পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ও হল সংসদ নির্বাচনে পাল্টাপাল্টি অবস্থানে ছাত্র সংগঠনগুলো। রবিবার এনিয়ে ছাত্র রাজনীতির আঁতুরঘর খ্যাত মধুর ক্যান্টিনে কয়েকটি আলাদা সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরে বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা। ডাকসু নিয়ে প্রশাসন বেশি তাড়াহুড়া করছে বলে অভিযোগ করে বিএনপির সহযোগী সংগঠন ছাত্রদলের দাবি করে তাড়াহুড়া করলে শুধু ডাকসু নির্বাচন হালাল হবে আর সহাবস্থানের নাটক করা হলে তা হবে গণতান্ত্রিক চেতনার সাথে তামাশা। অন্যদিকে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে বলা হয় ছাত্রদলের নেতাদের সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে কোন সম্পৃক্ততা না থাকায় নির্বাচন নিয়ে গড়িমসি করছে ছাত্রদল। অন্যদিকে আলাদা জাসদ ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে আলাদা প্যানেল দেয়ার ঘোষণা দেয়া হলেও বৃহত্তর ঐক্য গড়ার ঘোষণা দেয় বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর দুটি জোট প্রগতিশীল ছাত্রজোট ও সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী ছাত্রঐক্য।
রবিবার বেলা ১২টায় মধুর ক্যান্টিনে আসে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এসময় নিজেদের দাবি দাওয়া নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন তারা। ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান বলেন, আমরা চাই একটা স্থিতিশীল সহাবস্থান আমাদের যারা হলের বাহিরে আছে তাদের ফিরিয়ে নিতে হবে। সামগ্রীকভাবে যখন সহাবস্থান নিশ্চিত হবে। পাশাপাশি আমাদের যে দাবি ভোট কেন্দ্র হলের বাহিরে দেওয়া , নির্বাচনের যে কমিটি সেগুলোতে সকল দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। এ ছাড়াও নির্বাচন ৩ মাস পেছানোর যে দাবি করেছি সেটার কারন হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সকল গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য রয়েছে সহাবস্থান নিশ্চিত করে ডাকসু নির্বাচন হোক । তড়িঘড়ি করে নির্বাচন করলে শুধুমাত্র ডাকসু নির্বাচনকে হালাল করার জন্য যদি সহাবস্থানের নাটক করা হয় তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক গণতান্ত্রিক যে চেতনা সেগুলোর সাথে তামাশা করা হবে। তাই আমরা চাচ্ছি ন্থিতিশীল সহাবস্থানের মাধ্যমে অবাধে নিশ^ঃকোচে ভোট দিতে পাওে এর মাধ্যমে ডাকসু নির্বাচনের প্রতিনিধি নির্বাচন করা হোক। প্রশাসন বলেছে হলেই ভোট কেন্দ্র থাকবে, তাহলে আপনারা কি ডাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেননা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ছাত্রদলের এই নেতা বলেন, আমরা ডাকসু নির্বাচনের ব্যাপারে ইতিবাচক থাকতে চাই। প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছি সহাবন্থানের প্রতিটা দাপ আস্থা অর্জনের মধ্যে অর্জিত হোক। যখন আস্থার জায়গা চলে আসবে তখন আমরা আমাদের নেতা কর্মীদের হলে উঠানোর ব্যাবস্থা করবো। নির্বাচনের প্যানেলের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা আশা করি প্রশাসন আমাদের দাবি মেনে নিবে। আন্দোলনের পাশাপাশি নির্বাচন নিয়ে আমাদের সামগ্রিক প্রস্তুতি থাকবে। এ ছাড়াও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আমরা আমাদের দলীয় ফোরামে কথা বলবো।
অন্যদিকে বেলা ১টায় মধুর ক্যান্টিনের সামনে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন ছাত্রলীগের নেতারা। এসময় ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী, ঢাবি সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস, সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন উপস্থিত ছিলেন। ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন বলেন, ডাকসু হচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সংগঠন। কিন্তু ছাত্রদলের নেতাদের বয়স চল্লিশের উপর। তাদের সাথে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোন সম্পৃক্ততা নেই। তাই তারা ভালো করেই জানে প্যানেল দিয়ে নির্বাচনে জয়লাভ করতে পারবে না। এজন্য তারা নির্বাচন নিয়ে গড়িমসি করছে।
অন্যদিকে নির্বাচন ঘিরে বৃহত্তর ঐক্য গড়তে চাইছে বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর মোর্চা প্রগতিশীল ছাত্রজোট ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী ছাত্রঐক্য। এই ঐক্যের ভিত্তি হিসেবে ১১ দফা ঘোষণাপত্র প্রস্তুত করেছে তারা। এই দফাগুলোর সঙ্গে একমত সবাইকে নিয়ে তাদের প্যানেল সাজানো হবে বলে জানিয়েছে সংগঠনগুলো। তাদের দফাগুলোর মধ্যে রয়েছে সন্ত্রাস, দখলদারি ও প্রশাসনিক স্বৈরতন্ত্রমুক্ত গণতান্ত্রিক বিশ্ববিদ্যালয়, মেধা ও প্রয়োজনের ভিত্তিতে প্রশাসনিক তত্ত্বাবধানে প্রথম বর্ষ থেকে বৈধ সিটের ব্যবস্থা, গেস্টরুম ও গণরুমে ছাত্র নির্যাতন বন্ধ, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও ছাত্রসংগঠনগুলোর সহাবস্থান নিশ্চিত, বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বাণিজ্যিক কোর্স বন্ধ, শিক্ষা-গবেষণা ও ছাত্র অধিকার সংশ্লিষ্ট খাতে বরাদ্দ বাড়ানো, ইউজিসির কৌশলপত্র বাতিল, ধর্মভিত্তিক, সাম্প্রদায়িক, জাতিগত ও লৈঙ্গিক বৈষম্য সৃষ্টিকারী অপতৎপরতা নিষিদ্ধ, ৭৩-এর অধ্যাদেশের অসম্পূর্ণতা দূর করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ণাঙ্গ স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত, উচ্চশিক্ষা কমিশনের অপতৎপরতা প্রতিরোধ, শিক্ষা-চিকিৎসাসহ মৌলিক অধিকার নিয়ে ব্যবসা বন্ধ, শিক্ষার সব স্তওে বেসরকারিকরণ, বাণিজ্যিকীকরণ ও সাম্প্রদায়িকীকরণ বন্ধ করে সর্বজনীন বিজ্ঞানভিত্তিক ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক একই পদ্ধতির শিক্ষানীতি, শিক্ষা শেষে কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা, তা না হলে বেকার ভাতার ব্যবস্থা, গণমানুষের ন্যায্য আন্দোলনে সংহতি জ্ঞাপন, শাসকশ্রেণির নয়, শ্রমিক-কৃষক-জনগণের মুক্তিযুদ্ধের আকাক্ষায় সমতা, সামাজিক ন্যায়বিচার ও শোষণমুক্ত সমাজ বিনির্মাণ। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান প্রগতিশীল ছাত্রজোটের সমন্বয়ক ও বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর কেন্দ্রীয় সভাপতি ইকবাল কবীর। বৃহত্তর ঐক্য গড়ার লক্ষ্যে গতকাল শনিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিভিত্তিক সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, ক্যাম্পাসের বিভিন্ন আন্দোলনের মঞ্চ ও ক্ষুদ্র জাতিসত্তার শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে আলোচনায় বসেছে জোট দুটি। টিএসসির মুনীর চৌধুরী মিলনায়তনে আজ বিকেলে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
অন্যদিকে নির্বাচনে আলাদা প্যানেল দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (জাসদ)। বেলা সাড়ে ১১টায় অপর একটি সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে জানান তারা। সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সভাপতি আহসান হাবীব শামীম বলেন, ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আমরা আলাদা প্যানেলের প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে বৃহত্তর একটি জোটের শরিক হওয়ায় জোটগত নির্বাচনের বিষয়টাও আমাদের মাথায় রয়েছে । এ সময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মাসুদ আহমেদ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।