পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ক্রুদের জিম্মি করে বাংলাদেশ বিমানের ময়ুরপঙ্খী উড়োজাহাজ ছিনতাই প্রচেষ্টায় জড়িত যুবকের নাম পরিচয় জানা গেলেও তার উদ্দেশ্য জানা যায়নি। কী কারণে ওই যুবক বিমানটি ছিনতাই করতে চেয়েছিলেন তা এখনও অজানা। প্রধানমন্ত্রীকে তিনি কী বলতে চেয়েছিলেন তাও স্পষ্ট নয়। তবে দ্রুততম সময়ে ছিনতাই প্রচেষ্টা ভন্ডুল ও জিম্মি দশার অবসানে সর্বত্রই স্বস্তি নেমে আসে। বিশেষ করে শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী এবং র্যাব-পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সম্মিলিত প্রচেষ্টা আর সে সাথে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা সমন্বয় ও দক্ষতা বহির্বিশ্বেও প্রশংসিত হচ্ছে।
খুব দ্রুত সময়ে সমন্বিত অভিযানের মধ্যদিয়ে সফল অভিযান পরিচালনা হয় শাহ আমানত বিমানবন্দরে। বিমানবন্দরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, বিমানে অস্ত্রধারীর উপস্থিতি এবং ক্রুদের জিম্মি করে ছিনতাইয়ের হুমকি দেয়ার সাথে সাথে পাইলট শাহ আমানত বিমানবন্দরে কন্ট্রোল টাওয়ারে বার্তা পাঠান। ৫টা ৩৩ মিনিটে প্রথম বার্তা পাওয়ার সাথে সাথে যাবতীয় প্রস্তুতি শুরু হয়। ৫টা ৪০ মিনিটে বিমানটি শাহ আমানতে অবতরণ করে। সাথে সাথে বিমান বাহিনীসহ নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা পুরো বিমানটি ঘেরাও করে রাখে। নিরাপদে নামিয়ে আনা হয় ক্রুসহ ১৪৮ যাত্রীকে।
৬টায় সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো বিমানবন্দরে যায় এবং অভিযানের প্রস্তুতি শুরু করে। সব সংস্থার সমন্বিত এবং সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনায় মাত্র ৮ মিনিটের কমান্ডো অভিযানে জিম্মি দশার অবসান হয়। সফল অভিযানের পর সংবাদ ব্রিফিংয়ে ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও চট্টগ্রাম এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল এস এম মতিউর রহমান জানান, সব বাহিনীর সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা গেছে। একটি কমান্ডো অভিযান পরিচালনার জন্য যা যা প্রস্তুতি দরকার তা খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে নিখুঁতভাবে সম্পন্ন হয়েছে। রোববার ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে দুবাইমুখী বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট ছিনতাইয়ের প্রচেষ্টায় জড়িত যুবকের নাম মো. পলাশ আহমদ। পলাশ ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ রুটের যাত্রী ছিলেন। বিমানটি ঢাকার শাহজালাল থেকে চট্টগ্রামের পথে ১৫ হাজার ফুট উপরে উঠতেই পলাশ অস্ত্রহাতে বিমানটি ছিনতাই করার ঘোষণা দিয়ে সবাইকে হুমকি দেন। পরে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কমান্ডো অভিযানে তার মৃত্যু হয়।
তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ উপজেলার পিরিজপুর ইউনিয়নের দুধঘাটা গ্রামের পিয়ার জাহান সরদারের পুত্র। জিম্মি দশার অবসানে সেনা কমান্ডো অভিযানে নিহত পলাশের ছবি দেখে তাকে শনাক্ত করেন পিয়ার জাহান। তার লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। পতেঙ্গা থানার ওসি উৎপল বড়–য়া জানান, লাশ নিতে পরিবারের কেউ তাদের সাথে যোগাযোগ করেনি। এ ঘটনায় সিভিল এভিয়েশনের পক্ষ থেকে একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি। পলাশের কাছ থেকে পাওয়া পিস্তলটি তখনও পর্যন্ত থানায় জমা দেয়া হয়নি জানিয়ে ওসি বলেন, এ কারণে ওই অস্ত্রটি আসল না নকল তা আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি।
র্যাবের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে নিহত পলাশকে তালিকাভুক্ত অপরাধী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় এর আগে র্যাবের হাতে ধরাও পড়ে পলাশ। নাম পলাশ মাহমুদ হলেও মাহি বি জামান নামে ফেসবুক আইডি রয়েছে তার। তাতে চিত্রনায়িকা সিমলাকে বিয়ে করার তথ্য দিয়েছেন তিনি। সিমলার সাথে তার ঘনিষ্ঠ কিছু ছবিও সেখানে রয়েছে। দেশ-বিদেশে ভ্রমণের বেশকিছু ছবি রয়েছে তার ফেসবুক পেইজে। একটি ছবিতে তার হাতে অস্ত্র দেখা যায়। দুবাই যাওয়ার কথা বলে গত শুক্রবার বাড়ি থেকে বের হন পলাশ। তবে বিমানের টিকিটে তিনি ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম আসছিলেন বলে নিশ্চিত হন বিমানের কর্মকর্তারা।
এদিকে ছিনতাই প্রচেষ্টার কারণে রোববার বাতিল হওয়া বাংলাদেশ বিমানের ঢাকা-চট্টগ্রাম-দুবাই ফ্লাইটে যাত্রীদের গতকাল বেলা দেড়টায় বিমানের অন্য একটি ফ্লাইটে দুবাই পাঠানো হয়েছে। বিমানবন্দরের ম্যানেজার উইং কমান্ডার সারওয়ার-ই-জামান জানান, বিকল্প ফ্লাইটে তাদের গন্তব্যে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। ছিনতাই প্রচেষ্টা ঘটনার পর বিমানবন্দরের সার্বিক নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। সেনা কমান্ডো অভিযানে জিম্মি দশার অবসান হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মাথায় রোববার রাত ১০টার পর বিমানবন্দরে স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।