুল ইসলাম সিলেটের প্রিন্সিপাল মাওলানা মুফতি মুতিউর রহমান, মাওলানা ফয়ছল আহমদ, জামেয়া দারুল কোরআনের শিক্ষক সৈয়দ মাওলানা সোয়াইব আহমদ, মাদানী কাফেলা সিলেট মহানগর আহবায়ক হাফিজ সাব্বির আহমদ রাজি, জামেয়া নাজাতুল উম্মাহ’র প্রিন্সিপাল মাওলানা তোফায়েল আহমদ ওসমানী, জাগরণ ইসলামী সাংস্কৃতিক দলের পরিচালক হাফিজ আব্দুল করিম দিলদার, ছাত্রনেতা মো. লুৎফুর রহমান, দেলওয়ার হোসাইন ইমরান, হাফিজ সোহাইল আহমদ, সাজ্জাদ হোসেন রুমন প্রমুখ।
অন্যদিকে হেফাজতে ইসলাম সিলেটের উদ্যোগে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেছেন- ‘রাশেদ খান মেনন মন্ত্রীত্ব হারিয়ে প্রলাপ বকছেন। তিনি জাতীয় সংসদ ভবনে অত্যন্ত কুরুচিপূর্ণ নোংরা ভাষায়, দেশের ৯০ ভাগ মুসলমানদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কওমী মাদ্রাসাকে ‘বিষবৃক্ষ’ এবং উলামা মাশায়েখ ও আল্লামা আহমদ শফিকে বিদ্রুপ করে উচ্ছৃঙ্খল বক্তব্য রাখছেন। আসলে কমিউনিস্ট বুর্জুয়া উপনিবেশরা চায় দেশে সব সময় অশান্তি এবং রাজনৈতিক উত্তপ্ত পরিবেশ সৃষ্টি করে রাখতে। শায়খুল হাদিস মাওলানা মাসুক আহমদ সালামির সভাপতিত্বে ও মুফতি ফয়জুল হক জালালাবাদীর পরিচালনায় শুক্রবার বাদ জুম’আ নগরীর কোর্ট পয়েন্টে হেফাজতে ইসলাম সিলেটের প্রতিবাদ সভায় বক্তারা উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
অনতিবিলম্বে রাশেদ খান মেননের সংসদ সদস্যপদ বাতিল ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয় সভায়।
প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন শায়খুল হাদীস মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরী, শায়খুল হাদীস মাওলানা আব্দুল মতিন ধনপুরী, মাওলানা আব্দুল মালিক চৌধুরী, মাওলানা আসলাম রাহমানী, মাওলানা শায়েখ আব্দুর রহমান, মাওলানা জুহুরুল হক, হাফেজ একরামুল হক, মাওলানা তোফায়েল আহমদ ওসমানী, মাওলানা হাফিজুর রহমান, মাওলানা সালেহ আহমদ শাহবাগী, মাওলানা মামুন ইকরা, মাওলানা রুহুল আমিন প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।