পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
হাইকোর্টের নির্দেশে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)’র মামলার ভুল আসামি টাঙ্গাইলের জাহালম মুক্তি পেয়েছেন। গত রোববার দিবাগত রাত ১২টা ৫৬ মিনিটের দিকে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ থেকে তিনি মুক্তি পান। রাতেই তিনি ভাই বড় ভাই শাহনূর মিয়ার সাথে গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন।
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা জানান, রাত ১২টা ৪৬ মিনিটে উচ্চ আদালতের আদেশের কপি এ কারাগারে পৌঁছে। পরে যাচাই বাছাই শেষে রাত ১২টা ৫৬মিনিটের দিকে জাহালমকে মুক্তি দেয়া হয়। তিনি আরো জানান, ২০১৬ সালের ২৭ মে জাহালমকে এ কারাগারে পাঠানো হয়েছিল।
মুক্তি লাভের পর এক প্রতিক্রিয়ায় জাহালম বলেন, দুদুকের ভুলে তিনি বিনা কারণে তিন বছর জেল খেটেছেন। তাই দুদকের কঠিন বিচার চাই। সঠিক তদন্ত করে যেন আসামি ধরা হয় এই আহবান জানান তিনি। এসময় তার ভাই সাহানুর মিয়া বলেন, যাদের ভুলের কারণে তার ভাই জেল খেটেছে তাদের বিচার এবং ক্ষতিপূরণ চাই। কারা ফটক থেকে ভাই জাহালম বেরিয়ে আসায় খুশিতে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। পরে একটি মাইক্রোবাস দিয়ে তিনি কারা এলাকা ত্যাগ করেন।
জানা গেছে, গত রোববার হাইকোর্ট দুদকের দায়ের করা মামলায় কারাগারে থাকা ভুল আসামি টাঙ্গাইলের জাহালমকে সব মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন। হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। একইসঙ্গে তাকে রবিবারই মুক্তি দিতে ডিআইজি প্রিজন্সকে নির্দেশ দেন উচ্চ আদালত।
এদিকে, আনন্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে টাঙ্গাইলের জাহালমের বাড়িতে। কারাগার থেকে ভাই শাহানূরের সঙ্গে ভোররাত ৪টায় গ্রামের বাড়িতে আসেন জাহালম। এসময় রাতের আঁধারে মোবাইলের আলোয় জাহালমকে দেখেই ছুটে আসেন মা মনোয়ারা। কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনিসহ স্বজনরা।পরে ছেলের কপালে চুমু দিয়ে আক্ষেপ করে বলেন, ‘কার মাথায় বাড়ি দিছিলাম যে আমার এত বড় সর্বনাশ করছিল।’
এ সময় আহাজারি করেন জাহালমের ভাই-বোন ও স্বজনরা। পরে কারামুক্ত জাহালমকে দুধ দিয়ে গোসল করিয়ে ঘরে তোলেন। অপরদিকে গতকাল সকাল থেকেই জাহালমকে একনজর দেখতে ভীড় করে গ্রামের মানুষ। ধুবুরিয়া গ্রাম ছাড়াও আশপাশের গ্রামের লোকজনের ঢল নামে জাহালমের বাড়িতে। জাহালম ও তার পরিবারের সদস্যরা অমানবিক এই ঘটনার বিচার এবং ক্ষতিপুরণ দাবি করেছে প্রধানমন্ত্রীর কাছে। জাহালম বলেন, জেলে অনেক কষ্ট করেছি। অপরাধ না করেই জেল খেটেছি এটা মানতে কষ্ট পেয়েছি। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই ঘটনার বিচার চাই। সেই সাথে আমাকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেয়ার আবেদনও জানান।
এর আগে, গত ২৮ জানুয়ারি ২৬ মামলায় ভুল আসামি জেলে থাকার অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি ও মামলার বাদীসহ চারজনকে তলব করেছিলেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে একটি পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন উপস্থানের পর স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে বিচারপতি নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ ওই আদেশ দেন। দুদকের চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি, মামলার বাদী, স্বরাষ্ট্র সচিবের একজন প্রতিনিধি ও আইন সচিবের একজন প্রতিনিধিকে উপস্থিত থেকে এ ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে গত রোববার সকালে ওই চারজন হাইকোর্টে হাজির হন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।