পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ধুলা দূষণে নাকাল নগরবাসী। ধুলা এখন নগরবাসীর কাছে আরেক বিড়ম্বনার নাম। শুষ্ক মৌসুমে মহানগরী ঢাকায় ধুলা দূষণ ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। ধুলা দূষণের ফলে অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে ধুলাজনিত রোগব্যাধির প্রকোপ। শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে রোগ জীবাণুমিশ্রিত ধুলা ফুসফুসে প্রবেশ করে সর্দি, কাশি, ফুসফুস ক্যান্সার, ব্রংকাইটিস, শ্বাসজনিত কষ্ট, হাঁপানী, যক্ষা, এলার্জি, চোখ জ্বালা, মাথা ব্যথা, বমি ভাব, চর্মরোগসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে নগরবাসী। এরমধ্যে শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থ ব্যক্তিরাই ধুলা দূষণের ফলে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে, ধুলা দূষণের কারণে রাজধানীর প্রতিটি মধ্যবিত্ত পরিবারকে প্রতি মাসে অতিরিক্ত ৪,০০০ থেকে ১২,০০০ টাকা চিকিৎসায় ব্যয় করতে হচ্ছে। ধুলা দূষণের কারণে বৃক্ষের সালোকসংশ্লেষণ এবং ফুলের পরাগায়নও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এতে ফলের উৎপাদনও ব্যাহত হচ্ছে।
ধুলি দূষণ থেকে নগরবাসীকে রক্ষা করার বিষয়ে কতৃপক্ষ একেবারেই উদাসীন। এ বিষয়ে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) চেয়ারম্যান আবু নাসের খান বলেন, ধুলা দূষণে নাকাল নগরবাসী। অথচ এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নির্বি। নগরী পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্বে যারা আছেন তারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছেন না। এ জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ অসাধু কর্মকর্তা আত্মসাৎ করছেন। এই অর্থ আত্মসাতকারীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।
পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের এক নিবন্ধে রাজধানীতে ধুলা-দূষণের অনেক উৎসের উল্লেখ রয়েছে। এরমধ্যে উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় রাজধানীতে মেট্রোরেল, ফ্লাইওভারসহ চলছে বিভিন্ন রাস্তা ঘাট খোঁড়াখুঁড়ি। বিভিন্ন স্থানে অপরিকল্পিতভাবে কোন সমন্বয় ছাড়াই, ওয়াসা-ডেসা,রাজউক এসব সেবামূলক প্রতিষ্ঠান, গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানি ও ড্রেনেজ সুবিধার জন্য চলছে খোঁড়াখুঁড়ি। এর পাশাপাশি রাজধানীর উপকন্ঠে আছে হাজার হাজার ইটের ভাটা। এসব ইট ভাটা থেকে প্রতিদিন শত শত ট্রাক ধুলা উড়িয়ে ইট নিয়ে রাস্ত দিয়ে চলাচল করছে। তখন আশপাশের এলাকা ধুলি-ধুসর হয়ে পড়ে।
এছাড়াও রয়েছে প্রতিনিয়ত মাটি, বালিভর্তি আচ্ছাদনহীন অবস্থায় ট্রাক শহরে চলাচল করা, ড্রেন পরিস্কার করে রাস্তার পাশে স্তপ করে রাখা, মেরামতহীন ভাংগাচোরা রাস্তায় যানবাহন চলাচল, পাকা ভবন নির্মাণের সময় নিয়ম না মেনে মাটি, বালুসহ অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রী দীর্ঘদিন যত্রতত্র ফেলে রাখা, রাস্তার দু’পাশে ময়লা আবর্জনা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা, ইট-পাথর মেশিনে ভাঙ্গা, যানবাহনের কালো ধোঁয়া ইত্যাদি প্রতিনিয়ত ধুলা দূষণ সৃষ্টি করে।
এরকম অসংখ্য উৎস থেকে বিপুল পরিমাণ ধুলা বাতাসে মিশে অবরুদ্ধ করে ফেলেছে নগরবাসীর নিঃশ্বাস। পরিসেবা প্রদানকারী সংস্থাসমূহ অবকাঠামো তৈরি, সম্প্রসারণ ও মেরামত করার সময় খননকৃত মাটি ও অন্যান্য সামগ্রী রাস্তায় ফেলে না রেখে দ্রুত অপসারণের জন্য অর্থ বরাদ্দ থাকে। বরাদ্দকৃত অর্থ খরচ দেখানো হলেও এর সঠিক ব্যবহার দৃষ্টিগোচর হয় না। পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা এ জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দায়িত্বহীনতাই অন্যতম কারণ বলে মনে করেন।
সচেতন নগরবাসীর সভাপতি জিএম রোস্তম খান বলেন, বর্তমানে ধুলা দূষণ প্রকট আকার ধারণ করেছে। ধুলা দূষণে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে ধুলাজনিত রোগব্যাধির প্রকোপ। রাস্তার পাশে দোকানের খাবার ধুলায় বিষাক্ত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে রোগ জীবাণুমিশ্রিত ধুলা ফুসফুসে প্রবেশ করে নানা জটিল রোগের সৃষ্টি করছে। যা জনস্বার্থে ও পরিবেশের জন্য একটি মারাত্বক হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে। অথচ কর্তৃপক্ষ এব্যাপারে উদাসীন।
বর্তমানে ঢাকা মহানগরীর গাবতলী হতে বাবু বাজার ব্রিজ পর্যন্ত বেড়িবাঁধ সম্প্রসারণ কাজে সবচেয়ে বেশি ধুলিকণা ছড়িয়ে পড়ছে। বেড়িবাঁধে চলাচলকারী জনসাধারণ ও যানবাহন, বাঁধের দুপাশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং এলাকার জনগণকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ ছাড়া মেট্্ররেল, এলিভেটেড একপ্রেসওয়ে নির্মাণ কাজের জন্য, উত্তরা, এয়ারপোর্ট, বনানী, আগারগাঁও, ফার্মগেট, কাওরান বাজার, ফার্মগেট, মতিঝিলসহ রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকাও ধুলি-দূষনের কবলে। এর ফলে সর্দি, কাশি, হাঁপানি, এলার্জি ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্তদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে ধুলা দূষণের কারণে শিশুদের শ্বাসকষ্টজনিত রোগ অন্যান্য সময়ের চেয়ে বেশি। শিশুস্বাস্থ বিভাগে রোগীর প্রায় ৪০ শতাংশের বেশি শ্বাসকষ্টজনিত বিভিন্ন রোগে ভর্তি হচ্ছে।
পরিবেশবাদীরা গত শনিবার রাজধানীতে এক মানববন্ধনে নগরবাসীর স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ নিশ্চিত করতে অচিরেই ধুলা দূষণের উৎসসমূহ বন্ধের দাবী জানিয়েছেন। এছাড়া গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি, ড্রেনেজ এবং রাস্তাঘাট উন্নয়ন, মেরামত ও সংস্কার কার্যক্রমের আওতায় নির্দিষ্ট পরিমাণ রাস্তা-জায়গা খোঁড়া-খুঁড়ি করে প্রয়োজনীয় কাজ সম্পন্ন হওয়ামাত্র তা পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা এবং পর্যায়ক্রমে তা চালিয়ে যাওয়া, খোঁড়া-খুঁড়ির সময় যাতে ধুলা দূষণ না হয় সেদিকে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি রাখার বিষয়েও পরিবেশবাদীরা জোর দাবি জানিয়েছেন। #
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।