Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চকবাজারের আগুন বিদেশি মিডিয়ায় আগেই সতর্কতা দেয়া হয়েছিল

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:৫৫ এএম

উচ্চমাত্রায় প্রাণহানীকর এমন সতর্কতা দেয়া সত্তে¡ও বেশিরভাগ ভবন ব্যবহার করা হয় একই সঙ্গে আবাসিক ও বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে। ২০১০ সালে এক অগ্নিকাÐে কমপক্ষে ১২৩ জন নিহত হওয়ার পর এমন সতর্কতা দেয়া হয়েছিল। এসব ভবনকে বিধিবিধানের আওতায় আনার প্রতিশ্রæতি দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। আরও প্রতিশ্রæতি দিয়েছিল আবাসিক ভবন থেকে রাসায়নিক গুদাম সরিয়ে ফেলার।
চকবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাÐের পর বার্তা সংস্থা এপি একথা লিখেছে। বিদেশি সংবাদ মাধ্যমগুলো অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করছে এ খবর। এর মধ্যে এপির রিপোর্ট প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত টাইম ম্যাগাজিন। এতে বলা হয়েছে, ভয়াবহ ওই আগুন মুুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। এতে নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ৬৯ জন। আহত হয়েছেন প্রায় ৫০ জন। অগ্নিনির্বাপকরা ৯ ঘন্টারও বেশি সময় কঠোর চেষ্টা চালিয়ে বেশিরভাগ আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছেন। অগ্নি নির্বাপণ বিষয়ক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমেদ বলেছেন, বুধবার রাতে একটি ভবনে অগ্নিকাÐের সূত্রপাত। দ্রæত তা অন্য ভবনগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিস অ্যাÐ সিভিল ডিফেন্সের কন্ট্রোল রুমের একজন কর্মকর্তা মাহফুজ রিবেন বলেছেন, ঘটনার সময় বহু মানুষ ভবনগুলোতে আটকে পড়েছিলেন। নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৯। তিনি বলেছেন, আমাদের টিম সেখানে কাজ করছে। কিন্তু উদ্ধার করা লাশগুলো চেনার কোনো উপায় নেই। আমাদের সদস্যরা লাশ বহনের ব্যাগে করে সেগুলো হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যাচ্ছেন। অত্যন্ত জটিল পরিস্থিতি।
ওদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের প্রধান ড. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, নিহতের সংখ্যা বেড়ে যেতে পারে। কারণ, আহত অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তিনি বলেছেন, এমন আহত ৯ জনকে তার ইউনিটে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
অগ্নিকাÐে পুড়ে যাওয়া ভবনগুলোর বেশ কিছু ফ্লোরে রাখা ছিল রাসায়নিক পদার্থ ও প্লাস্টিকের গুদাম। প্রত্যক্ষদর্শীরা স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে বলেছেন, ওই ভবনগুলোতে গ্যাস সিলিÐারের গুদাম ছিল। এগুলো একটির পর একটি বিস্ফোরিত হতে থাকে। এ ছাড়া ট্রাফিক জ্যামে আটকে যাওয়া অনেক গাড়ির জ্বালানির ট্যাংকেও আগুন ধরে বিস্ফোরিত হতে থাকে।
বার্তা সংস্থা এএফপিকে উদ্ধৃত করে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে চ্যানেল নিউজ এশিয়া। এর শিরোনাম ‘ফায়ার কিলস ৬৯ ইন বাংলাদেশ ক্যাপিটাল : অফিসিয়াল’। এতেও প্রায় একই রকম তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বলা হয় ফায়ার সার্ভিসের প্রধান আলী আহমেদ বলেছেন, পুরনো ঢাকার চকবাজারে এতটি গ্যাস সিলিÐার বিস্ফোরণ থেকেই এই অগ্নিকাÐের সূচনা হয়ে থাকতে পারে। পরে দ্রæত তা ছড়িয়ে পড়ে। কারণ ভবনগুলোতে উচ্চ মাত্রায় দাহ্য রাসায়নিক পদার্থ মজুদ করা ছিল। আগুন দ্রæত চারটি ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। এসব ভবনে রাসায়নিক পদার্থের গুদাম ছিল। এ সময় ওই এলাকায় ছিল মারাত্মক ট্র্যাফিক জ্যাম। ফলে মানুষজন সরে যাওয়ার সুযোগ পায়নি। ওই এলাকার রাস্তাগুলোও খুব সরু। পাশেই একটি কমিউনিটি সেন্টারে চলছিল একটি বিয়ের অনুষ্ঠান।
এতে ওই অনুষ্ঠানের অনেকেই আহত হয়েছেন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ কমিশনার ইব্রাহিম খান বলেছেন, আগুনে কমপক্ষে দুটি গাড়ি ও ১০টি রিকশা পুড়ে গেছে। ভিকটিমদের মধ্যে রয়েছেন পথচারীও। কেউ কেউ তখন রেস্তোরাঁয় খাবার খাচ্ছিলেন।
অনলাইন বিবিসি বলেছে, দ্রæত ছড়িয়ে পড়া আগুন মুহূর্তের মধ্যে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার ঐতিহাসিক এলাকাকে গ্রাস করেছে। বুধবারের ওই আগুনে কমপক্ষে ৬৯ জন নিহত হয়েছেন।
বার্তা সংস্থা এএফপি চকবাজারের আগুন নিয়ে লিখেছে, পুরান ঢাকায় ভয়াবহ অগ্নিকাÐে ৬৯ জন মারা গেছেন। রাসায়নিকের গুদাম হিসেবে ব্যবহৃত একটি ভবন থেকে কয়েকটি ভবনে ওই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই ওই ভবনের ভেতর আটকা পড়ে।
রয়টার্স লিখেছে, বাংলাদেশে ভবনে আগুন লেগে ৭০ জন নিহত হয়েছেন। নিহত মানুষের সংখ্যা বাড়তে পারে। ওই ভবনে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। বাংলাদেশে ভবনে আগুনের ঘটনা প্রায়ই দেখা যায়।
টাইমস অব ইÐিয়ার অনলাইন সংস্করণে বাংলাদেশের ভয়াবহ অগ্নিকাÐের খবর এসেছে। ফায়ার সার্ভিসের বরাত দিয়ে তারা লিখেছে, আগুনের ঘটনায় ৬৯ জন নিহত ও ৫০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। নয় ঘণ্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
গুগল নিউজের ওয়ার্ল্ড ক্যাটাগরিতে শীর্ষে রয়েছে নিউইয়র্ক টাইমসের প্রকাশ করা খবরটি। এ ছাড়া মিরর, ইয়াহু নিউজ, দ্য কুইন্ট, গার্ডিয়ান নিউজ, আল-জাজিরা, এনডিটিভি, টেলিগ্রাফের মতো সংবাদমাধ্যমগুলো খবর প্রকাশ করেছে।
চকবাজারের আগুনের বিষয়টি ফেসবুক ও টুইটারেও ব্যাপকভাবে শেয়ার করছেন এই দুটি মাধ্যমের ব্যবহারকারীরা।
গত বুধবার রাত ১০টা ১০ মিনিটে নন্দকুমার দত্ত সড়কের চুরিহাট্টা মসজিদ গলির রাজ্জাক ভবনে আগুন লাগে। রাতে পৌনে একটার দিকে পাশের কয়েকটি ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে ব্যাপক হতাহতের কথা লিখেছে বার্তা সংস্থা কিয়োদো নিউজ।



 

Show all comments
  • DR. Jahangir Miah ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:৫১ এএম says : 0
    “ছুটে পালানোর উপায়ও ছিল না, মুহূর্তে পুড়ে ছাই” No worries my lovely Sisters and Brothers, this not the 1st time nor last time. Everywhere are corruption. Corruption in the economy, administrative, social, govt. diff. agency, they all are doing corruption collective way rather than simply individual and their boss are all political leader, Yes, indeed this is the live picture of My Mother Land Bangladesh. Remember Democracy does not in itself lead to reduced corruption. Day by day, month by month corruption on growing and production of corruption it’s an investment of political leader. Wallah I feel a sadness in my heart that I can’t imagine going on in my lovely country, and family, Someone please tell me what to do? And please don't say I'm imagining things. I just don’t know how to train political leader. I heard, officially some of them will get training from India, bring more supper Indian corruption. What kind of Bangladesh now? SubhanAllah Allah Ta'ala puts us in situations we may never have dreamt in our wildest dreams!. Believe me it is big test. And remember, there's no help in anything without Allah, so make dua’a to Allah to help. Try to create the Love of ALlah in our heart, inshallah Allah will help you. We are not alone, Allah is with us, and when our creator is with us, why worry about anything? O. my lovely Bangladeshi Sisters and Brothers, please don’t make any kind of sympathy to the politician and their leader. Ameen Kindest Regards, Your Brother in Islam – DR. Jahangir Miah
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চক বাজার ট্রাজিডি
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ