Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নাজিরপুরে অবৈধ গাইড বইয়ে সয়লাব

নাজিরপুর (পিরোজপুর) থেকে উথান মণ্ডল | প্রকাশের সময় : ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৬ এএম

পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অবৈধ নোটবই ও চুক্তিবদ্ধ গাইড বই ধরিয়ে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার গোপন তৎপরতা আবারও শুরু হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে অভিজ্ঞজন, বিদ্যানুরাগী, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

এ ব্যাপারে উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামান করা হয়েছে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অভিভাবক ও সচেতন মহলের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বা নির্ধারিত বিষয়ের কতিপয় শিক্ষক বেশ কয়েকটি প্রকাশনীর সাথে গোপনে চুক্তিবদ্ধ হয়ে মোটা টাকার বিনিময়ে শিক্ষার্থীদেরকে নিম্ন মানের বা নির্ধারিত বই কিনতে বাধ্য করছে। শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের বলছেন পরীক্ষায় ঐ বই থেকেই প্রশ্ন করা হবে। শিক্ষকদের এমন আশ্বাসে বই কিনতে বাধ্য হচ্ছে শিক্ষার্থী অভিভাবকরা। শিক্ষকরা প্রতি ক্লাসে ক্লাসে চুক্তিবদ্ধ প্রকাশনির দেওয়া সিলেভাস বুকলিস্ট শিক্ষার্থীদের হাতে হাতে দিয়ে ঐ প্রকাশনির বই কিনতে হবে বলেই বাধ্য করা হচ্ছে।

সরেজমিন ঘুরে বিভিন্ন লাইব্রেরী, প্রতিষ্ঠান প্রধান অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায় উপজেলার দীঘিরজান মাধ্যমিক স্কুল এন্ড কলেজ, নাজিরপুর বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কবিরাজ বারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, হোগলাবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পঞ্চগ্রাম সম্মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, গিলাতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বাবুরহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়, শাখারীকাঠী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, হাজি আবুদল গণি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পলাশ ডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও দীর্ঘা ইউনিয়ন একাডেমী মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ উপজেলার অধিকাংশ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অগ্রযাত্রা, আদিল,জুপিটার, পাঞ্জেরী, লেকচার, ও গ্লাক্সি প্রকাশনির বই স্কুলে ধরা হচ্ছে। এসব স্কুলগুলোর সাথে চুক্তি বদ্ধ হয়ে শিক্ষার্থীদের বই কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধীক অভিভাবক ও শিক্ষক জানান এখন গ্রাম পর্যন্ত শিক্ষকরা বইয়ের ব্যবসায় জরিয়ে পরছেন। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। আমরা প্রতিবাদ করেও কোন কাজ হচ্ছে না। তারা উপজেলা প্রশাসনকেও ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করছেন। নাজিরপুর উপাজেলার প্রাইমারী পর্যায়ে প্রাইমারি শিক্ষা অফিসার ও সহকারি শিক্ষা অফিসারদের অগ্রযাত্রা প্রকাশনি বিরাট অংকের টাকা দিয়ে নাজিরপুর উপজেলায় অগ্রযাত্রা বইয়ের ভিতর থেকে যে কোন একটি মডেল প্রশ্ন সরাসরি প্রশ্নপত্র হিসাবে তুলে ধরার অভিযোগ রয়েছে। শিক্ষার্থীরা বাধ্য হয়ে অগ্রযাত্রা গাইড বইয়ের প্রতি ঝুকে পরছে। এ ব্যাপারে দিঘীরজান মাধ্যমিক স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক সহ কয়েকটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের সাথে কথা বললে তারা জানান আমাদের কোন প্রকাশনির সাথে চুক্তি হয়নি বলে দাবি করেন। এবছর নাজিরপুরে সমিতির কার্যক্রম সচল না থাকায় বই ধরার ব্যপারে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। কোন প্রতিষ্ঠান চুক্তিবদ্ধ হলে সেটি তারা নিজ দায়ীত্বে করবেন। শিক্ষার্থীরা বই কিনলে বা প্রাইভেট শিক্ষকদের কথায় বই কিনলে সেটি তাদের নিজস্ব ব্যপার।

এ ব্যপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মাহিদুল ইসলাম জানান, গাইড বইয়ের ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের পত্রের প্রেক্ষিতে সকল বিদ্যালয়কে গাইড বই ব্যবহার না করতে চুড়ান্ত নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে। কেউ প্রসাশনের নাম ভাঙালে সেটি স্রেপ ভাওতাভাজী মাত্র। ইতোমধ্যে আমরা প্রত্যেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে গাইড বই ব্যবহার না করতে মৌখিকভাবে জানিয়েছি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অবৈধ গাইড বই
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ