Inqilab Logo

বুধবার ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১, ০৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাংলাদেশ মৌলিক অধিকারে তলানিতে

১২৬ দেশে দ্য ওয়ার্ল্ড জাস্টিস প্রজেক্টের জরিপ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৩ এএম | আপডেট : ১২:১০ এএম, ৩ মার্চ, ২০১৯

দেশের ভোটাররা যখন ভোট দেয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে; এবং মানবাধিকার কর্মীরা মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে যখন আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার দাবিতে সোচ্চার; তখন দ্য ওয়ার্ল্ড জাস্টিস প্রজেক্ট (ডব্লিউজেপি) খবর দিয়েছে, আইনের শাসনে বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়ছে। গণতান্ত্রিক দেশটির নাগরিকের মৌলিক অধিকার সূচকের অবস্থা আরো খারাপ, একেবারে তলানিতে ঠেকেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা (ডব্লিউজেপি) জরিপে এই চিত্র উঠে এসেছে।
সংস্থাটির জরিপে বৈশ্বিক আইনের শাসন সূচকে বিশ্বের ১২৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১১২তম। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে চতুর্থ। সংস্থাটি তাদের ওয়েবসাইটে ২০১ পৃষ্ঠার এই জরিপ গত বৃহস্পতিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) প্রকাশ করে। বিশ্বের ১২৬টি দেশের ওপর জরিপ করে সংস্থাটির প্রতিবেদনে দেখানো হয়, আইনের শাসন কার্যকরে সবচেয়ে ভালো (শীর্ষে) অবস্থানে রয়েছে শীর্ষ তিনটি দেশ। সেগুলো হচ্ছে- ডেনমার্ক, নরওয়ে ও ফিনল্যান্ড। এ দেশগুলোতে সরকার বিচারব্যবস্থার প্রতি হস্তক্ষেপ না করায় আইন নিজস্ব গতিতে চলে। মানুষ নাগরিক অধিকার ভোগ করে। আর আইনের শাসনের সবচেয়ে খারাপ (তলানি) তিনিটি দেশ হলো- কঙ্গো, কম্বোডিয়া ও ভেনেজুয়েলা। সরকারের আইন তথা বিচারব্যবস্থার ওপর হস্তক্ষেপের কারণে নাগরিকরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়ে থাকে।
‘আইনের শাসন স‚চক-২০১৯’ শীর্ষক প্রতিবেদনে দেখা যায়, এশিয়া মহাদেশেই আইনের শাসনে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও ভারত। এই তিন দেশের মানুষ বাংলাদেশের মানুষের চেয়ে কিছুটা হলেও বেশি আইনি সুরক্ষা পেয়ে থাকে। আর বাংলাদেশের পেছনে রয়েছে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান।
এক বছর আগে ২০১৮ সালে সংস্থাটির করা জরিপের সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১০২তম। চলতি বছর নতুন করে বিশ্বের ১৩টি দেশ এই তালিকায় যুক্ত করা হয়। এতে বাংলাদেশের অবস্থান আরো পিছিয়ে যায়। অবশ্য দক্ষিণ এশিয়া ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান এ বছর একই রয়েছে।
দ্য ওয়ার্ল্ড জাস্টিস প্রজেক্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, ১২৬টি দেশের ১ লাখ ২০ হাজার খানা জরিপ ও ৩ হাজার ৮০০ জন বিশেষজ্ঞের মতামত নিয়ে এই সূচক ও প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। মূলত ৮টি বিষয়ের ওপর ভিত্তি করেই জরিপটি করা হয়েছে। এগুলো হলো- মৌলিক অধিকার, নিয়ম ও নিরাপত্তা, সরকারি ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা, দুর্নীতির অনুপস্থিতি, উন্মুক্ত সরকার, নিয়ন্ত্রণমূলক ক্ষমতার প্রয়োগ, নাগরিক ন্যায়বিচার এবং ফৌজদারি বিচার।
ডব্লিউজেপি প্রতিবেদন অনুযায়ী, আট বিষয়ভিত্তিক সূচকের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সবচেয়ে খারাপ হচ্ছে নাগরিকের মৌলিক অধিকারের সূচকে। ১২৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে ১১৯তম অবস্থানে রয়েছে। নিয়ম ও নিরাপত্তার সূচকে বাংলাদেশ ১১৬ ও ফৌজদারি বিচারে ১১৪তম অবস্থানে রয়েছে। তবে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে উন্মুক্ত সরকারের সূচকে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান ৮৬তম।
দ্য ওয়ার্ল্ড জাস্টিস প্রজেক্টের ‘আইনের শাসন সূচক-২০১৯’ প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, গত এক বছরে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৬১টি দেশের আইনের শাসনের অবনতি হয়েছে। আইনের শাসনের সূচকে নিম্নগতিতে বাংলাদেশের নিচে রয়েছে ভেনেজুয়েলা, চীন, তুরস্ক, মিয়ানমার, ইথিওপিয়া, মিসর ও ইরান।



 

Show all comments
  • Ali Akbar ৩ মার্চ, ২০১৯, ১:২৭ এএম says : 0
    বাংলাদেশে কোন অধিকার আছে নাকি ‘ সব অধিকার পুলিশের কাছে বন্দী..
    Total Reply(0) Reply
  • Abdul Aual Dider ৩ মার্চ, ২০১৯, ১:২৭ এএম says : 0
    ভাই পৃথিবীর সবার উপরে মৌলিক অধিকার।
    Total Reply(0) Reply
  • Nahid hasan ৩ মার্চ, ২০১৯, ১:২৮ এএম says : 0
    দ্য ওয়ার্ল্ড জাস্টিস প্রজেক্টের (ডব্লিউজেপি) বৈশ্বিক আইনের শাসন সূচকে বাংলাদেশের যে অবস্থান চিত্রিত হয়েছে তা অত্যন্ত লজ্জাজনক। আশা করছি এ চিত্র সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের অনুশোচিত করবে এবং তাদের বিবেকতাড়িত শুভবুদ্ধি জাগ্রত হয়ে তা বাস্তবক্ষেত্রে পরিলক্ষিত হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • S.A. Firoj Ahmed ৩ মার্চ, ২০১৯, ১:২৮ এএম says : 0
    My son was upset when he scored 9th place among 316 students, I asked him why? He told me that Tamim Iqbal scored 100 and everybody clapped for him so he expected that he would be the 100th boy. Will my son be happy to see his country's score?!?!?! May Allah save my son and the general people of Bangladesh.
    Total Reply(0) Reply
  • chowdhury sayem ৩ মার্চ, ২০১৯, ১:২৮ এএম says : 0
    বাহ, এমন আইন মন্ত্রিই তো দরকার। সমস্যার মুখোমুখি হয়ে সমাধান না করে যে সমস্যাকে অস্বীকার করে পাশ কাটিয়ে যাবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Mostak ৩ মার্চ, ২০১৯, ১:২৯ এএম says : 0
    এই ধরনের সুচকে বাংলাদেশের উন্নতির পিছনে সবচেয়ে বড় অন্তরায় সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের বিষয়টিকে উপেক্ষা কর। সমস্যা আছে এটাই যদি অস্বীকার করেন তবে সমাধানটা হবে কীভাবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Shah Alam Khan ৩ মার্চ, ২০১৯, ১১:৩৯ পিএম says : 0
    খুবই দুঃখজনক প্রতিবেদন। দেশে আইনের শাসনের অভাব দেশ শুধু নিচের দিকেই যাচ্ছে এটা মেনে নেয়া যায়না। অর্থনৈতিক ভাবে অগ্রগতির সাথে সাথে দেশের মানুষের মৌলিক অধিকারও নিশ্চিত করেতে হবে নয়ত দেশ শাসনের করার অধিকার সেই সরকার হারিয়ে ফেলে। এখন যেহেতু আওয়ামী লীগ ইতিমধ্যে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় অধিষ্টিত সেহেতু যদি তাঁরা মনে করে ‘আমাদেরকে পায় কে’ তাহলে তাঁরা ভুল করবে। আল্লাহ্‌ এবার নেত্রী হাসিনাকে সহায়তা করেছেন বলেই তিনি ক্ষমতায় আসতে পেরেছেন। আমি নিশ্চিত নেত্রী হাসিনা ঠিকই বুঝেছেন এবার জনগণ তাঁকে কিভাবে ভোট দিয়েছে। বিশেষ করে আমাদের মত লোক যারা সবকিছুর আগে ধর্মকে রাখে তাদের ভোট কখনও আওয়ামী লীগ আগে পায়নি এবারই পেয়েছে। এমনকি নেত্রী হাসিনা ধারনাও করতে পারেননি যে, এরা এবার নেত্রী হাসিনাকে এভাবে ভোট দিবে। এখন যদি নেত্রী হাসিনা এনাদের ভোট নিয়ে তামাশা করেন তাহলে এরপরিনতির জন্যে দায়ী নেত্রী হাসিনাকে হতে হবে। কাজেই আমি মনে করি নেত্রী হাসিনার আর ছাড় দেয়ার সময় নেই। তিনি যদি সত্যই এবার রাজনীতি থেকে অবশর নেন তাহলে তাঁর দেয়া ওয়াদা তাঁকে যে কোন মূল্যে পালন করে দেশ থেকে দুর্নীতি দূর করতে হবে। এখনই ওনার দরকার হবে আইনমন্ত্রীর ঘর মানে আইনমন্ত্রীর নিজস্ব দপ্তরের দুর্নীতি দূর করা। কারন এই দপ্তর হতেই আদলত নিয়ন্ত্রন করা হয় এমন প্রচুর অভিযোগ রয়েছে আজকের এই প্রতিবেদনেও এটাই ফুটে উঠেছে। আমি এই ইনকিলাব পত্রিকায় গতকালই লিখেছি আইনমন্ত্রীর নিজস্ব দপ্তর নিয়ে। আজ শুধু স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলতে চাই এই আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হলে প্রথমেই নিয়ন্ত্রণে নিতে হবে আইনমন্ত্রীর নিজস্ব দপ্তর এরপর বাকিরা আপনা আপনি সংশোধন হয়ে যাবে এটাই অভিজ্ঞদের মতামত। আমি নেত্রী হাসিনাকে অনুরোধ করবো আপনি ইতিমধ্যে জেনেগেছেন (যদিও আগেও জানতেন) এবং আপনার কাছে সরাসরি অভিযোগ দেয়া হয়েছে এখন আপনি দুর্নীতি দমন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিন আইনমন্ত্রীর ব্যাক্তিগত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরকে নিয়ন্ত্রন করতে। আমার কাছে প্রমাণ রয়েছে কিভাবে তাঁরা একজন মাইনোরিটি লোকের পক্ষে অন্যায় ভাবে কাজ করেছে। কাজেই বলা যায় একজনের জন্যে করতে পারলে হাজার জনের জন্যে করতে পারে এটাই সত্য তাই না??? আল্লাহ্‌ আমাকে সহ সবাইকে সত্যকে বুঝার, সত্য বলা ও সত্যের উপর চলার ক্ষমতা দান করুন। আমিন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাংলাদেশ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ