Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ডাকসুকে ঘিরে তুমুল প্রচারণায় প্রার্থীরা

নুর হোসেন ইমন | প্রকাশের সময় : ৫ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে তুমুল প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। রবিবার সন্ধ্যায় চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করার পর থেকেই শুরু হয় প্রচারণা। গতকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রচার প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করেছেন প্রার্থীরা। আনুষ্ঠানিক প্রচারণা চলবে ১১ মার্চ নির্বাচনের ২৪ ঘন্টা আগ পর্যন্ত। চূড়ান্ত প্রার্থীর নাম প্রকাশ করার পরেই রবিবার রাতে বিভিন্ন হলে প্রচারণা চালান ছাত্রলীগের প্রার্থীরা। অন্যদিকে হলগুলোতে ছাত্রদলের অবস্থান না থাকায় প্রচারণায় বেগ পেতে হচ্ছে বলে জানান ছাত্রদল প্যানেলের প্রার্থীরা। প্রচারণায় অংশ নিতে দেখা গেছে কোটা আন্দোলনকারীদের প্যানেল থেকে নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রার্থীদের পাশাপাশি স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রার্থীদেরও। এদিকে নির্বাচনকে ঘিরে তফসিল ঘোষণার পর থেকেই সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠনের প্যানেলের প্রার্থীদের অনিয়ম ও বিধি লঙ্ঘের বিভিন্ন অভিযোগ উঠলেও তা নিয়ে কোন কথা বলতে রাজি হয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। লিখিত অভিযোগ দেয়ার পরও ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিরোধী প্রার্থীরা।
দীর্ঘদিন পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ডাকসু নির্বাচনে ৪৩ হাজারের বেশি ভোটারের ভোট পেতে বিভিন্ন পদে প্রতিদ্বন্ধীতা করছেন ২২৯ জন প্রার্থী আর হল সংসদে ভিপি জিএসসহ লড়ছেন ৫০৯ জন। এরমধ্যে কেন্দ্রীয় সংসদে ভিপি পদে ২১ ও জিএস পদে প্রতিদ্বন্ধীতা করছেন ১৪ জন প্রার্থী। হল সংসদে ভিপি জিএসসহ সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে ২৭, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হলে ২২, জগন্নাথ হলে ২৮, ফজলুল হক মুসলিম হলে ৩৬, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে ২৭, সূর্য সেন হলে ২৬, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলে ৩৩, স্যার এ এফ রহমান হলে ৩৭, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ২৭, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে ২৬, কবি জসীম উদ্দীন হলে ২৫, অমর একুশে হলে ২৯, বিজয় একাত্তর হলে ৩০, রোকেয়া হলে ৩০, শামসুন্নাহার হলে ২৫, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে ১৭, বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলে ৩৪ এবং কবি সুফিয়া কামাল হলে ৩৯ জন প্রাতিদ্বন্ধীতা করছেন। গতকাল সোমবার সকাল থেকেই ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে প্রচারণা চালাতে দেখা যায় প্রার্থীদের। দলীয় জনপ্রিয়তার পাশাপাশি ব্যক্তি জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগানোর জন্য প্রার্থীরা নিজ বিভাগ, জেলা সংগঠন ও হলসহ বিভিন্ন জয়গায় ধর্ণা দিচ্ছেন।
সোমবার সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে প্রচার প্রচারণা শুরু করেন ছাত্রলীগ প্যানেল থেকে নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রার্থীরা। কেন্দ্রীয় সংসদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদের প্রার্থীরা ছোট ছোট গ্রুপ করে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় প্রচার পত্র বিলি করেছেন। এদিকে ছাত্রলীগের প্যানেলকে বিজয়ী করতে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসকে প্রধান করে গঠন করা হয়েছে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি। ছাত্রলীগ প্যানেল থেকে এজিএস পদপ্রার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীদের নিয়ে ছাত্রলীগের প্যানেল দেয়া হয়েছে। আমরা আশা করছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষার্থীরা ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রলীগের প্রার্থীদেরই বেছে নিবে। এদিকে হলগুলোতে অবস্থান না থাকায় প্রচার প্রচারণায় বেগ পেতে হচ্ছে বলে দাবি করেছেন ছাত্রদল প্যানেল থেকে নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রার্থীরা। তবে সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিভাগ ও অনুষদের সামনে প্রচারপত্র বিলি করেছেন তারা। ছাত্রদল প্যানেল থেকে ভিপি প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, দীর্ঘ ১০ বছর ক্ষমতায় থাকায় হলগুলোতে সরকারী ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাই আমরা শুরু থেকেই ক্যাম্পাসের পাশাপাশি হলগুলোতে সহাবস্থানের দাবি জানিয়ে এসেছি। তবে আমরা সবসময় নির্বাচনের ব্যাপারে ইতিবাচক।
নির্বাচনকে ঘিরে দিনব্যাপী প্রচারণায় সরব ছিলেন বাম ছাত্র সংগঠনের নেতারা ও কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রার্থীরা। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবন, শ্যাডোসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রচারণা চালান তারা। কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের প্যানেলের ভিপি প্রার্থী নুরুল হক নুর বলেন, আমরা নির্দিষ্ট সময় থেকেই প্রচার প্রচারণা শুরু করেছি। তবে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শিক্ষার্থীদের শঙ্কা দূর হয়নি। সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতি আমাদের আহ্বান থাকবে তারা নির্বাচনে যাকেই ভোট দেননা কেন তারা যেন অন্ত্যত ভোট দিতে আসেন। সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভোট দিতে আসলেই কেউ তাদের ভোট চুরি করার সাহস পাবে না।
এদিকে ব্যাপক প্রচারণা চালাতে দেখা গেছে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের। সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে প্রচার প্রচারণা চালান কেন্দ্রীয় সংসদের স্বতন্ত্র জিএস পদপ্রার্থী এ আর এম আসিফুর রহমান। সোমবার মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন করে আসিফুর রহমানকে সমর্থন জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের আবাসিক হল বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্রভাবে অংশ নিতে যাওয়া প্যানেল ‘সাধারণ শিক্ষার্থী স্বতন্ত্র পরিষদ’। এর আগে একই সংবাদ সম্মেলনে উর্দু বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্রী নুরুন্নাহার পলিকে হল সংসদে ভিপি এবং একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের ৪র্থ বর্ষের ছাত্রী সাগুপ্তা বুশরা মিশমাকে জিএস করে হল সংসদে ১৩ সদস্যের মধ্যে ৭ সদস্যের আংশিক প্যানেল গঠনের ঘোষণা দেন তারা। ডাকসুর জিএস পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী এ আর এম আসিফুর রহমান প্যানেলটিকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, হলগুলোতে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রার্থীতা প্রত্যাহারে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। আমরা এ বিষয়ে ভিসি বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমরা আশা করেছিলাম ভিসি এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। কিন্তু তিনি আজকের বক্তব্যে এ বিষয়ে কিছু বলেননি। এরআগে কেন্দ্রীয় সংসদের স্বতন্ত্র প্যানেল স্বাধিকার স্বতন্ত্র পরিষদ, রোকেয়া পরিষদ এ আর এম আসিফুর রহমানকে সমর্থন জানিয়েছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ডাকসু

৩ নভেম্বর, ২০২১
১৪ মার্চ, ২০২০
২৯ ডিসেম্বর, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ