Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এইডস থেকে মুক্তি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৬ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

ভয়ঙ্কর এইডসকেও গত ৪০ বছরে জয় করা গেল দ্বিতীয় বার। এবার এইডসকে জয় করলেন লন্ডনের এক রোগী। নাম, বয়স, পরিচয়, হাসপাতাল গোপন রাখতে আপাতত যার নাম দেওয়া হয়েছে, ‘দ্য লন্ডন পেশেন্ট’। ১২ বছর আগে এইডস ফ্রি হয়েছিলেন আরও এক রোগী, জার্মানিতে। তার নাম ছিল ‘দ্য বার্লিন পেশেন্ট’। এ বার ‘লন্ডন পেশেন্টে’র শরীর থেকে অস্ত্রোপচার করে ধুয়েমুছে দেওয়া হয়েছে এইডসের যাবতীয় ভাইরাস। 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (‘হু’)-র দেওয়া পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, এই মুহূর্তে বিশ্বে এইডস রোগীর সংখ্যা ৩ কোটি ৭০ লক্ষ। আর আটের দশক প্রথম এই ভাইরাসের কথা জানাজানি হওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত এতে মারা গিয়েছেন সাড়ে ৩ কোটি মানুষ।
এইডস ভাইরাসকে পুরোপুরি নির্মূল করতে অন্যের অস্থিমজ্জা ঢোকানো হয়েছিল রোগীর শরীরে। টানা ৪ বছর ধরে চিকিৎসার পর তাকে এখন বলা হচ্ছে, ‘এইডস ফ্রি’! আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘নেচার’-এর আগামী সংখ্যায় তা ছাপা হবে বলে রোগী ও হাসপাতালের যাবতীয় পরিচয় গোপন রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। যে চিকিৎসকদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, অনাবাসী ভারতীয় এইচআইভি বিশেষজ্ঞ রবীন্দ্র গুপ্তা।
অন্য এক জনের কাছ থেকে অস্থিমজ্জা (বোন ম্যারো) নিয়ে বানানো হয়েছিল বিশেষ এক ধরনের স্টেম সেল। স্টেম সেল এমনই একটি কোষ, যা থেকে আমাদের শরীরের নানা রকমের ও নানা ধরনের কোষ বানিয়ে ফেলা যায়। এইচআইভি বিশেষজ্ঞ রবীন্দ্র গুপ্তা তেমনই একটি স্টেম সেল ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন রোগীর শরীরে। তা টানা তিন বছর ছিল রোগীর শরীরে। সেই স্টেম সেলকে ছড়িয়ে পড়ার সময় দেওয়া হয়েছিল।
তবে যে কারও শরীরের অস্থিমজ্জা নিয়ে স্টেম সেল বানালে আর তা ওই ‘লন্ডন পেশেন্টে’র শরীরে ঢোকালে কাজ হত না। এমন দাতা (ডোনার)-র শরীর থেকে অস্থিমজ্জা নিয়ে সেই স্টেম সেল বানানো হয়েছিল যার শরীরে রয়েছে একটি বিশেষ ধরনের জিন। যা এইডস ভাইরাসকে নাগালে পেলেই নির্বংশ করে দিতে পারে। কোনও ছলচাতুরি করে সেই জিনকে ধোঁকা দিতে পারে না এইডস ভাইরাস। এই বিশেষ ধরনের জিনের নাম- ‘সিসিআর-ফাইভ’। এর কাজ ছিল, ‘লন্ডন পেশেন্টে’র শরীরে এইডস ভাইরাস দেখলেই তাকে মেরে ফেলা। তারা যাতে শরীরের এক প্রান্ত থেকে দ্রুত অন্য প্রান্তে ছড়িয়ে পড়তে না পারে, সে জন্য তাকে ঘিরে ফেলা। তার পরেও অনেক কাজ ছিল চিকিৎসকদের। টানা দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে নানা রকমের ওষুধপত্র দেওয়া হয়েছে রোগীকে। যাতে কোনও ভাবেই তার শরীরে জন্মাতে বা ছড়িয়ে পড়তে না পারে এইডস ভাইরাস। সব শেষে তারা রোগীকে পরীক্ষা করে দেখেছেন তারা ঠিক পথেই এগিয়েছিলেন। তাই ‘লন্ডন পেশেন্টের’ শরীরে তারা আর একটিও এইডস ভাইরাস খুঁজে পাননি।
এর পরেও সাবধানী থাকতে চেয়েছেন এইডস বিশেষজ্ঞ রবীন্দ্র। বলেছেন, রোগী ‘ফাংশনালি কিওরড্’। বোঝাতে চেয়েছেন, কোনও ভাইরাস (এইডস) যদি ‘লুকিয়ে’ বা ‘ঘুমিয়ে’ থাকেও ওই রোগীর শরীরে, সে আর কর্মক্ষম হতে পারবে না। রবীন্দ্র জানান, রোগী পুরোপুরি সুস্থ হয়ে গেলেন কি না, তা বলার জন্য আরও অপেক্ষা করতে হবে। সূত্র: সিএনএন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: এইডস

১ ডিসেম্বর, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ