পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আসন্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যাল কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণায় আচরণ বিধি লঙ্ঘনের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছে নির্বাচনে অংশ নেয়া বিভিন্ন প্যানেলের প্রার্থীরা। এরমধ্যে সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে আচরণ বিধি লঙ্ঘনের বার বার অভিযোগ উঠলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। অন্যদিকে হলগুলোতে ছাত্রলীগের একক আধিপত্য থাকায় প্রচার প্রচারণায় বেগ পেতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন বিরোধী সংগঠনগুলোর প্রার্থীরা। তাদের দাবি আচরণ বিধি লঙ্ঘনসহ ছাত্রলীগের বিভিন্ন অপরাধের সুস্পষ্ট তথ্য প্রমাণ প্রশাসনের কাছে তুলে ধরা হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ফলে দীর্ঘ ৩ দশক পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এ নির্বাচনকে ঘিরে প্রশ্ন আর অভিযোগের তালিকা দিন দিন দীর্ঘতর হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বারবার আচরণবিধি মেনে চলার জন্য প্রার্থীদের অনুরোধ করা হলেও তা শুধু মুখেই সীমাবদ্ধ রয়েছে বলে দাবি বিরোধী সংগঠনগুলোর প্রার্থীদের। প্রচার প্রচারণা শুরুর পর থেকেই তা বার বার লঙ্ঘন করার অভিযোগ উঠে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন দেয়ালে ছাত্রলীগ প্যানেলের প্রার্থীদের পক্ষে ভোট চেয়ে পোস্টার লাগানো, চূড়ান্ত তালিকার প্রকাশের আগে রঙিন স্টিকার দেয়ালে সাঁটানো, হলে হলে নির্বাচনী সভায় রঙিন ব্যানারের ব্যবহার, শ্রেণিকক্ষ ও পাঠকক্ষে প্রচারণা চালানো, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিরোধী পক্ষকে আক্রমণ করে বক্তব্য প্রদান, নির্বাচনী প্রচারণায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি ব্যবহার করাসহ একের পর এক আচরণবিধি লঙ্ঘন করে ছাত্রলীগ। ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের আচরণবিধির ৬ (ক) অনুযায়ি, নির্বাচনী প্রচারণায় কোনো প্রার্থী নিজের সাদাকালো ছবি ব্যতীত লিফলেট বা হ্যান্ডবিল-এ অন্য কারো ছবি বা প্রতীক ব্যবহার করতে পারবে না। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদে গিয়ে শ্রেণীকক্ষে প্রচারণা চালাতে দেখা যায় ছাত্রলীগ প্যানেলে প্রার্থীদের। সংগঠনের সভাপতি ও ছাত্রলীগের প্যানেলে ডাকসুর ভিপি প্রার্থী রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনকে কলা অনুষদে প্রচারণা চালান। কিন্তু আচরণ বিধি পরিমার্জণ কমিটির সভায় শ্রেণীকক্ষে প্রচারণা চালানোর বিধি সংযুক্ত করার দাবি জানানো হলেও সে সময় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে তা বিরোধীতা করা হয়। এরআগে গত রবিবার প্রার্থীদের চ‚ড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর বিভিন্ন হলে প্রচার চালায় ছাত্রলীগ সমর্থিত প্যানেল। তারা বিজয় একাত্তর হলের পাঠকক্ষে ঢুকে ছাত্রলীগের পক্ষে প্রচার চালান এবং ছাত্রলীগের প্রার্থীদের সবার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। পাঠকক্ষে প্রচারণা চালানোতে আচরণ বিধিতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এছাড়া জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে প্রচারে রঙিন ব্যানার ব্যবহার করে সংগঠনটি। এর আগে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন দেয়ালে ছাত্রলীগের সভাপতির পক্ষে ভোট চেয়ে পোস্টার লাগানো হয়। আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরুর আগেই লাগানো হয় ব্যানার। রোকেয়া হলে নির্বাচনী প্রচারণা সভায় ব্যবহার করা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার ছবি যা আচরণবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
নির্বাচনী আচরণবিধির ১৫(ক)তে বলা হয়েছে, নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করলে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসার লিখিত অভিযোগ প্রাপ্তি ও তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এছাড়া সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসার প্রয়োজনবোধে স্বপ্রণোদিতভাবে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থাও গ্রহণ করতে পারবেন। (খ) ধারায় বলা হয়েছে, কোনো প্রার্থী বা তাঁর পক্ষে কেউ নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করলে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা জরিমানা, প্রার্থিতা বাতিল অথবা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার অথবা রাষ্ট্রীয়/বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী অন্য যে কোনো দন্ডে দন্ডিত হবেন। এরআগে প্রচারণায় রঙিন ব্যানারের ব্যবহার আচরণবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে জানান ডাকসু নির্বাচনের প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক ড. এস এম মাহফুজুর রহমান। কিন্তু ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে বার বার বিধি লঙ্ঘন করার অভিযোগ দেয়া হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্বপ্রণোদিত হয়ে উদ্যোগ নেয়াতো দূরের কথা লিখিত অভিযোগ দেয়া হলেও তা আমলে নেয়নি প্রশাসন।
এদিকে আচরণ বিধি লঙ্ঘনের পাল্টা অভিযোগ আছে বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর প্যানেলের বিরুদ্ধেও। গতকাল বিভিন্ন দাবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে শোভাযাত্রা বের করে প্রগতিশীল ছাত্র ঐক্যের নেতাকর্মীরা। ছাত্র ঐক্যের প্যানেলে ভিপি প্রার্থী লিটন নন্দীর নেতৃত্বে বিভিন্ন পদের প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। ছাত্র ঐক্যের শোভাযাত্রায় বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার করায় নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ আনে ছাত্রলীগ। দুপুরে ছাত্রলীগ সমর্থিত সম্মিলিত শিক্ষার্থী পরিষদের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান সনজিত চন্দ্র দাস রিটার্নিং অফিসার অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। ডাকসু নির্বাচনের আচরণবিধির ৩(ক) ধারায় কোনো প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী বা তাঁর পক্ষে মনোনয়নপত্র জামাদান, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার বা নির্বাচনী প্রচারণায় কোনো ধরনের যানবাহন, মোটরসাইকেল, রিকশা, ঘোড়ার গাড়ি, হাতি, ব্যান্ড পার্টি ইত্যাদি নিয়ে কোনোরূপ শোভাযাত্রা, শোডাউন বা মিছিল করা যাবে না বলে বলা হয়েছে। তবে ছাত্র ঐক্যের প্যানেলের ভিপি প্রার্থী লিটন নন্দী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমরা আচরণবিধির কোনো লঙ্ঘন করি নি। প্যারেড ড্রামের তালে তালে আমাদের নেতাকর্মীরা মিছিলে গান গেয়েছে। কোনো ব্যান্ড পার্টি আমরা নিয়ে আসি নি। এদিকে হলগুলোতে দীর্ঘদিনে ছাত্রলীগের আধিপত্য বিস্তার হয়েছে উল্লেখ করে ছাত্রদলের পক্ষ থেকে প্রচার প্রচারণায় বেগ পেতে হচ্ছে বলে দাবি করেছে ছাত্রদল। ছাত্রদল প্যানেল থেকে ভিপি প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ডাকসু নির্বাচন আদায় করে নেয়ার জন্য ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসে একটি মেকি সহাবস্থান তৈরী করেছে। কিন্তু বিভিন্ন হলে প্রচার চালাতে গিয়ে আমাদের নেতাকর্মীরা হামলার শিকার হচ্ছেন। অমর একুশে হলে প্রচার চালাতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন আমাদের হল সংসদের ভিপি, জিএস ও এজিএস প্রার্থী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।