Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বর্ষা সামনে রেখে নদী ভাঙ্গন রোধে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার: পানিসম্পদ উপমন্ত্রী

শুক্র ও শনিবার সরকারি গাড়ি ব্যবহার করি না

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০২ এএম

আগামী বর্ষাকে সামনে রেখে নদী ভাঙন রোধের বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম এনামুল হক শামীম। গতকাল রোববার সচিবালয়ের গণমাধ্যম কেন্দ্রে ‘বিএসআরএফ সংলাপ’ অনুষ্ঠানে এ কথা জানান উপমন্ত্রী। বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) এ সংলাপের আয়োজন করে।

বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি শ্যামল সরকারের সভাপতিত্বে সংলাপ অনুষ্ঠানে ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মহসীন আশরাফ উপস্থিত ছিলেন। উপমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি বর্ষাকে সামনে রেখে নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে কীভাবে রক্ষা করা যায়। আমরা ভাঙন কবলিত এলাকাগুলো চিহ্নিত করে এরপর ভিজিট করছি। প্রতিমন্ত্রী যাচ্ছেন ও সচিব সাহেব ভিজিট করছেন। জলাবদ্ধতার থেকে রক্ষা করা, হাওর এলাকায় কাজ করা হচ্ছে বর্ষাকে সামনে রেখে। তিনি বলেন, আমার দায়িত্ব নেয়ার এক মাসও হয়নি। আমি ছয়টি নদী ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছি। পরিদর্শন করার পর কাজে গতি কতটা বেড়েছে সেটাও আমি মনিটরিং করছি। এই ফেব্রæয়ারি মাসে হাওর এলাকাসহ আরও কয়েকটি স্থানে পরিদর্শন করব। মানবতার সেবা করা হবে আমাদের মূল কাজ।
উপমন্ত্রী বলেন, নোয়াখালীর নদী ভাঙন এলাকায় গিয়ে ৮৮ কোটি টাকার একটা প্রকল্প ছিল সেটা অনুমোদনের ব্যবস্থা করেছি। বর্ষার আগে জিও ব্যাগ ফেলে যাতে রক্ষা করা যায় সেখানে একটা প্রকল্প হাতে নিয়েছি। তিনি বলেন, ‘ঢাকা নারায়ণগঞ্জের ডিএনডি এলাকায় গিয়েছিলাম, আমরা টার্গেট দিয়ে দিয়েছি ১৩টি পাম্প হাউজ ৩০ এপ্রিলের মধ্যে চালু হবে। অর্থাৎ বর্ষার আগেই। এটা সেনাবাহিনীর তত্ত¡াবধানে ৫৮৮ কোটি টাকার কাজ চলছে। হাতির ঝিলেন আদলে সেখানে একটা প্রকল্প আমরা দেখে এসেছি। সেনাবাহিনী সেখানে অনেকগুলো খাল উদ্ধার করেছে।’
হাওরে বাঁধ নির্মাণ নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতির কথা শোনা যায়- এমন প্রশ্নের জবাবে এনামুল হক বলেন, আমরা আগে রোগ নির্ণয়ের চেষ্টা করতেছি। অনেক জায়গা থেকেই এই কথা আমার কানে এসেছে। আমরা দেখতেছি কোন কোন জায়গায় কাজের দ্রæততার ক্ষেত্রে অন্তরায়। সেই জায়গাগুলো আমরা কাভার করার চেষ্টা করব। দুর্নীতি বন্ধের ক্ষেত্রে কোন কোন পদক্ষেপগুলো নিলে আমরা একেবারে রুটে লেভেল পর্যন্ত যেতে পারি। এগুলো আমরা নির্ণয় করতেছি। আমরা মোটামুটি কতগুলো প্রকল্প স্টাডি করতেছি।
দুর্নীতি যে পর্যায়ের হোক না কেন, আমরা তাদের বিরুদ্ধে যদি কোন প্রমাণ আমাদের কাছে আসে তাদের বিরদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা আমরা নেব। কাজের গতি যাতে তড়িৎ হয় যাতে দুর্নীতি বন্ধ হয় সেটাকে মাথায় রেখে যে পদক্ষেপ নেয়া দরকার আমরা ইনশাআল্লাহ সেই প্ল্যানিংয়ে আছি।
উপজেলা নির্বাচনে কাদের মনোনয়ন দেয়া হবে এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, উপজেলা নির্বাচন সম্পর্কে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্দেশনা দিয়েছেন। প্রত্যেকটি উপজেলা তৃণমূলের নেতৃবৃন্দ ঐক্যমতের ভিত্তিতে একক অথবা অনধিক তিন প্রার্থীর নাম দেবেন। এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ড সবদিক বিবেচনা করে, ত্যাগ মেধা যোগ্যতা কারণ মনোনয়ন বোর্ড মাননীয় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তিনিই আসলে প্রত্যেক উপজেলার ত্যাগ মেধাবী সবাইকেই তিনি চেনেন। মনোনয়ন বোর্ড যাকে যোগ্য মনে করবে তাকেই মনোনয়ন দেবেন। পানিসম্পদ উপমন্ত্রী বলেন, ‘আশা করি সংসদ নির্বাচনের মতো বিএনপি উপজেলা নির্বাচন অংশ গ্রহণ করবে। নির্বাচনে অংশ না নিলে তারা জনগণ থেকে আরও বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।প্রধানমন্ত্রীর চা চক্রে ঐক্যফন্টের যোগ না দেয়ার বিষয়টিকে আপনি কীভাবে দেখছেন-এমন প্রশ্নের জবাবে উপমন্ত্রী বলেন, অসৌজন্যমূলক আচরণ করা বিএনপির স্বভাব। প্রধানমন্ত্রীর নিমন্ত্রণে যাননি এটা নিঃসন্দেহে অসৌজন্যমূলক। ভারত-বাংলাদেশের যৌথ নদী কমিশনের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক ২০১০ সালের পর আর হয়নি- এমন প্রশ্নের পানিসম্পদ উপমন্ত্রী বলেন,এ বিষয়ে আমি জানলাম, মন্ত্রী পর্যায়ে বৈঠকটি কত দ্রæততার সাথে করা যায় সেই বিষয়ে পদক্ষেপ নেব। এটার সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টতা আছে।
তিস্তা চুক্তির সর্বশেষ অবস্থার বিষয়ে উপমন্ত্রী বলেন, তিস্তা চুক্তির বিষয়টি শেখ হাসিনা পর্যায়ে রয়েছে...এটাও রাজনৈতিক পর্যায়ে রয়েছে আমি আশা করি বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থ সংরক্ষণ করে এই চুক্তিটি খুব দ্রæতই বাস্তবায়ন হবে। তবে আমরা মন্ত্রণালয় পর্যায়ে এটা নিয়ে এখনও বৈঠক করিনি। গঙ্গা ব্যারেজ নিয়েও আমরা কাজ শুরু করিনি। তবে পরবর্তী সময়ে এসব বিষয়ে আপডেট জানাতে পারব। শুক্র-শনিবার সরকারি গাড়ি ব্যবহার করেন না পানিসম্পদ উপমন্ত্রী
শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে সরকারি গাড়ি ব্যবহার করেন না বলে জানিয়েছেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম এনামুল হক শামীম। তিনি বলেন, আমরা সকল প্রকৌশলী ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের বলেছি দ্রæততার সাথে, সততার সাথে এবং দক্ষতার সাথে কাজ করার জন্য। কারণ আমাদের এবারের নির্বাচনী ইশতেহারের প্রথমেই বলা আছে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। আমরা সমাজ থেকে দুর্নীতি উচ্ছেদ করতে চাই। আমরা স্বচ্ছতার সাথে জবাবদিহিতার সাথে কাজ করতে চাই।
এনামুল হক বলেন, আমি নিজেও উপমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর শুক্র ও শনিবার কোন সরকারি গাড়ি ব্যবহার করি না। আমি নিজের একটি প্রাইভেট কার আছে সেটি ব্যবহার করি। আমি উপমন্ত্রী হিসেবে দুটি গাড়ি পাওয়ার কথা, আমার একটি গাড়ি হলেই চলে। সেটিও আমাকে পিক অ্যান্ড ড্রপ দেয়। সচিবালয়ে আসি এবং নিয়ে যায়, তারপর থেকেই বাসার গাড়ি ব্যবহার করি।’
তিনি বলেন, আমি যেহেতু আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আমার কাছে অনেক মেহমান আসবে। আমি বলেছি, মন্ত্রণালয় থেকে কোন চা খাওয়ানোর ব্যবস্থা নেই। আমি যতটুকু সম্ভব করি।
উপমন্ত্রী বলেন, ৭ তারিখে আমি শপখ নিয়েছি, ৮ তারিখে মন্ত্রণালয়ে এসেছি। আমি প্রাথমিকভাবে জেনেছি ৯৪টি প্রকল্প এখন চলছে। ৫ হাজার ৪২৩ দশমিক ৫৫ কোটি টাকা এখানে বরাদ্দ রয়েছে। আগামী জুনে ২৯টি প্রকল্প সমাপ্তির জন্য নির্ধারিত।
###

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গাড়ি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ