Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রয়টার্সের রিপোর্ট : যুদ্ধের প্রান্ত থেকে ফিরেছে ভারত-পাকিস্তান

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩ মার্চ, ২০১৯, ১১:৩৪ এএম

যুদ্ধের প্রান্ত থেকে ফিরেছে ভারত ও পাকিস্তান। কিন্তু অস্বস্তিকর অবস্থা অব্যাহত রয়েছেই। শুক্রবার ইসলামাবাদ তাদের হাতে আটক ভারতীয় পাইলট অভিনন্দনকে ফেরত দেয়ার পর শনিবার উত্তেজনা দৃশ্যত কমে এসেছে। পারমাণবিক অস্ত্রধর দুই প্রতিবেশীর মধ্যে একটি যুদ্ধ বন্ধে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রচেষ্টার ফলে এমনটা হয়েছে বলে মনে করা হয়। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে এক প্রতিবেদনে এসব কথা লিখেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এতে বলা হয়, শুক্রবার স্থানীয় সময় রাত ঠিক ৯টার সামান্য আগে ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে ভারতে হেঁটে প্রবেশ করেন উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। তার এই ফিরে আসাকে সরাসরি সম্প্রচার করা হয় টেলিভিশনে। তাকে হস্তান্তর করার পরে কয়েক ঘণ্টায় বিতর্কিত কাশ্মীরের বিরোধপূর্ণ সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ রেখার দু’পাশে গুলিবিনিময় অব্যাহত ছিল।

এতে কমপক্ষে চারজন নিহত হয়েছেন। তবে রাতের বেলা এই গুলিবিনিময় বন্ধ হয়। বার্তা সংস্থা এপির খবরে বলা হয়েছে, শুক্রবারের গোলাগুলিতে দুই পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছে। অপর পাশে মারা গেছে চার ভারতীয় বেসামরিক নাগরিক।

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে পৌঁছার পর উভয় দেশ প্রতিপক্ষের মিশনের উপর যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে বোমা নিক্ষেপ করতে থাকে। তাতে তাদের মধ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ শুরু হওয়ার মতো অবস্থা তৈরি হয়। এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র ও চীনসহ বিশ্বের শক্তিধর সব নেতা ও রাষ্ট্রগুলো উভয় পক্ষকে বিরত থাকার অনুরোধ করেন। একপর্যায়ে শান্তির লক্ষ্যে আটক ভারতীয় পাইলট অভিনন্দনকে মুক্তি দেয়ার ঘোষণা দেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। শুক্রবার তাকে মুক্তি দেয়া হয়।
গত ১৪ই ফেব্রুয়ারি কাশ্মীরের পালওয়ামাতে আত্মঘাতী গাড়িবোমা হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। এতে ভারতের কমপক্ষে ৪০ জন আধা সামরিক বাহিনীর সদস্য নিহত হন। এর জন্য দায়ী করা হয় পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি গ্রুপ জৈশ-ই-মোহাম্মদকে। ভারতের অভিযোগ তাদেরকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে পাকিস্তান। এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে ইসলামাবাদ। ওই হামলার কড়া জবাব দেয়ার হুমকি দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

মঙ্গলবার ভারতীয় যুদ্ধবিমান পাকিস্তানের ভিতরে আকাশপথে হামলা চালায়। নয়া দিল্লির দাবি, তারা জঙ্গিদের ক্যাম্পে হামলা চালিয়েছে। তবে এমন ক্যাম্প থাকার কথা প্রত্যাখ্যান করেছে ইসলামাবাদ। একই কথা বলেছেন স্থানীয় গ্রামের লোকজনও। কিন্তু বুধবার পাকিস্তানও আকাশপথে প্রতিশোধমূলক অভিযান চালায়। এর ফলে উভয়পক্ষই গুলি করে যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করে।

এই অচলাবস্থা এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ঘটে যখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একটি জাতীয় নির্বাচনের মুখোমুখি। আগামী মে মাসের মধ্যে সেই নির্বাচন হতেই হবে। বলা হয়, দুই দেশের মধ্যে সৃষ্ট অচলাবস্থাকে পুঁজি করে নির্বাচনে জাতীয়তাবাদের সুবিধা নেয়ার প্রত্যাশা করছিলেন মোদি।
কিন্তু পাকিস্তান পাইলট অভিনন্দনকে মুক্তি দিয়ে বল ঠেলে দিয়েছে ভারতের কাছে। যদিও শুক্রবার পাকিস্তানের শীর্ষ সেনা কর্মকর্তারা যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করে যে কোনো রকম আগ্রাসনের জবাব দেয়ার কথা জানিয়েছেন, তবু এখন উত্তেজনা প্রশমনের দায়িত্ব ভারতের।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত-পাকিস্তান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ