Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

ঐতিহ্য ফিরছে ছাত্র রাজনীতিতে

ডাকসু নির্বাচন

নুর হোসেন ইমন | প্রকাশের সময় : ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

দেশের দ্বিতীয় পার্লামেন্ট খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ও হল সংসদ নির্বাচনের ডামাডোল চরম পর্যায়ে। নির্বাচনকে ঘিরে আশার সঞ্চার হয়েছে ছাত্র রাজনীতির হারানো ঐতিহ্য আবার ফিরে আসার। ইতোমধ্যেই ভিপি জিএসসহ কেন্দ্রীয় সংসদ ও হল সংসদের পদগুলোতে মনোনয়ন জমা নেয়া শেষ হয়েছে। দীর্ঘদিন পর অনুষ্ঠিত হওয়া এ নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। ক্যাম্পাসের সব জায়গায় একই আলোচনা কেমন হতে যাচ্ছে এ নির্বাচন। তবে সরকারি ছাত্র সংগঠন থেকে শুরু করে সাধারণ শিক্ষার্থীরাও এ বিষয়ে একমত জাতীয় নির্বাচনের মতো এ নির্বাচনে সহজ জয় পাওয়া কানো পক্ষেরই সম্ভব হবে না। বুকের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও শিক্ষার্থীদের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করার ঘোষনা দেয়া হয়েছে কয়েকটি সংগঠনের পক্ষ থেকে। আলাদা চারটি প্যানেলে শক্ত প্রতিদ্বন্ধীতার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া কেন্দ্রীয় ও হল সংসদের স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করা শিক্ষার্থীদের মধ্যেও আছে হেভিওয়েট প্রার্থীরা। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা চিন্তার উদ্বেগ ঘটাচ্ছে প্যানেলের প্রার্থীদের।
চলতি মাসের ১১ তারিখে ডাকসু নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা প্রফেসর ড. এস এম মাহফুজুর রহমান। তফসিলে ১১ মার্চ ডাকসু নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রার্থীদের মনোনয়ন ফর্ম সংগ্রহ, ২৬ ফেব্রুয়ারি মনোনয়ন জমা দেয়ার শেষ তারিখ, ২৭ ফেব্রুয়ারি প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ ও ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রার্থীতা প্রত্যাহারের দিন নির্ধারণ করা হয়। পাশাপাশি প্রার্থীতার ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থী ও বয়স সর্বোচ্ছ ৩০ বছর নির্ধারণ করে দেয়া হয়। ডাকসুকে সামনে রেখে ইতোমধ্যেই শিক্ষার্থীদের ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। ছাত্র রাজনীতির আঁতুর ঘর মধুর ক্যান্টিনে নিয়মিত রাজনৈতিক কার্যক্রম চালাচ্ছে সংগঠনগুলো। বড় চারটি প্যানেল থেকে মনোনয়নপত্র জমা দেয়া হয়েছে। প্যানেল দিয়েছে সাম্প্রদায়িক ছাত্র সংগঠন চরমোনাই পীরপন্থী ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সংসদসহ বিভিন্ন হল সংসদে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। প্রার্থীতা যাচাই বাচাই শেষে প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করবে প্রশাসন।
ছাত্রলীগ
ডাকসু নির্বাচনে অংশ নিতে কেন্দ্রে ও হল সংসদে পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে। সংগঠনটির পূর্ণাঙ্গ কমিটি না থাকায় কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির শীর্ষ ৪ নেতাকে করা হয় ডাকসুর প্রার্থী। তবে যোগ্যদের মূল্যায়ন করা হয়নি অভিযোগ এনে সোমবার সংগঠনটির একাংশের নেতারা আলাদাভাবে আরেকটি প্যানেল ঘোষনা করে। পরবর্তীতে আওয়ামীলীগ নেতাদের হস্তক্ষেপে সোমবার রাতেই প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেন বিদ্রোহী নেতারা। সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সোহান খানকে ভিপি (সহ-সভাপতি) ও আমিনুল ইসলামকে জিএস (সাধারণ সম্পাদক) করে ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধেও চেতনায় বিশ্বাসী অসাম্প্রদায়িক সাধারণ শিক্ষার্থীদের পরিষদ’ নামে প্যানেলটি আত্মপ্রকাশ করেছিলো। রাতে সমঝোতার পর মঙ্গলবার ডাকসুর সামনে একসাথে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও বিদ্রোহী প্যানেলের নেতারা। নিজেদের প্রার্থীতা প্রত্যাহারের বিষয়ে আমিনুল ইসলাম বলেন, আমরা শেখ হাসিনার রাজনীতি করি। আমাদের মধ্যে কোন বিভাজন নাই। কাঙ্খিত মূল্যায়ন না পাওয়ায় আমাদের মধ্যে একটু অভিমানের সৃষ্টি হয়েছিলো। কিন্তু আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর পার্টিতে কাজ করলে আমাদের যথাযথ মূল্যায়ন করার আশ্বাস দিয়েছেন তারা। তাই আমরা ডাকসু নির্বাচনে সবাই একসঙ্গে কাজ করতে চাই।
ছাত্রলীগের প্যানেলে সহ-সভাপতি (ভিপি) রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) গোলাম রাব্বানী, সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) সাদ্দাম হোসেন, মুক্তিযুদ্ধ সম্পাদক সাদ বিন কাদের, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আরিফ ইবনে আলী, কমনরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক বিএম লিপি আক্তার, আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাহরিমা তানজিনা অর্নি, সাহিত্য সম্পাদক মাজহারুল কবির শয়ন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক শামস ই নোমান, ক্রীড়া সম্পাদক শাকিল আহমেদ তানভীর, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক রাকিব হাওলাদার, সমাজসেবা সম্পাদক আজিজুল হক সরকার। আর সদস্য পদে রয়েছেন চিবল সাংমা, নজরুল ইসলাম, রাকিবুল হাসান, রাকিবুল ইসলাম ঐতিহ্য, তানভীর হাসান সৈকত, রাইসা নাসের, সাবরিনা ইতি, ইশাত কাশফিয়া ইরা, নিপু ইসলাম তন্বী, হাইদার মোহাম্মদ জিতু, তিলোত্তমা শিকদার, জুলফিকার আলম রাসেল ও মাহমুদুল হাসান। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন বলেন, ডাকসুতে পদ সংখ্যা অল্প। সবাইকে পদ দেয়া সম্ভব না হওয়ায় কিছুটা মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়েছিলো। এখন সবকিছু ঠিক হয়ে গেছে। ডাকসুতে ছাত্রলীগের প্যানেলকে নির্বাচিত করতে সংগঠনের নেতাকর্মীরা একসাথে কাজ করবে।
ছাত্রদল
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার শীর্ষ ৪ নেতার কারো ছাত্রত্ব না থাকায় তারা কেউ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারছেন না। ফলে সংগঠনটির তুলনামূলক অপরিচিত নেতাদের নির্বাচনে প্রার্থী করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিব আহসান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ১৯৯৫-৯৬ শিক্ষাবর্ষ, সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ১৯৯৭-৯৮শিক্ষাবর্ষ। ঢাবি শাখার সভাপতি আল মেহেদী তালুকদার অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ২০০২-০৩ শিক্ষাবর্ষ, সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন সংস্কৃত ও পালি বিভাগের ২০০৩-০৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। ছাত্রদলের পক্ষ থেকে নির্বাচনে বয়সের সীমা তুলে দেয়ার দাবি জানানো হয়। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোন আশ্বাস না পাওয়ায় সংগঠনটির পক্ষ থেকে হল পর্যায়ের নেতাদের নিয়ে ডাকসু প্যানেল ঘোষণা করা হয়। ছাত্রদলের প্যানেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হল শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমানকে সহ-সভাপতি (ভিপি), শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক আনিসুর রহমান খন্দকার অনিককে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক খোরশেদ আলম সোহেলকে সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) প্রার্থী করা হয়। এরআগে ডাকসু নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী প্রার্থীদের কাছ থেকে নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ২৩ ও ২৪ ফেব্রুয়ারি দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করে সংগঠনটি। ২৫ ফেব্রুয়ারি প্যানেল চূড়ান্ত করে মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তা জানানো হয়। ডাকসুর ২৫টি পদে পার্থী নির্ধারণ করা হলেও হলগুলোতে পূণাঙ্গ প্যানেল দিতে পারেনি ছাত্রদল। বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ১৮ হলের মধ্যে ১২টি হলে মোট ১৩পদে মূল পদগুলোতে প্রার্থী দিলেও ৭ থেকে ৮টি করে পদে কোন প্রার্থী দিতে পারেনি তারা। এছাড়া মেয়েদের ৫টি হল ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জগন্নাথ হলে কোন প্রার্থীই দিতে পারেনি সংগঠনটি। তবে প্রার্থী দিতে না পারাকে সংগঠনটির পক্ষ থেকে প্রশাসনে তাড়াহুড়া করে ডাকসুর তফসিল ঘোষণাকে দায়ী করা হয়। ছাত্রদল ঘোষিত প্যানেলে ডাকসুর স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক পদে জাফরুল হাসান নাদিম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে মাকসুদুর রহমান, কমনরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে কানেতা ইয়ালাম, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক পদে আশরাফুল আলম উজ্জ্বল, সাহিত্য সম্পাদক পদে মিনহাজ আহমেদ প্রিন্স, সংস্কৃতি সম্পাদক পদে কাইয়ুম উল ইসলাম, ক্রীড়া সম্পাদক পদে মনিরুজ্জামান মামুন, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক পদে মাহফুজুরর রহমান চৌধুরী ও সমাজসেবা সম্পাদক পদে তৈৗহিদুল ইসলাম, সদস্যপদে হাবিবুল বাশার, আরিফ হোসেন, ইকবাল হোসাইন, সাহাব উদ্দিন, মাহমুদুল হাসান, সাফায়াত হাসনাইন সাবিত, তানভীর আজাদী সাকিব, সুলতান মো: সালাউদ্দিন সিদ্দিক, মো: শরীফুল ইসলাম, ইমাম আল নাসের মিশুক ও আলমগীর হোসেনের নাম ঘোষণা করা হয়। ঢাবি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আল মেহেদী তালুকদার বলেন, হলের বাইরে ভোটকেন্দ্র করা, পরিবেশ তৈরির জন্য নির্বাচন তিন মাস পেছানোসহ সাত দফা দাবি জানালেও প্রশাসন আমাদের দাবির ব্যাপারে কর্ণপাত করেনি। আমরা ডাকসু নির্বাচনের ব্যাপারে ইতিবাচক এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত থাকায় স্বল্প সময়ের মধ্যে আমাদের প্যানেল ঘোষণা করতে হয়েছে। তবে নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করতে সাত দফা দাবিতে ছাত্রদল অনড় আছে বলে জানান তিনি।
বাম জোট
এদিকে নির্বাচন ঘিরে যৌথ প্যানেল ঘোষণা করেছে বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর জোট। প্রগতিশীল ছাত্রজোট ও সা¤্রাজ্যবাদ বিরোধী ছাত্রঐক্যের পক্ষ থেকে ডাকসুতে ২৫ সদস্যের জোট ঘোষণা করা হয় সংগঠনটির পক্ষ থেকে। বাম জোটে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ছাত্র ফেডারেশনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি উম্মে হাবিবা বেনজীর ও সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সভাপতি সাদেকুল ইসলাম সাদিক, স্বাধীনতাসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক পদে রাজিব কান্তি রায়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক পদে উলুল আমর তালুকদার, কমনরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে সুহাইল আহমেদ শুভ, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক পদে মীম আরাফাত মানব, সাহিত্য সম্পাদক পদে রাজিব দাস, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক পদে ফাহাদ হাসান আদনান, ক্রীড়া সম্পাদক পদে শুভ্রনীল রায়, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক পদে হাসিব মোহাম্মদ আশিক এবং সমাজসেবা সম্পাদক পদে ফয়সাল মাহমুদ, সদস্যপদে মঈনুল ইসলাম তুহিন, আমিনুল ইসলাম, আমজাদ হোসেন, আফনান আক্তার, মিত্রময়, সালমান ফারসি, রাহাতিল রাহাত, আরমানুল হক, জেসান অর্ক মারান্ডী, মনীষা আখতার, মাহির ফারহান খান পান্থ, উদয় নাফিস ও প্রত্মপ্রতীম মেহেদী। বাম জোট থেকে ভিপি প্রার্থী লিটন নন্দী বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন পক্ষের শিক্ষার্থীদের জোটে অর্ভূক্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে। ডাকসু নির্বাচনকে ঘিরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি আশার সঞ্চার হয়েছে। তাই আমরাও এ নির্বাচন নিয়ে আশাবাদি হতে চাই। তবে কোন পক্ষ থেকে যদি ভোটকে বাধাপ্রাপ্ত করার চেষ্টা হয় ১১ মার্চ আমরা ছেড়ে দেব না। আমরা শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও ছাত্রদের ভোটের অধিকার রক্ষা করার চেষ্টা করে যাব।
কোট আন্দোলন
কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের প্লাাটফর্ম বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ডাকসু ও হল সংসদে অংশ নিতে স্বতন্ত্র প্যানেল দিয়েছে। মোট ২৫ সদস্যেও প্যানেলে সংগঠনটির পক্ষ থেকে ১৩জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়। তাদের প্যানেলে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে সংগঠনটির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নুর, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে রাশেদ খান, সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ফারুক হাসানকে প্রার্থী করা হয়েছে। এছাড়া স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক নাজমুল হুদা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক সোহরাব হোসেন, কমনরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে শেখ এমিলি জামাল, আন্তর্জাতিক সম্পাদক হাবীবুল্লাহ বেলালী, সাহিত্য সম্পাদক আকরাম হোসেন, সংস্কৃতি সম্পাদক নাহিদ ইসলাম, ক্রীড়া সম্পাদক মামুনুর রশীদ, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক রাজিবুল ইসলাম এবং সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন প্রতিদ্বন্ধিতা করবেন। এছাড়া সদস্য পদে রয়েছেন- উম্মে কুলসুম বন্যা, রাইয়ান আবদুল্লাহ, সাব আল মাসানী, ইমরান হোসেন ও শাহরিয়ার আলম সৌম্য। প্যানেল দেয়া প্রসঙ্গে নুরুল হক নুর বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দাবি দাওয়া নিয়ে আমরা সোচ্ছার ছিলাম। তাই তারাই আমাদেরকে ডাকসু নির্বাচনে অংশ নিতে আহ্বান জানায়। বিভিন্ন হলে আমাদের সংগঠন থেকে স¦তন্ত্রভাবে সদস্যরা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। আমরা কৌশলগতভাবে তাদের নাম প্রকাশ করছি না।
ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, বামপন্থী জোট ও কোটা আন্দোলনকারীদের থেকে ৪টি বড় সংগনের বাইরেও জাসদ ছাত্রলীগ (আম্বিয়া), ছাত্র মৈত্রী, স্বতন্ত্র জোট, ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনসহ মোট ৮টি প্যানেল রয়েছে। তবে কোন প্যানেলে অন্তর্ভূক্ত হয়নি এ ধরণের হেভিওয়েট প্রার্থীরা নির্বাচনে জয় পরাজয় নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন বলে মনে করা হচ্ছে। এদের মধ্যে কেন্দ্রীয় সংসদে ভিপি পদে আলীম হায়দার ও জিএস পদে এ. আর. এম আসিফুর রহমান আলোচনায় আছেন। ভিপি পদে মনোনয়ন জমা দেয়া আলীম হায়দায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে জড়িত। কবি ও লেখব হিসেবেও পরিচিতি রয়েছে তার। অপরদিকে আসিফুর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিকেন্দ্রীক বিভিন্ন সংগঠনের সাথে দীর্ঘদিন ধরেই সক্রিয়ভাবে জড়িত। বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডেও তার সরব উপস্থিতি রয়েছে। এর বাইরে আছে নিপীড়ন বিরোধী শিক্ষার্থীদের ব্যানারে বিভিন্ন সময় ক্যাম্পাসে আন্দোলন সংগ্রামে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা। কোন প্যানেলে অন্তর্ভূক্ত না হলেও এসব শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন হল ও কেন্দ্রীয় সংসদের ভিপি জিএসসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে প্রার্থী হয়েছেন। স্বতন্ত্রভাবে জিএস পদে অংশ নিতে যাওয়া আসিফুর রহমান বলেন, আমি জিএস পদে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করার অংশ নিয়েছি। ডাকসুতে নির্বাচিত হয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে থাকতে চাই। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠন নিয়ে একটি বৃহৎ প্যানেল করা যায় কি না সে বিষয়েও চিন্তাভাবনা আছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ডাকসু

৩ নভেম্বর, ২০২১
১৪ মার্চ, ২০২০
২৯ ডিসেম্বর, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ