বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সিলেটে এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এমপি বলেছেন, অপরিকল্পিত আবাসনের কারণে আমাদের জীবনঝুঁকি দিন দিন বাড়ছে। পুরান ঢাকার চকবাজারবাসী আগে থেকে এ বিষয়ে সচেতন হলে এতো বড় ক্ষতি থেকে হয়তো বাঁচা যেতো। তাই, ভবিষ্যত নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সবাইকে সচেতন হতে হবে।
শুক্রবার রাতে হাউজিং এস্টেট এসোসিয়েশনের সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী চকবাজারে নিহতদের প্রতি শোক ও মাগফিরাত কামনা করে বলেন, এই ৬৭জন বড় কষ্টের মধ্যে তাদের জীবন দিয়েছেন। যারা জীবিত তারা যেনো দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠেন। সেই সাথে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, সম্প্রতিকালে অনেকগুলো আবাসিক এলাকায় ফ্যাক্টরি, কলকারখানা গড়ে উঠে যাদের কাগজপত্র ঠিকমত পাওয়া যায় না। তাছাড়া আমাদের দেশের মানুষের একটা অভ্যাস হচ্ছে, আমরা নিজেকে নিয়ে খুব ব্যস্ত থাকি। অন্যের কথা কখনো চিন্তা করি না। সরকারি রাস্তা ইচ্ছেমত দখল করে যাই।
ঢাকা চকবাজারেরর ঘটনার কথা উল্লেখ করে বলেন, চকবাজারে যে ঘটনা ঘটলো সেখানে একটি ফায়ার ব্রিগেডও ঢোকার কোন রাস্তা ছিল না। এতো সরু রাস্তা। এখানকার অধিবাসীরা আগে থেকে চিন্তা করে যদি ফায়ার ব্রিগেড পৌঁছার মতো রাস্তা করে রাখতেন তাহলে হয়তো এরকম বড় ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া যেতো। সবার জন্য উপকার হতো।
ড. মোমেন আশংকার কথা উল্লেখ করে বলেন, যেভাবে রাস্তা ছোট হচ্ছে, সরকারি জায়গা দখল হচ্ছে তাতে নিজের ভয় হয়। আগামীতে এ রকম আগুন লাগলে একমাত্র হেলিকপ্টার ছাড়া আর আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন উপায় আছে কি না জানা নেই।
তিনি বলেন, পুকুর ও নালা দখল প্রসঙ্গে বলেন, আমাদের আশেপাশে যতগুলো নালা ও পুকুর ছিল সেগুলো মোটামুটি আমরা দখল ও ভরাট করে নিয়েছি। তার ফলে এধরণের দুর্ঘটনা ঘটলে পানির সংকটে ক্ষয়ক্ষতি আরো বাড়িয়ে দিবে বলে মনে হয়। এ জন্য যেগুলো পুকুর এখনও আছে সেগুলোকে রক্ষার ব্যবস্থা নিতে হবে। যাতে দুঃসময়ে আমাদেরই কাজে লাগে। এসময় সকল নাগরিকের সচেতন হওয়া ও সবার যৌথ উদ্যোগে দেশকে এগিয়ে নেওয়া এবং বিপদমুক্ত রাখার আহবান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
সিলেটবাসীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, রাস্তা দখল ও সরকারি জমি দখল করে অনেকে মানুষের বিপদ ডেকে আনে। আমরা চাই, সকলে সচেতন হবেন এবং রাস্তা ও জমি দখলের অন্যায় ও ক্ষতিকর কাজ থেকে বিরত থাকবেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নে অত্যন্ত আন্তরিক। এজন্য পাঁচজন মন্ত্রী ও একজন উপদেষ্ঠা সিলেটবাসীকে দিয়েছেন। আমরা সম্মিলিতভাবে যেকোন বড় পরিকল্পনা নিয়ে তাঁর (প্রধানমন্ত্রী) কাছে গেলে তিনি আমাদের সহযোগিতা করবেন।
প্রবাসীদের বাসাবাড়ি দখল হয়ে যায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসব সমস্যা সমাধান হওয়া প্রয়োজন। প্রবাসী কল্যাণ সেল গঠন করে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো প্রবাসীদের সেবা দিচ্ছে। প্রবাসীদের বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অর্থনীতিতে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করছি। এজন্য টাস্কফোর্সও গঠন করা হয়েছে।
২০৩০ সালে এসডিজি এবং ২০৪১ সালে উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় সরকারের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এর মাধ্যমে আমরা চাই দেশে সকল নাগরিক সমান সুবিধা ভোগ করবে। মানুষের মধ্যে বৈষম্য থাকবে না। সেই লক্ষ্য পূরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকনির্দেশনায় তিনি নিজের মন্ত্রণালয়ে নীতি ‘ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট’ প্রণয়ন করছেন।
দেশে বিদেশে সম্পৃক্ততা বাড়ানোর মাধ্যমে এসব নিজেদের লক্ষ্য বাস্তবায়ন সরকারের লক্ষ্য বলে তিনি জানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সিলেট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট লুৎফুর রহমান।
বক্তব্য রাখেন হাউজিং এস্টেট এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি এমএ করিম চৌধুরী, প্রফেসর ডা. এমএ হাফিজ, মতিউস সামাদ চৌধুরী।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসব উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক সিলেট সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর রেজাউল হাসান কয়েস লোদী।
ধন্যবাদ বক্তব্য রাখেন ডা. আজিজুর রহমান। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন উদযাপন কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব, বাপা সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।