নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
নিউজিল্যান্ডের মাটিতে পা রাখার আগ থেকেই যে শঙ্কাটি ভর করেছিল, ধীরে ধীরে সত্যি হচ্ছে সেটিই। শূণ্য হাতে ফেরার সেই কালিমা কি এবারো ঘুঁচাতে পারবে না বাংলাদেশ? নিদেন পক্ষে লড়াইটুকুও কি হবে না ঘরের মাঠে এই নিউজিল্যান্ডকেই হোয়াইটওয়াশের স্বাদ পাওয়া টাইগারদের? ওয়ানডেতে ধবলধোলাইয়ের পর প্রথম টেস্টেও পেরিয়ে গেছে দুটি দিন। প্রথম দিনে কেবল মাত্র তামিম ইকবাল ছাড়া বিষাদে ব্যাটিং বাকিদের, আর গতকাল নিজেদের নির্বিষ বোলিংয়ে নিউজিল্যান্ডের রানের পাহাড় ইঙ্গিত দিচ্ছে আরো বিভীষিকাময় আগামীর। ব্যাট হাতে বাংলাদেশ যেখানে পারেনি সেই সবুজ সাজানো বাগানে রানের ফুল ফোটানো ব্যাটিংয়ে নিউজিল্যান্ড ছুটে চলেছে চূড়ার দিকে।
প্রথম ইনিংসে করা বাংলাদেশের রান ছাড়িয়ে গেল নিউজিল্যান্ডের প্রথম জুটিই। দুই ওপেনার জিম রাভাল ও টম ল্যাথাম পেরিয়ে গেলেন ব্যাক্তিগত শতক। সেঞ্চুরির খুব কাছে কেন উইলিয়ামসনও। কিউই টপঅর্ডারের রান উৎসবে হ্যামিল্টন টেস্টের প্রথম ইনিংসে বড় লিড নিয়ে নিউজিল্যান্ড ছুটছে লিড আরও সমৃদ্ধ করার পথে। গতকাল এক দিনেই তুলেছে তারা ৩৬৫ রান। দ্বিতীয় দিন শেষে দলের রান ৪ উইকেটে ৪৫১। আগের দিন বাংলাদেশ গুটিয়ে গিয়েছিল ২৩৪ রানে। টেস্টের এখনও বাকী তিনদিন। ৬ উইকেট হাতে নিয়ে কিউইরা এগিয়ে ২১৭ রানে। দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন এবং নাইটওয়াচম্যান নিল ওয়াগনার রয়েছেন উইকেটে।
দিনের শুরু থেকেই কিউই ব্যাটসম্যানদের বড় কোন ভোগান্তিতে ফেলতে পারেননি বাংলাদেশের বোলাররা। তিন পেসারের কারো বলেই ছিল না গতি। এমনকি সঠিক লাইন ও লেংথে টানা বল করে যেতে পারেননি। পারেননি স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজও। দিনের শেষ বেলা কেবল হেনরি নিকোলসকে আউট করার বলটিতেই যেন নিজেকে খুঁজে পেলেন এ স্পিনার।
টাইগারদের মূল ভোগান্তির শুরুটা দুই ওপেনারের সেঞ্চুরিতে। অথচ এ ম্যাচের আগে ১৬ টেস্টে সাতবার পঞ্চাশোর্ধ রান করেছেন রাভাল। কিন্তু তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছানো হয়নি। কিন্তু প্রথম সেঞ্চুরির জন্য বাংলাদেশ তো বরাবরই প্রতিপক্ষের পছন্দের দল। এদিনও তাই করলেন রাভাল। ৩২তম ব্যাটসম্যান হিসেবে টাইগারদের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি তুলে নিলেন এ ওপেনার। অথচ প্রথম ফার্স্ট ক্লাস সেঞ্চুরিটা পেয়েছিলেন ঠিক ১০ বছর আগে।
এদিন ইবাদত হোসেনের করা ইনিংসের ৭০তম ওভারে টানা দুটি চার মারেন রাভাল। তাতে দুই দুইটি মাইলফলকে পৌঁছান এ কিউই ব্যাটসম্যান। ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিটি পেলেনই, টেস্ট ক্রিকেটে নিজের এক হাজার রানও পূরণ করলেন। মজার ব্যাপার এক হাজার রানে ছিল না কোন ছয়ের মার। সেঞ্চুরি করার পর মেহেদী হাসান মিরাজকে পুল করে টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম ছয়টি পান তিনি।
প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার দিনে লাথামের ওপেনিং জুটিতে ২৫৪ রান করেছেন রাভাল। অথচ ৮৯ বছরের টেস্ট ইতিহাসে নিউজিল্যান্ডের ওপেনিং জুটিতে মাত্র পাঁচবার এসেছে দুইশর বড় জুটি। বাংলাদেশের বিপক্ষে এদিনের জুটিটি তাদের তৃতীয় সেরা ওপেনিং জুটি। এমনকি সব উইকেট মিলিয়ে ১২তম সর্বোচ্চ। এর আগে ২০০১ সালে করা ম্যাট হর্ন ও মার্ক রিচার্ডসনের ১০৪ রানের জুটিটি ছিল বাংলাদেশের বিপক্ষে কিউইদের সর্বোচ্চ ওপেনিং জুটি।
শূণ্য রানেই সৌম্য সরকারের হাতে জীবন পাওয়া লাথাম এদিন আউট হয়েছেন সেই সৌম্যর হাতেই। তবে এ আউটে কৃতিত্বটা বেশি মোহাম্মদ মিঠুনেরই। স্লিপে ঝাঁপিয়ে পরে দারুণ ক্যাচ লুফে নিয়েছেন তিনি। এ অঞ্চল থেকে এমনতেই টাইগাররা মুড়িমুড়কির মতো ক্যাচ মিস করে থাকেন। তবে এর আগেই কাজের কাজটা করে গেছেন লাথাম। খেলেছেন ১৬১ রানের ইনিংস। ২৪৮ বলের এ ইনিংসে ১৭টি চার ও ৩টি ছক্কা মেরেছেন তিনি। আর ৪৭ রান করার পথে টেস্ট ক্যারিয়ারের তিন হাজার রানের মাইলফলকেও পৌঁছান এ ওপেনার। ক্যারিয়ারের নবম টেস্ট সেঞ্চুরিটি তার টানা তৃতীয়ও বটে।
এর আগে টাইগারদের প্রথম সাফল্যটা এনে দিয়েছেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদই। লাথাম ও রাভালের ব্যাটিং দেখে এক পর্যায়ে মনে হচ্ছিল এ জুটি যেন ভাঙবেই না। তবে পার্ট টাইম ওই মাহমুদউল্লাহই স্বস্তি এনে দেন। হয়তো পার্ট টাইম বোলার দেখেই নিজেকে আটকাতে পারেননি রাভাল। তার বলে চড়াও হতে গিয়ে মিড উইকেটে ধরা পড়েছেন সৈয়দ খালেদ আহমেদের হাতে। ২২০ বলে ১৩২ রানের দারুণ ইনিংস খেলেন রাভাল। ১৯টি চার ও ১টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি।
দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে দেওয়ার পর রস টেইলরকেও স্থায়ী হতে দেননি সৌম্য। তাকে এলবিডাবিøউর ফাঁদে ফেলেছেন তিনি। কিন্তু এরপর আবারও সংগ্রাম করতে থাকে টাইগাররা। সেঞ্চুরির পথে আছেন কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনও। অসাধারণ ব্যাটিং করে ৯৩ রানে অপরাজিত আছেন তিনি। ১৩২ বলের ইনিংসে ৯টি চার মেরেছেন অধিনায়ক। হাফসেঞ্চুরি তুলেন নেন হেনরি নিকোলসও। ৫৩ রান করে মিরাজের শিকার হয়েছেন তিনি। চতুর্থ উইকেটে এ দুই ব্যাটসম্যান গড়েছেন ১০০ রানের জুটি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস : ২৩৪
নিউজিল্যান্ড ১ম ইনিংস : ১১৮ ওভারে ৪৫১/৪ (আগের দিন ৮৬/০) (রাভাল ১৩২, ল্যাথাম ১৬১ উইলিয়ামসন , টেইলর ৪, নিকোলস ৫৩, ওয়েগনার; আবু জায়েদ ২৩-৪-৬৫-০, ইবাদত ২১-৪-৭৭-০, খালেদ ২২-৬-৮৪-০, সৌম্য ১৮-১-৫৭-২, মিরাজ ৩১-১-১৪৯-১, মাহমুদউল্লাহ ১-০-৩-১, মুমিনুল ১-০-১১-০)। দ্বিতীয় দিন শেষে
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।