পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নদীমাতৃক বাংলাদেশের এমন কোন জনপদ নেই যেখানে নদীর অস্তিত্ব ছিল না। আবহমানকাল ধরেই নদী বাংলাদেশের জনজীবনের আনন্দ-বেদনা সুখ দুঃখের সাথে ওতপ্রোতভাবে জাড়িয়ে ছিল। কিন্তু এখনকার চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। প্রতিনিয়ত পাল্টে যাচ্ছে সব। বিগত ষাট বছরে বাংলাদেশের ভূ-প্রকৃতি থেকে বিদায় নিয়েছে অনেক নদনদী।
উজানের দেশ ভারতের পানি আগ্রাসন নীতির কারণে বাংলাদেশের নদ-নদীগুলোর মরণদশা শুরু হয়। এর সাথে যোগ হয়েছে আমাদের দেশের পরিকল্পনাহীন নদীশাসন, বাঁধ, ব্রীজ নির্মাণ। মরার উপর খাঁড়ার ঘা নদীখেকোদের দখল আর দূষণ। ফলে এককালের খরস্রোতা নদী রূপ নিয়েছে শীর্ণ খালে। এমন কোনো নদী নেই যেখানে চলছে না দখল। নদীর তীর, শহররক্ষা বাঁধ এমনকি নদীর বুকে জেগে ওঠা চরেও জমিদারদের দাপট। যারা যখন ক্ষমতায় এসেছে তারাই দখলের রাজত্ব কায়েম করে শত কোটি টাকার বাণিজ্য করেছে। অন্যদিকে আমাদের জীবনে নেমে আসছে অজানা এক বীভৎস ভবিষ্যত।
বাংলাদেশের উত্তর দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের লাইফলাইন খ্যাত এক সময়ের প্রমত্ত পদ্মা আজ মৃত। ভারতের পানি জল্লাদরা ফারাক্কা ব্যারেজ দিয়ে এর দফারফা করে ছেড়েছে। পদ্মা মরে যাবার সাথে সাথে শাখা নদীগুলোও এখন অস্তিত্ব সঙ্কটে। দখলে রাজশাহীর নয়টি নদী নারদ, বারাহী, স্বরমংলা, দয়া, হোজা, মির্জা মাহমুদ, মুসাখান, সন্ধ্যা, হ্যালেঞ্জা নামের নদীগুলো আর নেই।
সোমবার রাজশাহীর গোদাগাড়ী হতে সারদা ক্যাডেট কলেজ পর্যন্ত নৌকা নিয়ে উত্তর তীর ঘেঁষে ঘুরে দেখা যায় পুরো তীর দখল হয়ে গেছে। গড়ে উঠেছে ঘরবাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনা। শতশত বস্তিতে হাজার হাজার পাকা আধাপাকা ও দোতলা ঘরবাড়ি। বস্তি থেকে বিনোদন কেন্দ্র সব গড়ে উঠেছে। শতকোটি টাকা ব্যয়ে নদীর পাড় রক্ষার জন্য বসানো ম্যাট্রেসিংয়ের ওপর ঘরবাড়ি।
শ্রীরামপুর থেকে শ্যামপুর পর্যন্ত শহররক্ষা বাঁধ সরেজমিন প্রত্যক্ষ করে দেখা যায়, বাঁধ দখল করে গড়ে উঠছে বিভিন্ন স্থাপনা। বিশেষ করে আলুপট্টি এলাকায় দৈনিক বার্তা অফিসের পেছনে বাঁধ সংলগ্ন পুকুর দখল করে ঘরবাড়ি উঠে গেছে। অস্তিত্ব নেই পুকুরটির। শাহ মখদুম কলেজ হতে তালাইমারী পর্যন্ত দখলবাজী আর বিক্রি চলছে সমানে। বাঁধের নীচে আগে পানি নিষ্কাশনের ত্রিশ/চল্লিশ ফুট চওড়া ড্রেন ছিল। সিটি কর্তৃপক্ষ এ কাঁচা ড্রেনের মধ্যে তিন ফুটের একটা পাকা ড্রেন করার পর ড্রেনের দু’ধারে ভরাট করে দখল হয়ে ঘরবাড়ি দোকান উঠেছে এবং এখনও উঠছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষস্থানীয় এবং স্থানীয় নেতাদের ছবি সম্বলিত সাইনবোর্ড দিয়ে দখল করা হয়েছে।
সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অবৈধ দখলের কারণে কোনো কিছু ঠিক রাখা যাচ্ছে না। সিটি কর্পোরেশন যে উদ্যোগ নিয়েছে তা সফল করার ক্ষেত্রে এসব অবৈধ দখলদাররা বাধা হয়ে দাঁড়াবে। ইতোমধ্যেই সিটি কর্পোরেশন নদী তীরে কিছু বিনোদন স্পট করলেও সেগুলো দখলদারদের কারণে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
তবে, বিপদের কথা হলো, পদ্মার চর থেকে শহরের তলদেশ চার পাঁচ ফুট নীচে। সারা বছর পদ্মায় পানি না থাকলেও ফারাক্কার ওপারের বন্যা সামলাতে সবকটি গেট খুলে দেয়। তখন মরা পদ্মাও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। বরং আগের চেয়ে এখন ঝুঁকি বেশি। যে বাঁধ নিয়ে এত কথা সেই বাধের মালিক পানি উন্নয়ন বোর্ডকে সবাই দুষছেন এ বেহাল দশার জন্য। বিশেষ সমঝোতা ছাড়া এমন দখলবাজী সম্ভব নয়। বরাবর পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙা রেকর্ডের মত দায়সারাভাবে বলেন, আমরা অবৈধ তালিকা করেছি। ২০০৭ সালে যৌথ বাহিনী বাঁধের উপর বেশকিছু অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছিল। পরবর্তীতে পানি উন্নয়ন বোর্ড তা ধরে রাখতে পারেনি। এই না পারাকে সর্ষের মধ্যে ভূত আছে বলে অনেকে মন্তব্য করেন।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড রাজশাহী অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে কথা বলার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডে গিয়ে জানা গেল, তিনি বদলি হয়ে গেছেন। সে পদে এখনো কেউ আসেননি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অন্য একজন কর্মকর্তা বলেন, এসব উচ্ছেদ করতে গেলে রাজনৈতিক সদিচ্ছা দরকার। উচ্ছেদ করতে গেলেই ভোটের রাজনীতি বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এবার উচ্ছেদের ব্যাপারে সরকার খুব হার্ডলাইনে থাকলেও রাজশাহীতে তেমন উদ্যোগ নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।