Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চীনের যুদ্ধ সক্ষমতা ভারতের চেয়ে এগিয়ে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

পিপলস লিবারেশান আর্মি (পিএলএ) স¤প্রতি তাদের বাহিনীর আকার ৫০ শতাংশ কমিয়ে আনার যে ঘোষণা দিয়েছে, তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং যে কাঠামোগত রূপান্তরের ঘোষণা দিয়েছিলেন এবং ২০১৫ সালে যে সামরিক সংস্কারের ঘোষণা দেয়া হয়েছিল, তারই ধারাবাহিকতায় এই ঘোষণা এসেছে। চীনের সামরিক শক্তির গঠন কাঠামো এবং আচরণ উল্লেখযোগ্য হারে বদলে গেছে। বাহিনীর কাঠামোতে পরিবর্তন আনার জন্য যে আমলাতান্ত্রিক ও প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিরোধ ছিল, সেটার সাথে মিল রেখেই বাহিনীর আকার কমিয়ে আনা হচ্ছে। চীনের সামরিক বাহিনীর উদ্দেশ্য হলো প্রতিকূল শক্তিগুলোকে পরাজিত করা, সক্রিয় যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া নয়। সক্রিয় যুদ্ধের প্রশ্ন না থাকলে, চীন স্বল্প খরচে প্রতিপক্ষকে ব্যাপক চাপে রাখাটাকেই পছন্দ করবে। সঙ্ঘাত ও রণকৌশলের মধ্যে ভারসাম্য রাখাকেই এখানে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। সেই হিসেবে চীনা সেনাবাহিনী অনেকটা দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের মডেল অনুসরণ করছে। নীতিনির্ধারকরা বাহিনীকে ঢেলে সাজানোর উপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধোত্তর সময় পিএলএ যে যুদ্ধের সক্ষমতা দেখিয়েছে, সেটা তাদের নেতৃবৃন্দকে আরেকটি বিষয়ের দিকে মনোযোগ কেড়েছে, বিশেষ করে দেং শিয়াওপিংকে। সেটা হলো প্রাণক্ষয় এড়াতে প্রয়োজনে যুদ্ধ থেকে সরে আসা। চীন যে সামরিক পুনর্গঠন কৌশল গ্রহণ করেছে, সেটা এশিয়া-প্রশান্ত অঞ্চল এবং বিশেষ করে ভারতের জন্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। জনবল কমিয়ে এনে এবং অস্ত্রশক্তি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাড়িয়ে ভারতের বিরুদ্ধে যে কোন শক্ত যুদ্ধে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবে পিএলএ। এ ধরনের শক্তির মোকাবেলা করাটাই নয়াদিল্লীর জন্য এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ। ভারত যে মুহূর্তে তাদের সামরিক বাহিনীকে আধুনিকায়নের অসম চেষ্টা চালাচ্ছে, এ অবস্থায় তাদের জনশক্তি ও অস্ত্রশক্তির মধ্যে ভারসাম্যের বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে। ভারতের সেনাবাহিনী বর্তমানে জনবলের ভারে ন্যুব্জ একটি বাহিনী। এই বাহিনীকে যে সব কাজ করতে হয়, তার মধ্যে রয়েছে জঙ্গিবাদ দমন, যে কারণে তাদের পদাতিক সৈন্যের প্রয়োজন হয় বেশি। ভারতের বাহিনীর প্রধান সমস্যা হলো তাদের জনবল সমস্যা, যেটা পিএলএ সফলভাবে মিটিয়ে ফেলেছে। সে কারণেই ভারতের ২০১৯ সালের প্রতিরক্ষা বাজেটে সেনাবাহিনীর জন্য মূল বরাদ্দ অনেক সীমিত হয়ে গেছে। দ্বিতীয়ত, ২০১৪ সাল থেকে ওয়ান র‌্যাঙ্ক ওয়ান পার্সন (ওআরওপি) নীতি বাস্তবায়নের কারণে সামরিক সরঞ্জামাদি আধুনিকায়ন বা নতুন অস্ত্রাদি কেনার সুযোগ অনেক কমে গেছে। ২০১৬ সালে কম্বাইন্ড কমান্ডার্স কনফারেন্সে বক্তৃতাকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সামরিক নেতৃবৃন্দকে তাদের “বিশ্বাস, নীতি, উদ্দেশ্য ও কৌশল” পুনর্গঠনের আহ্বান জানিয়েছিলেন। তিনি গুরুত্বপূর্ণ প্রধান বিষয়গুলোর উল্লেখ করেছিলেন, যার মধ্যে রয়েছে প্রতিরক্ষা পরিকল্পনা, যৌথ তৎপরতা বৃদ্ধি, জনশক্তির ভাগাভাগি ব্যবহার, সামরিক শিক্ষার গুরুত্ব, উচ্চতর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাপনা কাঠামোর পুনর্গঠন এবং প্রতিরক্ষা ক্রয় প্রক্রিয়ার বিষয়গুলো উল্লেখ করেছিলেন। এসএএম।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ