Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নামাজের রুকনসমূহের শরয়ী দর্শন ও হেকমত

মুফতি ইবরাহীম আনোয়ারী | প্রকাশের সময় : ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

প্রশ্ন: নামাযে আল্লাহু আকবার বলেই নামায শুরু করতে হয় কেন?
উত্তর: আল্লাহু আকবার এর অর্থ হচ্ছে, আল্লাহ সবার বড়। আর পুরা নামাযের উদ্দেশ্য হচ্ছে, বান্দা নামাযের প্রতিটি কাজের মাধ্যমে আল্লাহর বড়ত্বের বিপরীতে নিজের দুর্বলতা এবং অক্ষমতার প্রকাশ ঘটাবে। এজন্যই নামায শুরু করার আগ থেকেই আল্লাহ বলে দিয়েছেন, তোমাকে এই পজিশনের ওপর নামায পড়তে হবে। অর্থাৎ আল্লাহু আকবার যেন নামাযের মূল পয়েন্ট বা হেডলাইন। (তারগীব)

প্রশ্ন : তাকবীরে তাহরীমা বা আল্লাহু আকবার বলার সময় কানের লতি বরাবর হাত ওঠাতে হয় কেন?
প্রথম উত্তর : আরবরা যখন কোন বস্তু থেকে নিজেকে সম্পূর্ণ সম্পর্কমুক্ত হিসেবে প্রকাশ করতে চায়, তখন তারা হাতকে কানের লতি বরাবর উঠিয়ে নেয়। যেমন হযরত আয়েশা রা. এর প্রতি কলঙ্কলেপনের অপচেষ্টা করার ঘটনা সম্পর্কে যখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত যয়নব রা. থেকে জানতে চাইলেন, যে আয়েশা সম্পর্কে তোমার কী ধারণা বল। তখন হযরত যয়নব রা. উভয় হাতকে কানের লতি পর্যন্ত উঠিয়ে বললেন- যতদূর আমি জানি, এই ঘটনায় হযরত আয়েশা রা. সম্পূর্ণ নিষ্পাপ।

ঠিক এভাবে বান্দা যখন আল্লাহু আকবার (আল্লাহ সবার বড়) এর মৌখিক স্বীকারোক্তি দিয়ে নামাযে দাঁড়ায়, তখন হাতকে কানের লতি পর্যন্ত উঠিয়ে আল্লাহর কথিত শরীকদের থেকে নিজেকে সম্পূর্ণ সম্পর্কহীন হিসেবে প্রকাশ করে।

দ্বিতীয় উত্তর: মানুষ যখন সাগর-নদী ইত্যাদিতে পড়ে ডুবে যেতে থাকে, তখন স্বীয় হস্তদ্বয় উপরের দিকে তুলে দেয়। হাতে এমন কিছু পাওয়ার আশায় যার মাধ্যমে সে প্রাণ রক্ষা করতে পারবে। তদ্রুপ বান্দা যখন আল্লাহু আকবার বলে, তখন নিজেকে নাফরমানী এবং পাপের সাগরে ডুবন্ত মনে করে ওপরের দিকে হাত ওঠায় এবং বলে, প্রভু হে! আমি তো গুনাহে নিমজ্জিত। যদি তোমার কুদরতি হাতের পরশ পাই এবং তুমি আমার হাত ধর, আমি গুনাহের সাগরে ডুবে যাওয়া থেকে বেঁচে যাব। অর্থাৎ হাত উঠিয়ে বান্দা যেন আল্লাহর সামনে নিজের অসহায়ত্ব এবং দুর্বলতাকেই প্রকাশ করে।

প্রশ্ন : নামাযে বড় আওয়াজ এবং ছোট আওয়াজে কুরআন পড়ার কি রহস্য?
নামাযের মধ্যে ইমাম সাহেব সভাপতির পজিশনে থাকেন। আর তার কেরাত সভাপতির ভাষণের ভূমিকায় থাকে। এজন্যই তো ইমামতির হকদার হওয়ার জন্য বড় কারী হওয়াও একটা শর্ত আছে, যাতে জামাতের মধ্যে অধিক হারে কুরআনের প্রচার হয়।

যোহরের সময় যেহেতু সাধারণত মানুষের কাজ-কর্মের সময়, তাই সব মানুষ এই সময় নামাযে উপস্থিত হয়না। তাই যারা উপস্থিত হয়েছে তাদের শুধু ইমামের অনুসরণ করার হুকুম করা হল। আছরের সময়ও অধিকাংশ মানুষ কাজে ব্যস্ত থাকে, তাই সময়টিও ভাষণ দেওয়ার উপযুক্ত নয়। মাগরিবের সময় অধিকাংশ মানুষ ঘরে ফিরে আসে এবং মোটামুটি তাদের কাজ শেষ হয়ে যায়। তবে অনেক মানুষ দূরত্বের কারণে রয়ে যায়। এজন্য এসময় খুব অল্প পরিমাণে কুরআন প্রচার করা হয়। যেমন, সূরা আল-কদর থেকে নাস পর্যন্ত যে ছোট ছোট সূরাগুলো আছে, সেগুলো থেকেই পাঠ করা হয়। তদুপরি সারাদিনের ক্লান্তি আর অবসাদ ও এটাই চায় যেন লম্বা কেরাত পড়া না হয়। এজন্য মাগরিবের নামাযটাও খুব সংক্ষিপ্ত করা হল এবং হাদিসে কেরাতও ছোট ছোট পড়তে বলা হয়েছে। যাতে এশার পূর্বে খানাপিনা করে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতে পারে। এশার সময় সবাই উপস্থিত থাকে। এজন্য দীর্ঘ ভাষণ (কেরাত) দান করার মত সময় অবশ্য আছে, তবে যেহেতু রাতের সময়, আবার অনেক দুর্বল মানুষও সেখানে উপস্থিত হয়, ঘুমের সময়ও হয়ে আসছে, অনেকে আবার তাহাজ্জুদ পড়ার জন্য শেষ রাতে উঠবে- এসবের কারণে মাগরিবের সময়ে পড়া সূরাগুলো থেকে কিছুটা বড় সূরাগুলো (অর্থাৎ সূরা বুরুজ থেকে সূরা ইকরা পর্যন্ত) থেকে পাঠ করতে বলা হয়েছে। এসব সূরায় কিছু বড় আর কিছু ছোটও আছে- সময়ের চাহিদা অনুযায়ী সভাপতি (ইমাম) সাহেব সেখান থেকে নির্বাচন করে নিবেন। ফজরের সময় মানুষ বিশ্রাম থেকে ফারেগ হয়ে ফুরফুরে মেজাজে থাকে। আর প্রায় সব লোক কেন্দ্র বা মসজিদে গিয়ে উপস্থিত হয়। এজন্য এখন সভাপতি অর্থাৎ ইমাম সাহেব প্রাণ খুলে দীর্ঘ ও উচ্চ আওয়াজে কুরআনের প্রচার করতে পারেন। সূরা হুজুরাত থেকে নিয়ে সূরা বুরুজ পর্যন্ত যেটা ইচ্ছা পড়বেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো কখনো ফজরের নামাযে পুরো সূরা বাকারা (প্রায় আড়াই পারা) তেলাওয়াত করতেন। হযরত উসমান রা. অধিকাংশ সময় ফজরের নামাযে সূরা ইউসূফ তিলাওয়াত করতেন।

প্রশ্ন : নামাযের মধ্যে হাত বেঁধে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় কেন?
উত্তর : মানুষ কৃত পাপকর্মের কারণে আল্লাহর কাছে অপরাধী আর নামায হল দরখাস্ত যা এই অপরাধী ক্ষমা প্রার্থনা করার লক্ষ্যে আল্লাহর উচ্চ আদালতে পেশ করল। জামাতের সাথে নামায পড়ার অর্থ, উকিলের মাধ্যমে (ইমাম সাহেব) আরযি পেশ করা আর একলা নামায পড়া মানে, স্বয়ং আদালতে ইলাহীতে দরখাস্ত পেশ করা। যেহেতু এখন জাস্টিস স্বয়ং রাব্বুল আলামীন সামনে উপবিষ্ট আছেন। অপরাধীর মোকাদ্দামার শুনানীও হল। এমন অবস্থায় অপরাধীর জন্য জরুরী হল, সে হাত বেঁধে নিছে দৃষ্টি ফেলে দাঁড়িয়ে থাকবে, যাতে তার এই অসহায় অবয়ব দেখে পরম দয়ালূ প্রভুর অন্তরে রহম সঞ্চারিত হয় এবং জাহান্নামের কঠিন শাস্তি থেকে তাকে খালাসী দিয়ে দেন।


প্রশ্ন: নামাযের মধ্যে সূরা ফাতিহা পড়তে হয় কেন?
উত্তর: হাকীমুল উম্মত মাওলানা আশরাফ আলি থানভী রহ. বলেন, প্রকৃত পক্ষে সূরা ফাতিহা হচ্ছে আল্লাহর শিখিয়ে দেওয়া দরখাস্তের রূপ। এতে ন¤্রতার সব দিকই আছে । আমরা জানি, নামায মানে প্রভুর আদালতে হাজিরা দেওয়া। এখন কোন ব্যক্তি যদি কোন দরখাস্ত ছাড়া আদালতে যায়। সে তো কিছুই পাবে না। অথবা দরখাস্ত পেশ করল কিন্তু তা বিচারকের মান অনুযায়ী হয়নি বা দরখাস্তে সব কথা আসেনি, তখনও আদালতে আসাটা কোন ফল দিবে না। আল্লাহর দরবারে দরখাস্ত করার সময় ওপরের সব বৈশিষ্ট্যের প্রতি লক্ষ্য রাখা মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়, তাই সূরা ফাতিহা নাযিল করে দরখাস্তের বিষয় আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন। তাই নামাযে সূরা ফাতিহা পড়তে হয়।

প্রশ্ন : রুকু করা ফরয কেন?
উত্তর : রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যখন নামাযী নামায পড়ার জন্য দাঁড়ায় তখন তার সমস্ত গুনাহ একত্রিত করে স্তুপাকারে তার মাথার ওপর রেখে দেওয়া হয়। যখন রুকু করে তখন সমস্ত গুনাহ মাথা থেকে পড়ে যায়। তথা মাফ হয়ে যায়। (কানযুল উম্মাল)

প্রশ্ন : রুকু দ্বারা যদি সব গুনাহ মাফ হয়ে যায় তাহলে সিজদার কী প্রয়োজন?
উত্তর : আল্লাহর দরবারে দাঁড়িয়ে থাকা এবং পাপসমূহ মাফ হয়ে যাওয়ার কারণে মানুষের মনে একটি বিশেষ অবস্থার সৃষ্টি হয়, আল্লাহর নৈকট্যের প্রভাব, অন্তরের প্রশান্তি অর্জিত হয়। এজন্য প্রাকৃতিকভাবে মানুষ অনুধাবন করে যে, যখন দূর থেকে (রুকু দ্বারা) হাজিরা দেওয়ার কারণে এই অবস্থা হয়েছে তাহলে (সিজদা দ্বারা) কাছ থেকে হাজিরা দিলে এই নূরানী অবস্থা আরো অনেক গুণে বৃদ্ধি পাবে। তাই তার মন কাছ থেকে হাজিরা দেওয়ার প্রতি তাকে উদ্ধুদ্ধ করে। তাই সিজদায় লুটিয়ে পড়ে। কিতাবে আছে- সিজদাকারীরা আল্লাহর কদমের ওপরই সিজদা করে। অতএব সিজদা করা মানেই আল্লাহর অতি নিকটে চলে যাওয়া। (জামে সগীর)

প্রশ্ন : প্রতি রাকাতে সিজদা ২টি করতে হয় কেন?
প্রথম উত্তর : কারণ, প্রথম সিজদা করার পর মানুষ পরিপূর্ণ গুণ অর্জন করে ফেলে অর্থাৎ প্রভুর বিশেষ দরবারে প্রবেশ করে। এই বিশেষ নৈকট্য অর্জন করার দরুন অহংকারের একটা আশঙ্কা থেকে যায়। এজন্য তাকে ২য় বার সিজদা করার আদেশ দেওয়া হয় যেন অহংকার তাকে ছুঁতে না পারে। অহংকার করার কোন যোগ্যতাই যে তার নেই,

আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন- মাটি থেকে তোমাদের সৃষ্টি করেছি আর মাটিতেই তোমাদের ফিরিয়ে নিয়ে যাব। (সূরা ত্বহা, আয়াত ৫৫)
আর নিজের মূল সম্পর্কে যার ধারণা থাকে, সে কখনো অহংকারী হতে পারে না। সুলতান মাহমুদ গজনবীর গোলাম এয়াযকে যখন বিশেষ কর্মচারী নিযুক্ত করা হল, তখন এয়ায প্রতিদিন মূল্যবান পোষাক পড়তেন। সুলতান মাহমুদ তাকে বলতেন, দেখ! তুমি মাটির মানুষ এসব তোমার আসল রূপ নয়।

দ্বিতীয় উত্তর : যখন আল্লাহ তায়ালা ফেরেশতাদেরকে আদম আ. কে সিজদা করার নির্দেশ দিলেন, তখন সব ফেরেশতা সিজদায় লুটিয়ে পড়লেন কিন্তু ইবলিস সিজদা করেনি। এজন্য আল্লাহর দরবার হতে সে চিরতরে বিতাড়িত হল। ফেরেশতারা সিজদা থেকে উঠে যখন দেখলেন, সিজদা না করার কারণে শয়তান অভিশপ্ত এবং লাঞ্ছিত হয়ে গেল, তখন ফেরেশতারা প্রথম সিজদা করতে পারার শুকরিয়া স্বরূপ দ্বিতীয়বার সিজদায় লুটিয়ে পড়েন। ঐ দুই সিজদাই আল্লাহ প্রত্যেক রাকাতের জন্য নির্ধারণ করে দেন। যাতে নামাযীরা ফেরেশতাদের সেই আমলের সওয়াব অর্জন করতে পারে।

তৃতীয় উত্তর : প্রথম সিজদা আল্লাহর আনুগত্য করার জন্য আর দ্বিতীয় সিজদা আল্লাহর অভিশাপ থেকে রক্ষা পেয়ে রহমত লাভ করার জন্য।
প্রশ্ন : দ্বিতীয় সিজদার পর আবার সোজা দাড়িয়ে যাওয়ার মধ্যে হেকমত কী?
উত্তর : দুই সিজদার মাধ্যমে মানুষকে তার দুই ধরণের অবস্থা দেখানো হল। প্রথম সিজদার মাধ্যমে তাকে দেখানো হল- আমি তোমাদেরকে এই মাটি থেকে সৃষ্টি করেছি। দ্বিতীয় সিজদার মাধ্যমে বলা হল মৃত্যুর পর তোমাকে আবার এখানে ফিরে আসতে হবে। আবার এখান থেকে পুনঃজীবন দান করে তোমাকে ওঠানো হবে। এসবের স্বরণকে সতেজ করার লক্ষ্যে বান্দা আল্লাহু আকবার বলে সিজদা থেকে সটান দাঁড়িয়ে যায়।

প্রশ্ন : প্রথমে দাঁড়ানো, তারপর রুকু, পরে সিজদা এইরূপ পদ্ধতির হেতু কী?
প্রথম উত্তর : বাহ্যিক দৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে থাকাকে অহংকারের লক্ষণ মনে হয়, এজন্য রুকুর মাধ্যমে সেই অহংকারের চিকিৎসা করা হল। তারপর তাকে রুকু হতে ওঠার নির্দেশ দেওয়া হল। কারণ অহংকারীকে আল্লাহ লাঞ্ছিত এবং নীচু করে দেন। এই নিয়মের ওপর ভিত্তি করে তাকে রুকু করতে বলা হয়েছিল। আর যে ব্যক্তি নম্রতা দেখায়, তাকে আল্লাহ উঁচু করে দেন। এই জন্য তাকে আবার মাথা ওঠানোর নির্দেশ দেওয়া হল। যখন বান্দা এই রহস্য উদঘাটন করতে পারল তখন বান্দাকে রুকু করার চেয়ে বেশি নম্রতা অবলম্বন করে একেবারে সিজদায় লুটিয়ে পড়তে বলা হল। ফলে তার মান-মর্যাদা বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়ে আল্লাহর দরবারে বসার সৌভাগ্য লাভ করল। এই বসাটাকে দরমিয়ানী বা দুই সিজদার মাঝখানের বৈঠক বলা হয়। তারপর দ্বিতীয় সিজদা করতে বলা হল। ফলে দীর্ঘক্ষণ ধরে আল্লাহর দরবারে বসে থাকার অনন্য সুযোগ অর্জিত হল। পৃথিবীর বাদশাদের দরবারেও এই সুযোগ তেমন একটা আসে না। এসব নম্রতার দরুন সে আবার দাঁড়ানো অর্থাৎ উঁচু হওয়ার অনন্য গৌরবে ভূষিত হয়।
দ্বিতীয় উত্তর : অহংকারী আল্লাহর দরবারে সবসময় লাঞ্ছিত থাকে। এজন্য অহংকারের আকৃতির প্রতিও আল্লাহ চরমভাবে নাখোশ। আর কোন ব্যক্তি আল্লাহর সামনে যে পরিমাণ ঝুঁকে পড়বে এবং স্বীয় অবস্থাকে আল্লাহর সামনে অসহায়ভাবে তুলে ধরবে, আল্লাহ তার মর্যাদা সে পরিমাণ উঁচু করবে। হাদিসে আছে, যে আল্লাহর সামনে নম্রতা দেখাবে, তাকে আল্লাহ উঁচু মর্যাদা দান করবেন। নামাযের মধ্যে বান্দা প্রথমে অপরাধীর মত করে হাত বেঁধে দাঁড়িয়ে যায়, তারপর গুনাহ ক্ষমা করার জন্য রুকু করে এবং শরীরে সৃষ্টিগত সুন্দর অবস্থাকে বিকৃত করে একটি ন¤্র আকৃতি ধারণ করে। এজন্য আল্লাহ তার মর্যাদাকে উঁচু করে দেন এবং রুকু থেকে সোজা দাঁড় করিয়ে দেন। এই প্রাপ্ত মর্যাদা দেখে বান্দা রুকুর চেয়ে আরো বিনয়ী আকৃতি ধারণ করতে সিজদায় লুটিয়ে পড়ে। আল্লাহ তাকে সম্মানিত করে দরবারে বসিয়ে দেন। তখন বান্দা আবার আগের আকৃতি ধারণ করতে ২য় বার সিজদায় চলে যায়। আল্লাহ তাকে আবার উঠিয়ে সোজা দাঁড় করিয়ে দেন বা আল্লাহর দরবারে বসিয়ে দেন। এভাবে শেষ পর্যায়ে এসে তাকে ক্ষমা করে এবং জান্নাতের অংশীদার কিছুক্ষণের জন্য (নামাযের অন্য একটি সময় আসা পর্যন্ত) বিদায় দেন।

প্রশ্ন : নামায শেষ করার জন্য সালাম নির্ধারিত হল কেন?
উত্তর: এই বাক্যটি একথাই প্রমাণ করে যে, নামাযী ব্যক্তি ইতিপূর্বে এখানে ছিল না, অন্য কোথাও গিয়েছিল। এজন্য ফিরে আসা মুসাফিরদের মত তাকেও মজলিসে উপস্থিত সদস্যদের সালাম করতে হয়। এজন্যই তো ফিকাহশাস্ত্রের কিতাবসমূহে লিপিবদ্ধ আছে, সালাম ফেরানোর সময় ইমাম স্বীয় মুকতাদী এবং ফেরেশতাদের নিয়ত করবে আর মুকতাদীরা নিজের উভয় পাশের মুকতাদী, ইমাম এবং ফেরেশতাদের নিয়ত করবে।
আল্লহ তায়ালা সকলকে সুন্নতের আলোকে নামায পড়ার তাওফিক দান করুন। আমিন



 

Show all comments
  • এস. এম. আসাদুজ্জামান ২৩ আগস্ট, ২০১৯, ১২:১১ পিএম says : 0
    প্রশ্ন : নামায শেষ করার জন্য সালাম নির্ধারিত হল কেন? উত্তরে বলা হয়েছে: সালাম ফেরানোর সময় ইমাম স্বীয় মুকতাদী এবং ফেরেশতাদের নিয়ত করবে আর মুকতাদীরা নিজের উভয় পাশের মুকতাদী, ইমাম এবং ফেরেশতাদের নিয়ত করবে। এখানে নিয়ত দ্বারা কী বুঝানো হয়েছে ?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নামাজ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ