পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জাপানি নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান মেট্রোরেলের অন্যতম অংশ রোলিং স্টক ( রেল কোচ) প্রস্তুত করেছে। এখন চলছে পরিদর্শন ও পর্যালোচনার কাজ। শিগগিরই লাল সবুজ রেল কোচগুলো পানিপথে ঢাকায় নিয়ে আসা হবে।
যানজটে নাকাল রাজধানীবাসীকে নিরাপদ ও দ্রুত চলাচলের সুযোগ করে দিতে মেট্রোরেলের কাজ এগিয়ে চলেছে। দু’টি ভাগে বিভক্ত প্রকল্পটির উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশের কাজ এখন দৃশ্যমান। চলতি বছরের মধ্যে এই অংশ দিয়ে যাত্রী পারাপারের কথা রয়েছে। লক্ষ্য বাস্তবায়নে দেশের পাশাপাশি জাপানেও প্রকল্পের কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলেছে।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, জাপানের কাওয়াসাকি-মিতসুবিশি কনসোর্টিয়াম নামে একটি প্রতিষ্ঠান মেট্রোরেলের কোচগুলো সরবরাহ করবে। প্রতিষ্ঠানটিকে বাংলার ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অংশ লাল-সবুজের আদলে কোচ প্রস্তুতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির নির্ধারিত কারখানায় কোচগুলো প্রস্তুত করা হয়েছে। মেট্রোরেলের ট্র্যাক নির্মাণ শেষ হওয়ার পর তাতে তৈরি কোচগুলো বসিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হবে। এরপর চলাচল শুরু করবে স্বপ্নের মেট্রোরেল।
ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানির একজন কর্মকর্তা বলেন, মেট্রোরেলের প্রকল্প মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০২৪ সাল পর্যন্ত। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন ২০২০ সালের মধ্যে প্রকল্পের পুরো কাজ শেষ করার জন্য। সে অনুযায়ী কাজ চলছে। আমাদের দেশের পাশাপাশি জাপানেও এর কাজ চলছে। আমাদের টার্গেট অনুযায়ী আমরা তাদেরকে ওয়ার্ক প্ল্যান দিয়েছি। সে অনুযায়ী তারা কাজ করছে। কোচ নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ। এখন পরিদর্শন ও পর্যালোচনার কাজ চলছে। এগুলো অপারেট করার জন্য আমাদের লোকজনকে ট্রেনিং দেওয়া হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মেট্রোরেলের কোচগুলো হবে অত্যাধুনিক সময়োপযোগী। প্রতিটি কোচ হবে স্টেইনলেস স্টিলের তৈরি এবং শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। এতে ছয়টি বগি থাকবে, যাত্রী ধারণক্ষমতা হবে ১ হাজার ৭৩৮। বগির উভয় পাশে থাকবে চারটি দরজা। ট্রেনে সিটের ধরন হবে লম্বালম্বি। প্রতি ট্রেনে প্রতিবন্ধীদের জন্য থাকবে দুটি হুইল চেয়ারের পাশাপাশি রাখার ব্যবস্থা। এ ছাড়া থাকবে স্মার্টকার্ড টিকেটিং পদ্ধতি।
প্রকল্প সূত্র জানায়, উত্তরা-মতিঝিল পর্যন্ত ২০ দশমিক ১ কিলোমিটার দীর্ঘ মেট্রোরেল পথে ৭৭০টি স্প্যান বসবে। পুরো পথে থাকবে ১৬টি স্টেশন। এ পথে ১৪ জোড়া ট্রেন চলাচল করবে। প্রতিটি ট্রেন এক হাজার ৬৯৬ জন যাত্রী বহন করতে পারবে। এর মধ্যে ৯৪২ জন বসে এবং ৭৫৪ জন দাঁড়িয়ে থাকতে পারবেন। ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার গতিসম্পন্ন মেট্রোরেল ৩৭ মিনিটে উত্তরা থেকে মতিঝিল পৌঁছাবে। প্রতি চার মিনিট অন্তর ট্রেন ছেড়ে যাবে। উভয় দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী চলাচল করতে পারবে।
দ্বিতল ভবনের সমান উচ্চতার প্রতিটি স্টেশনের নিচতলায় থাকবে টিকিট ঘর। প্রবেশ পথ হবে স্বয়ংক্রিয়। স্টেশনগুলো হচ্ছে- উত্তরা উত্তর, উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর-১১, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ সচিবালয় ও মতিঝিল।
প্রকল্প সূত্র জানায়, উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত এবং আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত দুটি অংশে ভাগ করে মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। চলতি বছরের মধ্যে উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশের মেট্রোরেল এবং স্টেশন নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
প্যাকেজ-৩ ও ৪-এর আওতায় উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট ও ৯টি স্টেশন নির্মাণকাজ চলছে। টেস্ট পাইল, চেক বোরিং এবং মোট ৭৬৬টি পাইল ক্যাপের মধ্যে এখন পর্যন্ত ২৩৫টির নির্মাণ কাজ শেষ। এছাড়া মোট ৪৪৮টি পিয়ার হেডের মধ্যে ৮৮টি এবং ৪ হাজার ৫৭৭টি প্রিকাস্ট সেগম্যান্টের মধ্যে ৬১৭টির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। দৃশ্যমান হয়েছে ভায়াডাক্ট। কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী চলতি বছরের ৩০ জুন এ প্যাকেজের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। এর বাস্তব অগ্রগতি ২৪ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং আর্থিক অগ্রগতি ২৫ দশমিক ১৪ শতাংশ। চলতি বছরের শেষ থেকে জনগণ যানজট নিরসনে নির্মিত এই প্রকল্পের সুফল পাবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এছাড়া মেট্রোরেলের আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত বাকি অংশের কাজও চলছে। ২০২০ সালের মধ্যে প্রকল্পের পুরো কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। পুরো প্রকল্পটি আটটি প্যাকেজের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হচ্ছে। এর মধ্যে প্যাকেজ-১ এর কাজ শতভাগ শেষ হয়েছে। প্যাকের-২ এর কাজ শেষ হয়েছে ২২ দশমিক ৪৪ শাতংশ। প্যাকেজ ৩ ও ৪ এর কাজ শেষ হয়েছে ৩০ দশমিক ৩৭ শতাংশ। আর প্যাকেজ ৫ ও ৬ এ রয়েছে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেলের কাজ। এ অংশের কাজও ২ দশমিক ৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। প্যাকেজ-৭ এর কাজ শেষ হয়েছে ৭ শতাংশ এবং প্যাকেজ ৮ এর কাজ শেষে হয়েছে ১৩ শতাংশ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।