পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানীর সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজের প্রিন্সিপাল ইফতেখার আলীর বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণিত হলেও আছেন বহাল তবিয়তে। তার নিয়োগ অবৈধ প্রমাণিত হয়েছে বলে প্রতিবেদন দিয়েছে খোদ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) তদন্ত কমিটি। এছাড়াও টাকার বিনিময়ে নিষিদ্ধ গাইড বই সিলেবাসে অন্তর্ভূক্ত করা এবং কলেজ পরিচালনায় স্বেচ্ছাচারিতার প্রমাণও পেয়েছে ওই কমিটি।
তদন্তের ফলাফল প্রতিবেদন আকারে দেয়ার দুই মাস হয়ে গেলেও এখনো ইফতেখার আলীর বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোন ব্যবস্থা নেয়নি মাউশি কিংবা শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মাউশি সূত্রে জানা যায়, সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজের প্রিন্সিপাল পদে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে অবৈধভাবে ইফতেখার আলীকে নিয়োগ দেয়া হয়। আর নিয়োগের পর তার বিরুদ্ধে বেশ কিছু আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ এনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করা হয়।
উল্লেখযোগ্য অভিযোগ হচ্ছে- বেসরকারি কলেজের নিয়ম অনুয়ায়ি ইফতেখার আলীকে প্রিন্সিপাল হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়নি। তাকে নিয়োগ দেয়ার প্রক্রিয়া ছিল অবৈধ। টাকার বিনিময়ে নিষিদ্ধ গাইড বই সিলেবাসে অন্তর্ভূক্ত করা, অবৈধভাবে ৪৯ জন খন্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া, অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারী শিক্ষককে হয়রানি এবং স্বেচ্ছাচারিতা।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে করা অভিযোগ থেকে জানা যায়, কোন প্রকার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না করে পরিচালনা পর্ষদের বিদ্যোৎসাহী সদস্য পদে থেকেই প্রিন্সিপাল হিসেবে নিয়োগ পান ইফতেখার আলী। এক্ষেত্রে অন্যান্য সদস্যদের না জানিয়ে সভাপতি একক স্বাক্ষরে রেজ্যুলেশন মন্ত্রণালয়ে জমা দেন বলেও অভিযোগ করা হয়।
একইসাথে ইফতেখার আলীর বেতন নির্ধারণ করা হয় এক লাখ ৮৫ হাজার ৬০০ টাকা। যা বেসরকারি কলেজের কোন বেতন কাঠামোতেই পরে না। অথচ তার পূর্বের প্রিন্সিপালের বেতন ছিল ৬০-৭০ হাজার টাকা। কলেজে ন্যাশনাল কারিকুলাম ও টেক্সটবুক বোর্ডের (এনসিটিবি) অনুমতির বাইরে ছাত্রীদেরকে গাইড বই কিনতে বাধ্য করা হয়। অনার্স কোর্স খোলার জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি না মেনে নিবন্ধনহীন ৪৯ জনকে খন্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। এছাড়া অর্থ কমিটি, ক্রয় কমিটিতে পছন্দের লোককে অন্তর্ভূক্ত করা, উন্নয়নের নামে অর্থ আত্মসাৎ এবং শিক্ষার্থীদের বেতন, পরীক্ষার ফিসহ অন্যান্য ফি বৃদ্ধির অভিযোগ করা হয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় এসব অভিযোগ পেয়ে গত বছর ৬ ফেব্রুয়ারি মাউশিকে তদন্তের দায়িত্ব দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ। একই বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর সরকারি বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর বনমালী মোহন ভট্টাচার্য্য এবং মাউশির সহকারি পরিচালক আশেকুল হককে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করে মাউশি। তারা তদন্ত শেষে গত বছরের ২ ডিসেম্বর মাউশিতে প্রতিবেদন দাখিল করেন।
কমিটির ওই প্রতিবেদনে বলা হয়- প্রিন্সিপালের নিয়োগ যে বিতর্কিত তা প্রমাণিত। ইফতেখার আলীকে প্রিন্সিপাল হিসেবে যে বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হয়েছে সেটিও কোনভাবেই স্বাভাবিক নয়। সরকারি কলেজের একজন শিক্ষককে সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজের উন্নয়নের স্বার্থেই লিয়েনে নিয়োগ দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তুযে প্রক্রিয়ায় নিয়োগ দেয়া হয়েছে তা ত্রুটিপূর্ণ এবং যে পরিমাণ বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হয়েছে তাতে কলেজ উপকৃত না হয়ে বরং আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে নিষিদ্ধ গাইড বই সিলেবাসে অন্তর্ভূক্ত করা এবং কলেজ পরিচালনায় স্বেচ্ছাচারিতার যে অভিযোগ করা হয়েছে তাও আংশিক প্রমাণিত। অন্যদিকে অবৈধভাবে ৪৯ জন খন্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগ এবং অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারী শিক্ষককে হয়রানির অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কলেজটির পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি নূরুল ইসলাম বলেন, তদন্ত প্রতিবেদনটি ফেয়ার না। কমিটির কেউ আমার কাছে আসেনি এবং কথা বলেনি। নিয়ম মেনেই প্রিন্সিপাল নিয়োগ করা হয়েছে। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার কোন বাধ্যবাধকতা নেই। সবার মতামত নিয়েই নিয়োগ দেয়া হয়েছে। বেতনের ক্ষেত্রেও কোন নির্দিষ্ট উল্লেখ করা নেই। গভর্নিং বডি সেটা নির্ধারণ করতে পারে। আর পর্ষদের সদস্য থেকে প্রিন্সিপাল হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর অটোমেটিক তা চলে যায়। প্রত্যাহার করার প্রয়োজন নেই।
এ বিষয়ে প্রিন্সিপাল ইফতেখার আলী বলেন, সরকার আমাকে নিয়োগ দিয়েছে। প্রত্যাহার করলে চলে যাবো। আমি এখানে আসার পর টার্গেট নির্ধারণ করেছি প্রাইভেট কলেজগুলোর মধ্যে সেন্ট্রালকে এক নম্বরে নিয়ে যাবো। নিয়োগের সময়ই বলেছি ৪০ হাজার টাকা বেশি বেতন দিতে হবে। তারা সেটি মেনে নিয়েই আমাকে নিয়োগ দিয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।