Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অদম্য মেধাবীদের কথা ভবিষ্যতের ভাবনায় মুহূর্তে ফিকে হলো বাসন্তির উ”চ্ছ্বাস

প্রকাশের সময় : ১৪ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) উপজেলা সংবাদদাতা

মির্জাপুরের বাসন্তির উচ্ছ্বাস ফিকে হয়ে গেছে। এসএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে সেও সঙ্গীদের সঙ্গে উল্লসিত হয়েছিল। কিন্ত চরম দারিদ্র্্েযর মাঝে বেড়ে উঠা বাসন্তি ভবিষ্যতে কিভাবে লেখাপড়া করবে সে চিন্তায় তার সে উচ্ছ্বাস এখনই ফিকে হয়ে গেছে। বাসন্তি বণিকের বাড়ি মির্জাপুর পৌরসভার মির্জাপুর গ্রামে। পিতার নাম নারায়ণ চন্দ্র বণিক, মায়ের নাম কমলা বণিক। তিন বোনের মধ্যে সে সকলের ছোট। বাসন্তি এ বছর মির্জাপুর পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছে। তিন শতক বসতভিটি ছাড়া তাদের অন্য কোন সম্পদ নেই। অন্যের ফায়-ফরমায়েশ শুনে যে সামন্য আয় হয় তা দিয়েই তাদের সংসার কোন রকমে চলে। কিন্তু পিতা নারায়ণ চন্দ্র বণিক গত তিন মাস ধরে গুরুতর অসুস্থ। এখন মায়ের ফায়-ফরমায়েশ শুনে যে সামান্য আয় হয় তা দিয়েই তাদের সংসার কোন রকমে চলছে। মা কমলা রানী বণিক জানান, আর্থিক সংকটের কারণে প্রাথমিক পর্যায়ে তার লেখাপড়া বন্ধ করার চিন্তা-ভাবনা করা হয়েছিল। কিন্তু বাসন্তি মেধাবী হওয়ায় এবং সরিষাদাইড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মুক্তি রানী সাহার সহযোগিতায় প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় সে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পায়। পরবর্তীতে সে মির্জাপুর পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে অষ্টম শ্রেণিতেও ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পায়। ওই বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করার সময় মেধাবী বাসন্তিকে বিভিন্ন সময় কাগজ-কলমসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম দিয়ে তাকে সহযোগিতা করেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এছাড়া ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক হরেকৃষ্ণ সরকার, খুশি মোহন সরকার এবং নূরুল ইসলাম এই তিন শিক্ষক তাকে বিনা বেতনে পড়িয়েছেন। লেখাপড়ার ফাঁকে ফাঁকে সে নিজেও বাচ্চাদের লেখাপড়া করিয়ে সামান্য আয় করতো। এভাবেই বাসন্তি লেখাপড়া করে এসএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পায়। বাসন্তি ইচ্ছা ভাল কোন কলেজে ভর্তি হয়ে উচ্চ শিক্ষা লাভের। কিন্তু আর্থিক সংকটে তার আর লেখাপড়া হবে কি না সে চিন্তায় বাসন্তি উদ্বিগ্ন। মির্জাপুর পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সুলতান উদ্দিন আহমেদ ও সহকারি প্রধান শিক্ষক হরেকৃষ্ণ সরকার জানান, বাসন্তি অত্যন্ত মেধাবি হওয়াতে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তার পরীক্ষার ফিসহ সমস্ত খরচ বহন করে। তাকে একটু সহযোগিতা করলে সে ভবিষ্যতে আরও ভাল ফলাফল করবে বলে তারা মনে করেন। উচ্চ শিক্ষ গ্রহণ করে বাসন্তি ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অথবা সরকারি কর্মকর্তা হতে চায়। বাসন্তির এই প্রত্যাশা কী পূরণ হবে?



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অদম্য মেধাবীদের কথা ভবিষ্যতের ভাবনায় মুহূর্তে ফিকে হলো বাসন্তির উ”চ্ছ্বাস
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ