Inqilab Logo

বুধবার, ২৯ মে ২০২৪, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

৯ বছর পর মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রদল

ছাত্রলীগের শুভেচ্ছা : ডাকসু নির্বাচন পেছানোর দাবি : আনুষ্ঠানিক প্রচারণায় ছাত্র ইউনিয়ন

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

দীর্ঘ ২৮ বছর পর হতে যাওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ৯ বছর পর ছাত্র রাজনীতির আঁতুরঘর হিসেবে পরিচিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মধুর ক্যান্টিনে এসেছিল ছাত্রদল। গতকাল (বুধবার) সকাল পৌনে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আল মেহেদী তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ছাত্র সংগঠনটির নেতকর্মীরা মধুর ক্যান্টিনে প্রবেশ করেন। এর কিছুক্ষণ পরে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজীব আহসান ও সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান। ডাকসু নির্বাচন নিয়ে নিজেদের অবস্থান জানাতে মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন নেতারা। এসময় নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নামে স্লোগান দেয়। সর্বশেষ ২০১০ সালের ১৮ জানুয়ারি ক্যাম্পাসে মিছিল ও সমাবেশ করতে এসে ছাত্রলীগের হামলার স্বীকার হয় ছাত্রদল। এরপর বিভিন্ন সময় ক্যাম্পাসের আশেপাশের সড়কে ঝটিকা মিছিল করলেও আনুষ্ঠানিক কোন কর্মসূচিতে দেখা যায়নি তাদের। বুধবার দুপুর ১২টা ৪৭ মিনিট পর্যন্ত মধুর ক্যান্টিনে থাকেন নেতাকর্মীরা।
এদিকে ছাত্রদলের পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে মধুর ক্যন্টিনে আসার আগেই সেখানে অবস্থান নেয় ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। ক্যান্টিনে এবং বাইরে অবস্থানরত ছাত্রলীগের বিভিন্ন হল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা ছাত্রদল নেতাদের উদ্দেশ্য করে স্লোগান দিতে থাকলেও ছাত্রদলকে মধুর ক্যান্টিনে স্বাগত জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন। মধুর ক্যান্টিনে উপস্থিত ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী, সহসভাপতি তুহিন কান্তি দাস, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ শাহরিয়ার ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক প্রগতি বর্মণ তমার সঙ্গেও কুশলাদি বিনিময় করেন ছাত্রদলের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার দুই শীর্ষ নেতা। পরে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সভাপতি রেজোয়ানুল হক চৌধুরী শোভন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস, ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক রাজীব দাসসহ অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত হন।
পরে মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন ৩ মাস পেছানো, হলের বাইরে ভোটকেন্দ্রসহ ৭ দফা দাবি তুলে ধরে ছাত্রদল। তাদের দাবিগুলো হলো, সব ছাত্র সংগঠনের সহাবস্থান নিশ্চিত করা, ন্যূনতম আগামী তিন মাস বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে স্বাভাবিক রাজনীতি নিশ্চিত করা, তিন মাস নির্বাচন পেছানো, হলে ভোটগ্রহণের পরিবর্তে এ্যাকাডেমিক ভবনে ভোটগ্রহণ, ভোটার হওয়ার উপযুক্ত ঢাবির সব পর্যায়ের ছাত্রছাত্রীর ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার সুযোগ নিশ্চিত করা, নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণায় সংগঠনের সাবেক নেতাদের অংশগ্রহণে সুযোগ দেয়া, গ্রেফতার ও হয়রানি না করা, সাধারণ নেতাকর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, নির্বাচন পরিচালনা কমিটি পুনর্গঠন করা।
রাজিব আহসান বলেন, সব ছাত্র সংগঠনের সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হলে আগামী ৩ মাস বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক রাজনীতি নিশ্চিত করতে হবে। এসময়ের মধ্যে যদি ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনগুলো রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে তবে সহাবস্থান প্রাথমিক ধাপে উন্নীত হয়েছে বলে আমরা ধরে নেব। ভোটকেন্দ্র হলের বাইরে নিয়ে আসার দাবিতে আমরা এখনো অটল আছি। সামগ্রিক পরিবেশ নিশ্চিত হওয়ার পর পুনরায় তফসিল ঘোষণা করতে হবে। সহাবস্থানের স্থায়ী সমাধানের পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান তিনি।
ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন বলেন, ছাত্রদল শান্তিপূর্ণভাবে ডাকসু নির্বাচনে অংশ নিবে আমরা সে প্রত্যাশাই করি। তবে কোন গোষ্ঠির পক্ষ থেকে যেন ক্যম্পাসে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি না হয় সে বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রশাসন নির্বাচনের যে দিন ঘোষণা করেছে সেদিন নির্বাচন হোক এটা আমরা চাই। বিভিন্ন সংগঠন তাদের দাবি জানাবে এটা তাদের অধিকার। তবে প্যানেল নিয়ে এখনও কোন সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগের ঢাবি শাখার সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস বলেন, আমরা মনে করি দীর্ঘ ২৮ বছর ডাকসু নির্বাচন হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন অন্যান্য সময়ের চেয়ে ভাল পরিবেশ বজায় আছে বলে আমরা মনে করি। নির্বাচন পিছাবে কি যথাসময়ে হবে এটা প্রশাসনের একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়। তাদের যে সিদ্ধান্ত হবে তাকেই স্বাগত জানাই আমরা। কিন্তু নির্বাচনের যে তারিখ ঘোষণা হয়েছে সেইদিনই নির্বাচন হোক আমাদের এ দাবি থাকবে।
আনুষ্ঠানিক প্রচারণায় ছাত্র ইউনিয়ন: ডাকসু নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র, সহাবস্থানসহ বিভিন্ন বিষয়ে আপত্তি থাকলেও যথাসময়ে নির্বাচন চায় ছাত্র ইউনিয়ন। এনিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারণাও শুরু করেছে সংগঠনের নেতাকর্মীরা। গতকাল বুধবার সকাল ১১টায় মধুর ক্যান্টিন থেকে প্রচারণা শুরু করেন তারা। পরে কলা ভবন, বাণিজ্য অনুষদ, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, হাকিম চত্বরসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রচারপত্র বিতরণ করা হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ডাকসু

৩ নভেম্বর, ২০২১
১৪ মার্চ, ২০২০
২৯ ডিসেম্বর, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ