Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মদিনা গ্রুপের কব্জায় পাঁচ একর জমি

নদীখেকোদের কবলে মেঘনা-৪

মোক্তার হোসেন মোল্লা, সোনারগাঁও | প্রকাশের সময় : ৪ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

সোনারগাঁও উপজেলার চররমজান সোনাউল্লাহ মৌজার ইসলামপুর এলাকায় ব্যক্তিগত নামে প্রথমে কয়েক একর জমি কেনে মদিনা গ্রুপ। সেই জমির রেশ ধরে মেঘনা নদীর দিকে ক্রমে দখল করতে করতে নদীর তীরবর্তী খাস ভূমি এবং ফোরশোর ল্যান্ডভূক্ত ভূমি দখল করে নেয়। এভাবে প্রায় ৫ একর নদীর জমি দখলে নিয়েছে মদিনা গ্রুপ লিমিটেড।
সোনারগাঁও সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর কার্যালয়ের সরেজমিন তদন্ত প্রতিবেদনেও মদিনা গ্রুপের টাইগার সিমেন্ট ফ্যক্টরীর মেঘনা নদীর তীরবর্তী ফোরশোর ল্যান্ডভূক্ত ভূমিতে অবৈধভাবে প্রবেশ ও স্থাপনা নির্মাণের তথ্য উঠে এসেছে। ওই প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে সোনারগাঁও সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর কার্যালয় থেকে মেঘনা নদী, নদী তীরবর্তী খাস ভূমি এবং ফোরশোর ল্যান্ডভূক্ত ভূমিতে অবৈধভাবে দখলকৃত জমি তিন দিনের মধ্যে স্ব-উদ্যোগে দখলমুক্ত করার জন্য মদিনা গ্রুপ লিমিটেডের টাইগার সিমেন্ট ফ্যক্টরিকে নির্দেশনা দেয়া হয়। কিন্তু সহকারী কমিশনার (ভূমি) উক্ত নোটিশের প্রায় ৬ মাস অতিবাহিত হলেও কার্যত কোন ব্যবস্থা নেয়নি মদিনা গ্রুপ। বরং থেমে নেই তাদের দখলদারিত্ব। নদী দখলের কার্যক্রম চলছে আগের মতো।
এদিকে, নদী দখলের অভিযোগের সত্যতা থাকলেও মদিনা গ্রুপকে নদী দখলমুক্ত করতে কোন ব্যবস্থাই নেয়নি বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ। মোটা অঙ্কের ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ইসলামপুরে বিশাল এলাকাজুড়ে নদী দখল করে স্থাপনা গড়েছে মদিনা গ্রুপ। এমনকি নদীর জায়গা ভরাট করার কাজ এখনও চলছে। মদিনা গ্রুপের নদী দখলের বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসন অবগত থাকলেও রহস্যজনক কারনে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, মদিনা গ্রুপ লিমিটেড দীর্ঘদিন যাবত টাইগার সিমেন্ট ফ্যাক্টরী ও মদিনা ডকইয়ার্ড এর নামে মেঘনা নদী দখল করে রেখেছে। মেঘনা নদীর জায়গা দখল করে স্থায়ীভাবে বড় বড় স্থাপনা করেছে মদিনা গ্রুপ। তাদের বড় বড় বেশিরভাগ স্থাপনাই নদীর তীরবর্তী খাস ভূমি এবং ফোরশোর ল্যান্ডভূক্ত ভূমিতে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই এভাবে নদী ও জমি দখল করেছে মদিনা গ্রুপ। এলাকাবাসী দ্রুত নদীর জমি ও সরকারি খাস জমি দখলমুক্ত করার দাবি জানায়।
এ বিষয়ে সোনারগাঁও সহকারী কমিশনার (ভূমি) বি এম রুহুল আমিন রিমন বলেন, মদিনা গ্রুপের টাইগার সিমেন্ট এর বিরুদ্ধে নদী দখলের খবর পেয়েছি। তাদেরকে চূড়ান্ত নোটিশ দেওয়া হয়েছে। খুব শিগগিরই আমরা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে অবৈধভাবে দখলকৃত নদী উচ্ছেদ অভিযানে যাবো। তবে স্থানীয়রা মনে করেন, প্রশাসন বরাবরই এরকম বলে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত কাজের কাজ কিছুই হয় না। সেজন্য তারা এ বিষয়ে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।
এ ব্যাপারে সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার সরকার বলেন, আমি থাকাকালীন কাউকে নদী দখল করতে দেব না। দখলকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেবো।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নদী

২৬ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ