বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
আগেই বড় ছেলে শাহানূরের কাছ থেকে মা মনোয়ারা জেনে গেছেন, জাহালম জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। খবর পেয়ে অপেক্ষায় মা মনোয়ারা, কখন বাড়ি ফিরবেন তার আদরের খোকা জাহালম, যাকে তিনি তিন বছর দেখেননি। রাতের অন্ধকারে ঘন কুয়াশায় মোবাইলের আলো দূর থেকে দেখে ছুটে এলেন মা মনোয়ারা। জাহালমকে দেখে হাউমাউ করে কেঁদে উঠে জড়িয়ে ধরলেন মনোয়ারা। বাড়ি থেকে কিছু দূরে ফাঁকা মাঠে কান্নার রোল...। মা মনোয়ারার আহাজারি। জাহালমের কপালে চুমু দিয়ে চিৎকার দিয়ে বলে উঠলেন, ‘কার মাথায় বাড়ি দিছিলাম যে আমার এত বড় সর্বনাশ করেছিল।’ ডুকরে ডুকরে কেঁদে চলেন মা মনোয়ারা।
মনোয়ারা যখন জড়িয়ে ধরে বিলাপ করছিলেন, তখন জাহালমকে জড়িয়ে ধরেছেন বোন শাহানা ও তাসলিমা। তারাও তখন চিৎকার করে বিলাপ করছিলেন। শাহানা বলছিলেন, ‘আমার ভাই, কোন অন্ধকারে ছিলি এত দিন।’ বাড়ির কাছে ফাঁকা মাঠে কান্নার আওয়াজ শুনে তখন দু–একজন প্রতিবেশী ছুটে আসেন জাহালমের কাছে। এরপর মা মনোয়ারাকে জড়িয়ে ধরে মাঠের আল ধরে বাড়ির উঠানে আসেন জাহালম। সেখানে আবারও জাহালমকে জড়িয়ে ধরে বুকফাটা কান্না শুরু করেন মনোয়ারা। তখন মনোয়ারা কান্নার সুরে বলতে শুরু করেন তার যত বেদনার কথা। বারবার বলতে থাকেন, ‘আমার সোনার ব্যাটা বিনা দোষে তিন তিনটা বছর জেল খাটল। আমার সোনার ব্যাটা আজ বাড়ি ফিরল।’
মনোয়ারা বললেন, ‘ব্যাটাগো জন্য জীবনভর অনেক কষ্ট করেছেন। মায়ের আহাজারি দেখে জাহালমও মা মা বলে চিৎকার করে আহাজারি করতে থাকেন। জাহালমের মুখে শুধু একটাই বুলি, ‘মাগো, মা।’ ঘুরেফিরে মনোয়ারার একটাই কথা, ‘এই জীবনে এই দৃশ্য আমি ভুলবার পারুম না। কত কষ্টে কেটেছে আমার ব্যাটার দিনরাত।’
উচ্চ আদালতের আদেশে জাহালম রোববার দিবাগত রাত একটার দিকে কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পান। আজ সোমবার ভোররাত চারটা নাগাদ টাঙ্গাইলের নাগরপুরে বড় ভাই শাহানূরকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি ফেরেন। জাহালমকে কাছে পেয়ে মা মনোয়ারা জানান, ‘মানষে আমার সর্বনাশ করেছে, আল্লাহ তাগো বিচার করো।’ এরপর জাহালমকে দুধ দিয়ে গোসল করার তার মা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।