পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের পর গতকাল থেকে আবারও কার্যক্রম চালু করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে আগুনে শিশু ওয়ার্ড মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আপাতত হাসপাতালে শিশু রোগীদের ভর্তি করা হচ্ছে না। আগুন লাগার কারণ নিয়ে গতকাল পর্যন্ত হাসপাতালটির কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করে কিছু না বললেও স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিক বলেছেন, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে মূল রহস্য উদ্ঘাটনে দু’টি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ফায়ার সার্ভিস ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তারা অনুসন্ধান কাজ চালাচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার স্টোর রুমে আগুন লাগে।
গতকাল দুপুরে সরেজমিন সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালটির গেটের পাশেই চেয়ার-টেবিল পেতে ডেক্স বসানো হয়েছে। সেখানে দায়িত্ব পালন করছেন একাধিক চিকিৎসক ও নার্স। এখান থেকেই পুরাতন রোগীদের কাগজপত্র পরীক্ষা করে চিকিৎসার জন্য ওয়ার্ডে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। পুরাতন রোগীদের কাগজপত্র পরীক্ষা করা এক নার্স বলেন, আগুন লাগার আগে আমাদের এখানে যারা ভর্তি ছিলেন, তাদেরই চিকিৎসা শুরু করেছি। রোগীর কাগজপত্র আমাদের কাছে আনলেই আমরা তা দেখে যে ওয়ার্ডে পাঠানোর দরকার সেখানে পাঠিয়ে দিচ্ছি। তিনি বলেন, আগুন লাগার পর আমাদের হাসপাতাল থেকে ১ হাজার ১৭৮ জন রোগী অন্যত্র পাঠানো হয়েছিল। তার মধ্যে গতকাল দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত ৭১৮ জন রোগী ফিরে এসেছেন। পাশাপাশি নতুন রোগীও চিকিৎসা সেবা নিতে আসছেন।
হাসপাতালের অনুসন্ধান বিভাগে দায়িত্ব পালন করা গোলাম মোস্তফা বলেন, পুরাতন রোগীদের পাশাপাশি নতুন সব ধরনের জরুরি রোগীর চিকিৎসা সেবা দেয়া শুরু হয়েছে। আপাতত আমরা ১১ নম্বর ওয়ার্ড (শিশু), ৮ নম্বর ওয়ার্ড (মহিলা সার্জারি) এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ডে (মহিলা) রোগী ভর্তি করছি না। তবে এই ওয়ার্ডগুলোতে যে ধরনের রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেয়া হতো তাদের অন্য ওয়ার্ডে চিকিৎিসা দেয়া হচ্ছে।
হাসপাতালটির দ্বিতীয় তলায় গিয়ে দেখা যায়, কয়েকজন পরিচ্ছন্নকর্মী ৮ নম্বর ওয়ার্ড (মহিলা সার্জারি) পরিচ্ছন্নের কাজ করছেন। এই ওয়ার্ডটিতে আগুনে পোড়ার কোনো দৃশ্য দেখা যায়নি। তবে এর সামনেই থাকা আর একটি ওয়ার্ডের সর্বত্রই আগুনে পোড়ার দৃশ্য দেখা যায়। ওয়ার্ডের সামনে গিয়ে দাঁড়ালেই ভেসে আসছে পোড়া গন্ধ। দেখা গেল, কেউ অ্যাম্বুলেন্সে করে, কেউ সিএনজি বা রিকশায় করে রোগীদের নিয়ে হাসপাতালে ফিরে আসছেন। হাসপাতালের আইসিইউ, এনআইসিইউ, অপারেশন থিয়েটার, জরুরি বিভাগ এবং বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড পুরোদমে চালু হয়েছে। তবে শিশু ও মহিলা ওয়ার্ড ধ্বংসস্ত‚পে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে শিশু ওয়ার্ড মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আপাতত শিশুদের ভর্তি করা হচ্ছে না।
জরুরি বিভাগের সামনে কথা হচ্ছিল সাফাতুল জান্নাত সুইটির সঙ্গে। তিনি জানান, আগুন লাগার পর তিনি ও অন্য স্বজনেরা মিলে তার বাবাকে পাশের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। সকালে বাবাকে আবার হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন। সুইটি জানান, সোহরাওয়ার্দী থেকে বিভিন্ন হাসপাতালে গেছেন এমন ৭-৮ জন রোগীকে তিনি সকালেই ফিরে আসতে দেখেছেন।
আগুন লাগা নিয়ে গতকাল পর্যন্ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করে কিছু না বললেও হাসপাতালের অন্যান্য ব্যক্তিরা বলছেন, নিচতলার স্টোর রুম থেকেই আগুন লেগেছে। সেখান থেকে আগুন তিনতলা পর্যন্ত উঠে যায়। পুরো সিঁড়ি রুম আগুনে পুড়ে গেছে। বিভিন্ন ওয়ার্ডের পলেস্তারা খসে পড়ছে। ২য় ও ৩য় তলায় মহিলা ও শিশু ওয়ার্ডের বেডগুলো পুড়ে গেছে।
হাসপাতালের পরিচালক উত্তম বড়–য়া সাংবাদিকদের জানান, হাসপাতালটি পুরোদমে চালু করার কাজ চলছে। বেশির ভাগ অংশ চালু হয়েছে। তিনি বিভিন্ন হাসপাতালে স্থানান্তরিত রোগীদের ফিরে আসারও আহ্বান জানান।
গতকাল সকালে এক সংবাদ সম্মেলন করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিক বলেন, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে স্বাভাবিক চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে হাসপাতালের তৃতীয় তলায় আগুন লেগেছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে, যা স্টোর রুমে ছড়িয়ে পড়েছিল।
তবে আগুন লাগার কারণ অনুসন্ধানে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এ ছাড়া হাসপাতালের পরিচালক ডা. উত্তম কুমারকে প্রধান করে সাত সদস্যের আরো একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। উভয় কমিটি তাদের অনুসন্ধ্যান কাজ করছে। যথাসময়ে তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া যাবে বলে আশা করছি।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে হাসপাতালটি আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের চেষ্টায় তিন ঘণ্টা পর আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসে। হাসপাতালে থাকা প্রায় এক হাজার ২০০ রোগীকে তাৎক্ষণিকভাকে বিভিন্ন হাসপাতালে সরিয়ে নেওয়া হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।