Inqilab Logo

রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শিরক ও মুশরিকদের প্রতি তীব্র নিন্দা

উবায়দুর রহমান খান নদভী | প্রকাশের সময় : ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

কোরআন মাজীদ তাওহীদের দাওয়াত প্রসঙ্গে অনেক জায়গায় এ পন্থাও অবলম্বন করেছে যে, তাওহীদের শিক্ষার প্রতি বিদ্রোহকারী মুশরিক এবং শিরকের অতি পরিণতির ব্যাপারে মানুষকে ভীতি প্রদর্শন করেছে। তাদের প্রতি আল্লাহতায়ালার অসন্তোষ ও বিরাগের কথা ঘোষণা করেছে। এ প্রসঙ্গে কোরআনের কয়েকটি আয়াত পাঠ করা যায়। সূরা নিসায় বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ ক্ষমা করবেন না এ পাপ যে, তার সাথে কাউকে শরিক করা হবে। পক্ষান্তরে তিনি ক্ষমা করবেন যাকে ইচ্ছা অন্যান্য গোনাহ।’ (সূরা নিসা: আয়াত ১১৬)।
এমনিভাবে সূরা মায়েদায় ইরশাদ করা হয়েছে, ‘এ কথা নিশ্চিত, যে কেউ আল্লাহর সাথে শরিক করবে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দিয়েছেন; আর দোজখই হলো তার স্থায়ী ঠিকানা। এসব জালেমের কোনো সাহায্যকারী ও সমর্থক নেই (যারা তাদেরকে আজাব থেকে অব্যাহতি দান করতে পারে।’ (সূরা মায়েদাহ: আয়াত ৭২)।
আর শিরক যেহেতু সম্পূর্ণ অমার্জনীয় অপরাধ এবং যেহেতু প্রত্যেক মুশরিকের জন্য জাহান্নামে জ্বলার অলঙ্ঘনীয় ফয়সালা হয়ে গেছে, তাই স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সা. এবং সমস্ত ঈমানদারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, খবরদার, কোনো মুশরিকের জন্য আল্লাহতায়ালার দরবারে মাগফেরাত ও ক্ষমার দোয়াও করবে না। আল্লাহতায়ালা এসব নাপাক জালেমের পক্ষে মাগফেরাতের দোয়াও শুনতে চান না।
এই মর্মে কোরআন মাজীদে বলা হয়েছে, ‘নবী রাসূল ও ঈমানদারদের পক্ষে মুশরিকদের জন্য মাগফেরাত ও ক্ষমার দোয়া করা উচিত নয়, যদিও তারা তাদের নিকটবর্তী হয়।’ (সূরা তাওবাহ: আয়াত ১১৩)। একই সূরায় অন্যত্র বলা হয়েছে, ‘আল্লাহর সাথে যারা শরিক স্থির করে তারা অপবিত্র।’ (সূরা তাওবাহ: আয়াত ২৮)। এ সূরাতেই ঘোষণা করা হয়েছে, আল্লাহ মুক্ত ও অসন্তুষ্ট সমস্ত মুশরিক থেকে এবং অসন্তুষ্ট তার রাসূল নিজেও।’ (সূরা তাওবাহ: আয়াত ৩)।
কোরআন মাজীদের ‘দাওয়াতে তাওহীদ’ প্রসঙ্গে যদিও খুব বেশি সংক্ষিপ্ত আলোচনা করিনি, কিন্তু তা সত্তে¡ও এ কথা সত্য যে, যা কিছু বিগত প্রবন্ধে আলোচনা করা হয়েছে, তা থেকে পাঠকবর্গ যা উপলব্ধি করতে পেরেছেন, তাকে কোরআন মাজীদের তাওহীদ সম্পর্কীয় বিবরণের সারসংক্ষেপ বলাও দুষ্কর।
আল্লাহ যাকে কোরআন বোঝার সৌভাগ্য দান করেছেন, সে লোক সরাসরি কোরআন মাজীদ সম্পর্কে গবেষণা করেই এর তাওহীদের দাওয়াতের ক্ষমতা ও শক্তি এবং এর ব্যাপকতা ও লালিত্য উপলব্ধি করতে পারে। বরং বলতে গেলে সেও যতক্ষণ এবং যে পর্যন্ত চিন্তা-ভাবনা করতে থাকবে, ততই অনুভব করতে থাকবে যে, এ পর্যন্ত আমি যা কিছু বুঝতে পেরেছি, কোরআনে তার চাইতে বহু বেশি রয়েছে। কবির ভাষায় বলতে হয়,
‘না আছে তার রূপমাধুরীর সীমা-পরিসীমা কোনো,
নাইবা সা’দীর কথার শেষ,
তৃষিতই মরে যায় তৃষ্ণাতুর, সাগর তবু
তেমনি থাকে, কভু হয় না নিঃশেষ।’



 

Show all comments
  • করিম শেখ ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ২:২৫ এএম says : 0
    তাওহিদের বিপরীত হচ্ছে শিরক। শিরক মানে অংশীদারিত্ব। ইসলামী শরিয়তে কোনো ব্যক্তি, বস্তু, শক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সত্তায় ও গুণাবলিতে, অধিকার ও মর্যাদায় অথবা ক্ষমতায় আল্লাহর সমান করাই হলো শিরক।
    Total Reply(0) Reply
  • সাদ বিন জাফর ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ২:২৫ এএম says : 0
    কোনো ব্যক্তি বা বস্তুকে আল্লাহর সমকক্ষ মনে করা বা তাঁর ইবাদাতে অন্য কাউকে শরীক করা। বড় শিরক হলো: সকলপ্রকার ইবাদাত একমাত্র আল্লাহর জন্যেই নিবেদিত; কিন্তু সে ইবাদাতে কোনো ব্যক্তি বা বস্তুকে শরীক করা বড় শির্কের অন্তর্ভুক্ত।
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃ সোহেল রাড়ি ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ২:২৫ এএম says : 0
    শিরক করতে যারা মানুষকে হুকুম দেয় অথবা বাধ্য করে তারা হলো তাগুত। যেমন ফেরাউন, সে মানুষকে শিরক করতে বাধ্য করেছে। শিরক ও তাগুত হলো হারাম। কবিরা গুনাহ। তাগুত ও শিরিকের পরিণাম হলো আল্লাহর গজব ও আজাব। এদের ঠিকানা হলো জাহান্নাম।
    Total Reply(0) Reply
  • সরল পথ ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ২:২৬ এএম says : 0
    সকলপ্রকার ইবাদাত একমাত্র আল্লাহর জন্যেই নিবেদিত; কিন্তু সে ইবাদাতে কোনো ব্যক্তি বা বস্তুকে শরীক করা বড় শির্কের অন্তর্ভুক্ত। যেমন আল্লাহ ছাড়া কোনো পীর-ফকীর বা ওলী-আওলিয়াদের কাছে সন্তান চাওয়া, ব্যবসায়-বাণিজ্যে আয়-উন্নতির জন্যে অথবা কোনো বিপদ থেকে মুক্তি লাভের উদ্দেশ্যে কোনো পীর-ফকীরের নামে বা মাযারে মান্নত দেওয়া, সাজদাহ করা, পশু যবেহ করা ইত্যাদি বড় শিরক বলে গণ্য হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • রিদওয়ান বিবেক ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ২:২৬ এএম says : 0
    এ শিরকের কারণে তাগুতের সঙ্গে আল্লাহর প্রেরিত সব নবী রসুলের সংঘাত ও সংঘর্ষ হয়েছে। কারণ তারা আল্লাহর সঙ্গে শিরক করত অথবা নিজেরা তাগুত হয়ে অন্যকে আল্লাহর সঙ্গে শিরক করার হুকুম দিত অথবা শিরক করতে বাধ্য করত। আল্লাহতায়ালা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলে দিয়েছেন, শিরক করার পর যে ব্যক্তি তা থেকে তওবা করবে না, তিনি তাকে ক্ষমা করবেন না।
    Total Reply(0) Reply
  • সরল পথ ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ২:২৬ এএম says : 0
    আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর সঙ্গে শরিক করার পাপ ক্ষমা করেন না। এতদ্ব্যতীত অন্যান্য অপরাধ তিনি ক্ষমা করেন, যার জন্য তিনি ইচ্ছা করেন (সূরা নিসা, ৪৮)।
    Total Reply(0) Reply
  • তাসলিমা বেগম ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ২:২৭ এএম says : 0
    শিরক সবচেয়ে বড় গুনাহ হিসেবে বিবেচিত, এতে আল্লাহর গুণাবলি ও বৈশিষ্ট্যে সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে সৃষ্ট বস্তুর তুলনা করা হয়। কেননা যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করল সে প্রকারান্তরে তাকে আল্লাহর অনুরূপ ও সমকক্ষ বলে স্থির করল।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইসলাম

৩ মার্চ, ২০২৩
২ মার্চ, ২০২৩
১ মার্চ, ২০২৩
২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন