রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
কুষ্টিয়ায় ব্যাঙের ছাতার মতো দেড় শতাধিক অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়গনিস্টিক সেন্টার গড়ে উঠেছে। অদক্ষ ও অযোগ্য চিকিৎসক দিয়ে চালানো হচ্ছে এসব ক্লিনিক। উন্নত চিকিৎসার নামে রুগীদের প্রতারণা করা হচ্ছে এসব ক্লিনিকে। ডাক্তারদের যোগসাজশে ক্লিনিকগুলো ডাক্তারকে মোটা অংকের কমিশন দেয়। যার কারণে ডাক্তাররাও সুযোগ বুঝে রোগীদের অপ্রয়োজনীয় টেস্ট দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছেন হাজার হাজার টাকা। ডায়গনিস্টিক সেন্টারগুলোতে হাইকোর্টের নির্দেশনা মোতাবেক মূল্য তালিকা টাঙানোর নির্দেশ দিলেও তা কেউ টাঙ্গায়নি। ফলে রোগীদের জিম্মি করে যে যার মতো বিল করে হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগীরা।
জানা যায়, কুষ্টিয়া জেলার ৬ উপজেলায় দেড় শতাধিক অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়গনিস্টিক সেন্টার গড়ে উঠেছে। উক্ত ক্লিনিক ও ডায়গনিস্টিক সেন্টারের মধ্যে ২৮ টির সরকারি অনুমোদন রয়েছে। বাকি ক্লিনিক ও সেন্টারের কোন সরকারি অনুমোদন নেই। সরকারি অনুমোদন ছাড়াই ডায়গনিস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিকের মালিকরা দাপটে ব্যবসা করে যাচ্ছে। এসব ক্লিনিকে অদক্ষ ও অযোগ্য ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসা করানো হচ্ছে। প্রশাসনের নাগের ডগায় এ সকল ক্লিনিক ও ডায়গনিস্টিক সেন্টারগুলোতে নির্বিঘে্ন অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এসব ক্লিনিকে নিজস্ব কোন ডাক্তার নেই, ভাড়াটে ডাক্তার দিয়ে ক্লিনিক ও ডায়গনিস্টিক সেন্টারগুলোতে রুগী দেখা হচ্ছে। অদক্ষ ও অযোগ্য ডাক্তার দিয়ে অপারেশন করা হয়। অপারেশন করে হাতিয়ে নেয়া হয় মোটা অংকের টাকা। ওই সব ক্লিনিক ও ডায়গনিস্টিক সেন্টারে রুগীদের চিকিৎসা করে ভালো করার চাইতে ক্ষতিই হয় বেশি। এখানে রুগী দেখে একদিকে যেমন হাতিয়ে নেয়া হয় হাজার হাজার টাকা, অপরদিকে অদক্ষ ডাক্তারের ভুল চিকিৎসার কারণে রুগীদের জীবন হুমকির মুখে ঠেলে দেয়া হয়। ডাক্তার ও নার্সদের অপচিকিৎসার ফলে অনেক রুগী মারা যায়।
তথ্য সুত্রে জানা গেছে, ওই ক্লিনিক ও ডায়গনিস্টিক সেন্টারে কোন অভিজ্ঞ নার্স নেই। যারা রয়েছে তারা একেবারেই অল্প শিক্ষিত ও অদক্ষ। এমনকি ক্লিনিকের পরিবেশ পর্যন্ত ভালো নয়। নোংরা ও দূগন্ধময় অস্বাস্থ্যকর। ডায়গনিস্টিক সেন্টারগুলোতে যোগ্য ও দক্ষ লোক না থাকায় এসব সেন্টারে বেশির ভাগ সময়ই ভুল রিপোর্ট দেয়া হয়। সঠিক রিপোর্ট না পেয়ে প্রতারণার শিকার হয় রুগীরা। সঠিক রিপোর্ট এর জন্য বার বার পরীক্ষা করে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়। দালালচক্র ভালো ও উন্নত চিকিৎসার কথা বলে এসব ডায়গনিস্টিক সেন্টারে নিয়ে এসে অনুন্নত চিকিৎসা ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করছে।
কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, কাগজে কলমে পদ্মা কমিউনিটি হাসপাতাল থাকলেও পদ্মা ডায়গনস্টিক অ্যান্ড প্রাইভেট হাসপাতাল নামে সাইনবোর্ড টানানো রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ডায়গনস্টিক সেন্টারের রমরমা ব্যবসা চালিয়ে আসলেও লাইসেন্স নেই বলে জানান।
শহরের পদ্মা কমিউনিটি হাসপাতাল, ইসলামীয়া হাসপাতাল, কুষ্টিয়া নার্সিং হোম, হরিণারায়ণপুরের সেবা প্রাইভেট হাসপাতাল, নিউসেবা প্রাইভেট হাসপাতাল, ঝাউদিয়া ক্লিনিক, পোড়াদহের নাহার ক্লিনিক, দৌলতপুর উপজেলার দৌলতপুর ক্লিনিক, আলহাজ ক্লিনিক, মডার্ণ ক্লিনিক, সুপার সনো, কোহিনুর নার্সিং হোম, তারাগুনিয়া ক্লিনিক, জননী নার্সিং হোমসমূহ লাইসেন্স নবায়ন করেনি।
কুমারখালী উপজেলার কুলসীবাসা এলাকার ফাতেমা ক্লিনিক, দৌলতপুরের হোসেনাবাদ ক্লিনিক, আরোগ্য সদন, আল্লারদান ক্লিনিক, মায়ের দোয়া ক্লিনিক, সিটি প্রাইভেট হাসপাতাল দীর্ঘদিন ধরে চললেও সিভিল সার্জন অফিসের তালিকায় নাম নেই।
এছাড়াও একই ডাক্তার শহরের বিভিন্ন ক্লিনিকে সাইনবোর্ড দেয়া রয়েছে যারা সেসব ক্লিনিক বা হাসপাতালে বসেন না। এছাড়াও একই চিকিৎসকের নাম বিভিন্ন ক্লিনিকে সাইনবোর্ডে টানানো থাকে। ফলে রোগীরা ঠিকভাবে বুঝতে পারে না কোনো চিকিৎসক কোথায় বসেন।
সরকারি নীতিমালায় একটি ১০ শয্যার ক্লিনিক পরিচালনায় ৩ জন এমবিবিএস ডাক্তার, ৬ জন ডিপ্লোমা নার্স, ৬ জন আয়া এবং ৩ জন সুইপার নিয়োগের বিধান রয়েছে। কিন্তু ক্লিনিক পরিচালনায় সরকারি নীতিমালা অনেক মালিক বিভিন্ন অজুহাতে মানতে চান না। এসব ভুয়া ক্লিনিক ও ডায়গনস্টিকের সেন্টারের বিরুদ্ধে অতিসত্ত¡র সঠিক ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।
অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়গনিস্টিক সেন্টারের ব্যাপারে কোন আইনগত ব্যবস্থা না নেওয়ায় দিন দিন গড়ে ওঠছে এসব ক্লিনিক ও সেন্টার। ফলে এসব ক্লিনিক ও ডায়গনিস্টিক সেন্টারের কারণে সরকার যেমন একদিকে প্রতিবছর লাখ লাখ টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, অপরদিকে সাধারণ মানুষ ও রোগীরা প্রতারিত হচ্ছেন। এ ব্যাপারের কর্তৃপক্ষের যথাযথ দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে ভুক্ত ভোগীরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।