পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বালু ভরাট করে মেঘনা নদী দখলের অভিযোগ উঠেছে সোনারগাঁওয়ের বৈদ্যেরবাজার ঘাট এলাকায় অবস্থিত ইউরো মেরিন শিপ বিল্ডার্স এবং হেরিটেজ পলিমার এন্ড ভেজিটেবলস লিমিটেড নামের একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। প্রতিষ্ঠানটি বালু ভরাট করে মেনীখালী নদীর মুখ বন্ধ করে দিয়েছে। ইউরো মেরিন শিপ বিল্ডার্স এবং হেরিটেজ পলিমার এন্ড ভেজিটেবলস লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে স্থানীয় এলাকাবাসী মানববন্ধন, বিক্ষোভ সমাবেশ, স্বারক লিপিসহ একাধিকবার লিখিত অভিযোগ প্রদান করলেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি স্থানীয় প্রশাসন। স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার সাতভাইয়াপাড়া ও চর লাউয়াদী মৌজার মেঘনা নদী, নদীর তীরবর্তী খাস ভূমি, সরকারি দুইটি খাল এবং ফোরশোর ল্যান্ডভূক্ত ভূমিতে বালু ভরাট করে আল মোস্তফা গ্রুপের মালিকানাধীন ইউরো মেরিন শিপ বিল্ডার্স ও হেরিটেজ পলিমার এন্ড ভেজিটেবলস লিমিটেড নামক প্রতিষ্ঠানটি প্রাচীর নির্মাণ করছে। স্থানীয় কিছু অসাধু ব্যক্তিদের সহায়তায় বৈদ্যেরবাজার এলাকায় নদীর পশ্চিম দিকে ২০০০ বাই ৭০০ বর্গফুট পরিমান মেঘনা নদীর তীরভূমি ভরাট করে বিশালাকার এই নির্মাণ করা হচ্ছে। বালু ভরাটের কারনে মেনীখালী নদীর মুখ শুকিয়ে যাওয়ায় রতনপুর, ভাটি বন্দর, পিরোজপুর, দুধঘাটা ও নোয়াগাও গ্রামের কৃষকরা চলতি ইরি মৌসুমে পানি সংকটে পর্যাপ্ত সেচ দিতে পারছেন না। এতে প্রায় ২শ’ একর কৃষি জমির ফসল নষ্ট হওয়ার আশংকা করছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ এবং এলাকাবাসী। নদী দখলের কারনে সোনারগাঁওয়ের ঐতিহ্যবাহী কাইকারটেক হাট থেকে বৈদ্যেরবাজার ঘাটে নৌ-চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।
জানা গেছে, নদী দখলের পাশাপাশি ইউরো মেরিন শিপ বিল্ডার্স ও হেরিটেজ পলিমার এন্ড ভেজিটেবলস লিমিটেড নামক প্রতিষ্ঠানটি মালিক আল মোস্তফা সড়ক ও জনপদ বিভাগের জমিও দখল করেছে। ইতিমধ্যে সড়ক ও জনপদ বিভাগ দখলকৃত রাস্তা ছেড়ে দেওয়ার জন্য নোটিশ করলেও তা আমলে নেয়নি আল-মোস্তফা গ্রুপ। নদী দখলের জন্য বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ বিগত ২০১৭ সনের ৬ ডিসেম্বর সরেজমিনে তদন্তে এসে বৈদ্যেরবাজার এলাকায় মেঘনা নদীর পশ্চিম দিকে ২০০০ বাই ৭০০ বর্গফুট পরিমান মেঘনা নদীর তীরভূমি দখল ও ভরাটের সত্যতা পায়। পরবর্তীতে বিআইডব্লিউটিএ নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের উপ-পরিচালক মো. শহীদুল্লাহ, উপ-পরিচালক এহেতেশামুল পারভেজ, সহকারী পরিচালক শাহ আলম, সহকারী তত্ত্বাবধায়ক জাহাঙ্গীর আলমসহ কর্মকর্তারা প্রতিষ্ঠানটির সকল কাজ বন্ধ করে ৭ দিনের মধ্যে শিল্প প্রতিষ্ঠানটির নিজ খরচে বালু অপসারণ করার নির্দেশ দেন। এমনকি সহকারী কমিশনার (ভূমি), সোনারগাঁও কার্যালয় থেকেও বালু অপসারণ ও দখলকৃত নদী ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এতকিছুর পরেও আল-মোস্তফা নদী দখল করে তার প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।
উপজেলার বৈদ্যেরবাজার সাতভাইয়াপাড়া গ্রামের হাজী মৃত আলী মিয়ার ছেলে হাজী আজিজুল্লাহ বলেন, আমি বাদী হয়ে অবৈধ দখল ও নদী ভরাটের উপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে মহামান্য হাইকোর্টে একটি রিট করি। হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মামুনুর রহমান ও বিচারপতি আশিষ রঞ্জন দাস বিগত ২০১৭ সনের ১১ ডিসেম্বর নদী দখলের উপর নিষেধাজ্ঞা দেন। কিন্তু মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের নির্দেশ অমান্য করে স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে কাজ করে যাচ্ছে শিল্প প্রতিষ্ঠানটির মালিক আল-মোস্তফা।
এ বিষয়ে সোনারগাঁও সহকারী কমিশনার (ভূমি) বি.এম. রুহুল আমিন রিমন বলেন, আল-মোস্তফা গ্রুপের বিরুদ্ধে নদী দখলের খবর পেয়েছি। তাদেরকে চূড়ান্ত নোটিশ দেওয়া হয়েছে। খুব শীঘ্রই আমরা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে অবৈধভাবে দখলকৃত নদী উচ্ছেদ অভিযানে যাবো।
সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার সরকার বলেন, আমি থাকাকালীন কাউকে নদী দখল করতে দিবো না। দখলকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিবো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।