Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

লোকসানের পাল্লা ভারী হওয়ায় দামুড়হুদার কৃষকের মুখ মলিন

প্রকাশের সময় : ১৭ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

নুরুল আলম বাকু, দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা) থেকে

চলতি বোরো মৌসুমে নতুন ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন দামুড়হুদার চাষিরা। বৈরি আবহাওয়ার কারণে শিলাবৃষ্টি ও কাল বৈশাখীর আশঙ্কায় ধানচাষিদের ঘুম হারাম। তাই মাঠের পাকাধান কাটা মাড়াই করে ঘরে তুলতে সবাই উঠেপড়ে লেগেছে। ইতোমধ্যেই মাঠের ৭৫ভাগ জমির ধান কাটা মাড়াই শেষ হয়েছে। বৈরি আবহাওয়া সত্ত্বেও এবার তুলনামূলকভাবে ধানের ফলন ভাল। বর্তমানে ধানের বাজারদর ভাল না থাকায় কৃষকের মুখে হাসি ফোটাতে পারছে না এ ফলন। অন্যান্য বারের মত এবারও ধানের বাজারদর ভাল না থাকায় লোকসানের পাল্লা ভারি এমনটায় অভিমত বোরো চাষিদের। এছাড়াও ভারত থেকে চাল আমদানির কারণে দেশে উৎপাদিত ধানের কাক্সিক্ষত বাজারমূল্য পাওয়ার ব্যাপারে কৃষকদের মনে সংশয় দেখা দিয়েছে। জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় বিগত ছয় বছরের মধ্যে শুধুমাত্র গত বছর ছাড়া বাকি পাঁচ বছর বোরোচাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। বিগত বছরগুলোতে বোরোচাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হবার কারণ হিসেবে চাষিরা জানান, লাগামহীনভাবে সার, বীজ, কীটনাশক, ডিজেল, বিদ্যুতের দাম ও শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধির ফলে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই তুলনায় ধানের কাক্সিক্ষত বাজারদর না পেয়ে লোকসানগ্রস্ত হয়ে কৃষকরা ধানের আবাদ কমিয়ে দেয়। পরবর্তীতে ধানের পরিবর্তে অন্যান্য ফসলের আবাদ করে তাতেও লাভবান হতে না পেরে গত বছর আবারও আশায় বুক বেঁধে কৃষকরা নতুন করে রোরো আবাদের দিকে ঝুঁকে পড়ে। মৌসুমের শুরু থেকে কৃষি বিভাগও মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু করে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা পুরণে সক্ষম হয়। কিন্তু ধানের কাক্সিক্ষত বাজার দর না পেয়ে আবারও বোরো চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় চাষিরা। ফলে এবছর আবারও ভাটা পড়ে বোরো আবাদে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা পেছে, চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৮হাজার ৩৫৬ হেক্টর জমি। সেক্ষেত্রে অর্জিত হয়েছে মাত্র ৭হাজার ৪৩৫ হেক্টর জমি। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আবাদ কম হয়েছে ৯২১ হেক্টর জমিতে। উপজেলার দর্শনা পৌর এলাকাসহ কার্পাসডাঙ্গা, কুড়ালগাছি, মদনা, জুড়ানপুর, নতিপোতা, নবগঠিত নাটুদহ ও হাউলী ইউপির বিভিন্ন এলাকার বোরোচাষিরা জানান, বিগত বছরগুলোতে ধান, পাট, সবজিসহ বিভিন্ন ফসলের চাষ করে উপর্যুপরি লোকসানগ্রস্ত হলেও শুধুমাত্র খাদ্য উৎপাদনের লক্ষ্যে এবারও হতাশা আর উৎকণ্ঠা নিয়ে কৃষকরা বোরো আবাদে মাঠে নামে। চলতি মৌসুমে বৈরি আবহাওয়া বিরাজ করলেও ধানের ফলন মোটমুটি ভাল হয়েছে। কিন্তু ধানের বর্তমান বাজারমূল্যে চাষিরা হতাশ হয়ে লোকসান আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। ধানের বাজার মূল্য বৃদ্ধি না হলে বর্তমান বাজারে ধান বিক্রি করে এবারও ধানচাষিদের লাভের পরিবর্তে লোকসানের পাল্লা ভারী হবে। উপজেলার বোরোচাষি কার্পাসডাঙ্গার শামসুল, বিল্লাল, লোকনাথপুর গ্রামের বাবলু, মসলেম, জয়রামপুর গ্রামের আবু কালাম, আমজাদ, ছাওার, শ্যামপুর গ্রামের মিজানুর, মদনা গ্রামের আঃ খালেক, ফজলু, নাস্তিপুর গ্রামের আব্দুল কাদের, জাকির চৌধুরী জানান, সম্প্রতি বছরগুলোতে কৃষি পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির সাথে বেড়েছে সেচ, লাঙ্গল ও জন মজুরির দাম। কিন্তু সেই তুলনায় ধানের দাম না পওয়ায় ধান আবাদ করে কৃষকরা লাভবান হতে পারেনি। তারা আরও জানান, এলাকায় উৎপাদিত বিভিন্ন ফসলের বাজারদরের উপর সরকারিভাবে কোন নিয়ন্ত্রণ না থাকায় সারা বছর ধান, পাটসহ বিভিন্ন ফসলের আবাদ করে তার ন্যায্যমূল্য না পেয়ে কৃষকরা অনবরত লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছেন। নাস্তিপুর গ্রামের রোরোচাষি জাকির চৌধুরী বলেন, আমি এবছর আমার নিজস্ব ২বিঘা জমিতে বিআর-২৮ জাতের ধানের আবাদ করেছিলাম। তাতে খরচ হয় ২৬ হাজার টাকা। ইতোমধ্যেই কাটামাড়াই শেষ করে ধান পেয়েছি ৩৮ মণ। বর্তমান বাজারে এ ধান বিক্রি করলে আবাদের খরচ উঠলেও আমার নিজের পরিশ্রম বৃথা। মদনা গ্রামের বোরোচাষি ফজলু বলেন, আমি এবার ২বিঘা জমিতে বি আর-২৮ জাতের ধানের আবাদ করেছিলাম। কয়েক দিন আগে কাটামাড়াই শেষ করেছি। ধান পেয়েছি সাড়ে ৩৬মণ। আর এ আবাদে আমার খরচ হয়েছে ২৫হাজার ৮শ’ টাকার মতো। তাতে বর্তমান বাজারদরে বিক্রি করলে লোকসান হবে। দামুড়হুদার দর্শনা মোকামের ধান-চাউল ব্যবসায়ী হাজী আঃ রহমান জানান, বর্তমানে, স্থানীয় বাজারে প্রকারভেদে প্রতিমন নুতন মোটা ধান ৫শ’ টাকা থেকে সাড়ে ৫শ’ টাকা আর চিকন ধান প্রতিমণ ৭শ’ থেকে ৭শ’ ২০ টাকায় বেচাকেনা হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: লোকসানের পাল্লা ভারী হওয়ায় দামুড়হুদার কৃষকের মুখ মলিন
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ
function like(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "clike_"+cid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_like.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function dislike(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "cdislike_"+cid; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_dislike.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rlike(rid) { //alert(rid); var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rlike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_like.php?rid="+rid; //alert(url); xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rdislike(rid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rdislike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_dislike.php?rid="+rid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function nclike(nid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "nlike"; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com//api/insert_news_comment_like.php?nid="+nid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } $("#ar_news_content img").each(function() { var imageCaption = $(this).attr("alt"); if (imageCaption != '') { var imgWidth = $(this).width(); var imgHeight = $(this).height(); var position = $(this).position(); var positionTop = (position.top + imgHeight - 26) /*$("" + imageCaption + "").css({ "position": "absolute", "top": positionTop + "px", "left": "0", "width": imgWidth + "px" }).insertAfter(this); */ $("" + imageCaption + "").css({ "margin-bottom": "10px" }).insertAfter(this); } }); -->