Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কুল চাষে স্বাবলম্বী

কুষ্টিয়ায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চলছে আবাদ

কুষ্টিয়া থেকে এস এম আলী আহসান পান্না | প্রকাশের সময় : ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

পুষ্টিকর ও জনপ্রিয় ফল কুল। কুষ্টিয়ায় এ কুলের আবাদ হচ্ছে বাণিজ্যিকভিত্তিতে। দেশীয় প্রযুক্তিতে চাষীরা যখন ভাগ্য বদলের খেলায় পরাজিত হচ্ছে, ঠিক তখনই প্রযুক্তির সমন্বয়ে কুলের বাগানে সাথী ফসল ফলিয়ে নিজেদের ভাগ্যের পরিবর্তন করেছে বেকার কুল চাষীরা।
জানা যায়, জেলার ৬ টি উপজেলার পল্লীতে বাণিজ্যিকভাবে আবাদ হচ্ছে হাইব্রিড জাতের কুল। মচমচে, রসালো, টক মিষ্টি ও সুস্বাদু ফল হিসেবে বাউকুল ও আপেল কুলের কোন তুলনা নেই। ভালো দাম ও ব্যাপক চাহিদার কারণে কুষ্টিয়ায় কুল চাষ জনপ্রিয় হয়ে ওঠছে। অল্প সময়ে, স্বল্প খরচে লাভজনক সুস্বাদু ফল কুল চাষে বিপ্লব ঘটিয়েছে চাষীরা। দৃষ্টিনন্দন, সুস্বাদু বাউ ও আপেল কুলে এবারও ছেয়েছে কুষ্টিয়ার পল্লী। অনাবাদী জমি, বসতবাড়ির আশপাশসহ বিভিন্ন মাঠে শুধু কুলের গাছ। কোথাও কোথাও এসব গাছে ফুল থেকে ফল ইতোমধ্যে বড় বড় হয়ে উঠেছে। বেকার ও দারিদ্র জনগোষ্ঠির মানুষ এবং প্রান্তিক চাষীরা ব্যাপক ফলনশীল কুলের আবাদ করে অল্প সময়ে অধিক লাভের আশায় তাকিয়ে রয়েছে। শীত মৌসুমের অন্যতম এ দেশী ফসলের দিকে। কিছুদিনের মধ্যেই এ ফল ছড়িয়ে যাবে হাটবাজারে।
জেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে, এ জেলায় চলতি মৌসুমে এক হাজার ৪ শত ২৫ হেক্টর জমিতে কুলের আবাদ হয়েছে। জেলার পল্লীতে কুলের মাতৃগাছগুলো ফলের ভারে নুয়ে পড়েছে। যার কারণে একাধিক পেলা বা ঠেস দিতে হয়েছে। মাঠে মাঠে আপেল কুল ও বাউকুল কৃষিখাতে খুলে দিয়েছে এক অপার সম্ভাবনারখাত। শীতের নিজস্ব মওসুমী ফল হিসেবে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে এ ফল। এছাড়াও বিচ্ছিন্নভাবে রাস্তার পাশে, পুকুরের ধারসহ বিভিন্ন স্থানে সৌখিন ব্যক্তিবর্গ বাউ কুলের আবাদ করে। গ্রামাঞ্চলের চাষীরা ছাড়াও বেকার যুবকরা এ কুল চাষে ঝুঁকছে। বিভিন্ন জাতের কুলের আবাদ হচ্ছে মাঠের পর মাঠ। কুলের খামারীরা অনেকেই বাজারে কুল বিক্রি করছেন। বাজারে কুলের দামও ভালো।
কুলচাষী কবীর জানায়, উৎপাদন খরচ ও পরিশ্রমের তুলনায় কুল চাষ অত্যন্ত লাভজনক। একটি চারা গাছ ৬ মাস বয়সেই ফল দেয়া শুরু করে। একেকটি গাছ ৩০ থেকে ৪০ কেজি কুল উপহার দেয়। জেলার অনেক কুল চাষী এ ফল আবাদের পাশাপাশি কুলের সাথী ফসল হিসেবে লাল শাক, পুঁই, মরিচ, রসুন, আলু ও তিল চাষ হচ্ছে।
কুল চাষীদের কুল বাগানে চোখ জুড়ানো কুলের ফলন হয়েছে। কুলের ভারে গাছ ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে।
উৎপাদন খরচ ও পরিশ্রমের তুলনায় কুল চাষ অত্যন্ত লাভজনক। একটি চারাগাছ ৬ মাস বয়সেই ফল দেয়া শুরু করে। একেকটি গাছ থেকে অনেক কুল পায় চাষীরা। এছাড়াও কুল চাষের জন্য এখানকার মাটি উপযোগী হওয়ায় কুল চাষে আগ্রহ বেড়েছে চাষীদের।
কুল চাষে ভালো সফলতা পাওয়ায় বেকার শিক্ষিত যুবকরা কুল চাষের দিকে ঝুঁকছে। এ কুল চাষের মাধ্যমে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
সুষ্ঠু পরিকল্পনার মাধ্যমে এ কুলের আবাদ করলে চাষীরা একদিক দিয়ে যেমন কৃষকরা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে উঠবে, অপরদিকে পুষ্টিকর ফলের চাহিদাও পূরণ হবে। কুল চাষীদের যদি অর্থনৈতিকভাবে সাহায্য করা যায়, তাহলে এ জেলায় কুলের আবাদ বৃদ্ধি পাবে। দারিদ্র বিমোচনে বিরাট অবদান রাখবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কুল


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ