লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলা সীমান্তের ওপারে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নিহত বাংলাদেশি যুবক আশাদুল ইসলামের (২৮) লাশ ফেরত পাওয়া গেছে। গত শনিবার ভোরে আশাদুল নিহত হন। বিএসএফ আজ সোমবার সকালে তার লাশ ফেরত দিয়েছে।
আশাদুল উপজেলার বাউরা ইউনিয়নের নবীনগর গ্রামের মতিয়ার রহমানের ছেলে। তিনি দুই ছেলে ও মেয়ের বাবা।
পাটগ্রামের বাউরা ইউনিয়নের জমগ্রাম ও ভারতের কুচিবাড়ি সীমান্তের সড়কে আশাদুলের লাশ হস্তান্তর হয়। ভারতের কোচবিহার জেলার মেকলিগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুবাস চন্দ্র রায় পাটগ্রাম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জিল্লুর রহমানের কাছে লাশ হস্তান্তর করেন। এ সময় কোচবিহারের রানীনগর ১৪৩ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের নিউ কুচলিবাড়ি বিএসএফের কোম্পানি কমান্ডার দীপক জয় সোয়াল ও রংপুর-৫১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের ঠ্যাংঝারা কোম্পানি সদরের কমান্ডার নায়েক সুবেদার শাহ মো. রফিকুল ইসলামসহ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরজু মো. সাজ্জাদ হোসেন জানান, আশাদুলের লাশ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
লাশ হস্তান্তরের সময় নিহতের স্ত্রী সোনালি বেগম (২২) কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘ওমাতো (আশাদুল) কোনোদিন ভারতে যায় নাই। বাড়ির পাশে আরেক বন্ধু শুক্রবার রাতে ডাকে নিয়ে যায়। আর পরে দিন সকালে ওই বন্ধু মুবাইলে (মুঠোফোন) জানান, ওমাক নাকি বিএসএফ গুলি করি মারি ফেলাইছে।’
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার দিবাগত রাতে যে কোনো সময় বাউরা ইউনিয়নের ডাঙ্গাটারী (মেছেরঘাট) গ্রাম সীমান্তের ৮০২ নম্বর মেইন পিলারের ১০ কাছে দিয়ে গরু পারাপারকারীর (রাখাল) দল ভারতে ঢোকে। তারা ভারতের কোচবিহারের মেকলিগঞ্জের সীমান্তের নিউ কুচলিবাড়ি গ্রামের ভারতীয় গরু ব্যবসায়ীর কাছে গরু আনতে যায়। গরু নিয়ে ওই রাত ভোরে (শনিবার ) আবারও ওই সীমান্ত দিয়ে ফেরত আসছিল। এ সময় ভারতের কোচবিহার ১৪৩ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের নিউ কুচলিবাড়ি বিএসএফ ক্যাম্পের টহলরত বিএসএফ সদস্যরা তাদের ধাওয়া করে । এ সময় রাখাল দলের অন্য সদস্যরা পালিয়ে আসতে পারলেও আশাদুল বিএসএফের টহলদলের সদস্যদের ছোড়া গুলিতে ঘটনাস্থলে নিহত হন। পরে বিএসএফ সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে আশাদুলের লাশ নিজ ক্যাম্পে নিয়ে যায়।