Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

মরেছে তো কয়েকটা পাইন গাছ আর একটা কাক- রয়টার্সকে বালাকোটের বাসিন্দা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২ মার্চ, ২০১৯, ১২:৪২ পিএম

পুলওয়ামা হামলাকে কেন্দ্র গড়ে পাক-ভারত উত্তেজনার মধ্যে গত মঙ্গলবার পাকিস্তানের বালাকোট সীমান্তে বিমান হামলা চালায় ভারতীয় বিমানবাহিনী। জইশ-ই-মোহাম্মাদের ঘাঁটি লক্ষ্য করে চালানো হামলায় তিন থেকে সাড়ে তিন শ স্বাধীনতাকামী মারা যায় বলে দাবি করে নয়াদিল্লি।

কিন্তু ভারতের এ দাবি শুরুতেই নাকচ করে দেয় পাকিস্তান। বলা হয়, হামলায় কেউ নিহত হয়নি। কয়েক গাছ ধ্বংস হয়েছে।

আর পাকিস্তানি আলোচিত সাংবাদিক হামিদ মীর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং লাইভে দেখান, ভারতীয় হামলায় একটি কাক ছাড়া কেউই মারা যায়নি। এ ছাড়া বিবিসিসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোও এ ব্যাপারে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে বলা হয়, ভারতের দাবির কোনো প্রমাণ তারা পাননি।

এরই মধ্যে বার্তা সংস্থা রয়টার্স স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ঘটনাস্থল বালাকোটের জাবা গ্রামের ভ্যান চালক আব্দুর রশিদ বলেছেন, ‘মরেছে তো কয়েকটা পাইন গাছ আর একটা কাক, আর কিছুই হয়নি। এত স্বাধীনতাকামী মরলো, আর একটাও লাশ পাওয়া গেল না— এটা হয় নাকি।’

তবে ৬২ বছর বয়সী নুরান শাহ সেদিন ভোররাতে বোমার আঘাতে সত্যি আহত হন। ডান চোখের ওপরে এখনও সেই প্রমাণ স্পষ্ট। যদিও তাকে হাসপাতালেও যাওয়া লাগেনি। নিজেরই বাড়ির দাওয়ায় বসে সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘ওরা নাকি জঙ্গি (স্বাধীনতাকামী) মারতে বোমা ফেলেছিল! এই তো আমরা বেঁচে আছি। আমাদের কি জঙ্গি মনে হয়?’

খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের অ্যাবোটাবাদ শহর থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরের শহর বালাকোট। আর এই শহরের পার্শ্ববর্তী পাহাড়ের ওপর জঙ্গলে ঘেরা জাবা গ্রাম। সব মিলিয়ে ৪০০ থেকে ৫০০ লোকের বাস। আর গ্রাম বলতে মাটির কয়েকটা বাড়ি আর একটা মাদ্রাসা। তালিম-উল-কুরআন।

এই মাদ্রাসা ঘিরেই আলোচনা। ভারতের অভিযোগ, এখানেই যোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দেয় জইশ-ই-মোহাম্মাদ। যদিও গ্রামবাসী সে রকম কিছু হয় না বলেই জানিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, গত ১৪ ফেব্রুয়ারির ওই হামলায় ৪৯ ভারতীয় জওয়ান নিহত হয়। যার দায় স্বীকার করে পাকিস্তানভিত্তিক সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মাদ। নয়া দিল্লির অভিযোগ, ওই হামলার পেছনে ইসলামাবাদের যোগসাজশ রয়েছে, যদিও সংগঠনটি পাকিস্তানে নিষিদ্ধ।

ভারতীয় গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, দেশটির বিমানবাহিনী কোন ঘাঁটিতে অভিযান চালাল, ঘটনার তিন দিন পরও ধোঁয়াশা কাটল না। এর মধ্যেই ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী দাবি তুলেছেন, পাকিস্তানের বালাকোটে বিমান হামলায় কতজন মারা গেছে তার হিসাব দিয়ে সরকার যেন বিষয়টি স্পষ্ট করে।

ঘটনার দিন জাবায় স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নাইট শিফটের দায়িত্বে কর্মকর্তা মোহাম্মাদ সাদিক সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘বোমায় যে একজন সামান্য আহত হয়েছিলেন, তিনিও হাসপাতালে আসেননি। অন্য কারও কিছু হলে তো আমরা আগে জানতাম। সব বাজে কথা।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত-পাকিস্তান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ