পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জাতিসংঘের জরিপ অনযায়ী, ব্যবসা সহজীকরণ স‚চকে ১৯০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৭৬তম। এক বছরের ব্যবধানে মাত্র এক ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। এই সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে নিচে। আগামী ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে এই সূচকে ৯৯তম অবস্থানে এগিয়ে আনার লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার। বিনিয়োগ না বাড়িয়ে এই লক্ষ্য অর্জন করার আর কোনও পথ খোলা নাই। তাই দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে বিনিয়োগ আনতে নানা ধরনের কৌশল খুঁজছে বিডা (বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ)।
প্রসঙ্গত প্রধানত ব্যবসা শুরুর অনুমোদন, ভবন নির্মাণের অনুমতি, বিদ্যুৎ সংযোগ, সম্পত্তি নিবন্ধন, ঋণপ্রাপ্তি, ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা, কর প্রদান, বৈদেশিক বাণিজ্য চুক্তির বাস্তবায়ন এবং দেউলিয়া হওয়া ব্যবসার উন্নয়ন সহজীকরণ এই ১০টি মানদন্ডের ওপর ভিত্তি করে ব্যবসা সহজীকরণ সূচক তৈরি করে বিশ্বব্যাংক।
জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে কীভাবে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে আরও আকৃষ্ট করা যায় সে বিষয় নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। আপাতত বিনিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় সব সেবা একই ছাদের নিচে আনতে ওয়ান স্টপ সার্ভিস (ওএসএস) চালুর কথা ভাবছে প্রতিষ্ঠানটি। এই সার্ভিস গতবছর চালু হওয়ার কথা থাকলেও তা করতে পারেনি বিডা। এই সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে কারিগরি সহযোগিতা যে কোম্পানি দেবে বিডা সবেমাত্র তাদের সঙ্গে চুক্তি করেছে। কিন্তু এ উদ্যোগও যথেষ্ট নয় বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। কারণ বিনিয়োগের সব সেবা এক ছাদের নিচে আনতে ওয়ান স্টপ সার্ভিসে সব সেবা দেওয়ার মতো সামর্থ্য ও লক্ষ্য কোনটাই নাই বিডার। আপাতত ওয়ান স্টপ সার্ভিসে পাঁচটি সেবা দেওয়ার কথা বলা হলেও তা যথেষ্ট নয়, কারণ সেবা প্রয়োজন কমপক্ষে ২০টি।
বিডা আপাতত বিনিয়োগকারীদের যে কটি সেবা দেবে সেগুলো হচ্ছে, জমির দলিল ও ইজারা চুক্তিনামা নিবন্ধন, পরিবেশ ছাড়পত্র, কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন), ভিসা সুবিধা, বিদেশিদের কাজের অনুমতি এবং বিজনেস আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (বিআইএন), নামজারি, অবকাঠামো নির্মাণের অনুমতি। বিডার কর্মকতারা জানিয়েছেন, গত ৫ জানুয়ারি থেকে ওয়ান স্টপ সার্ভিসের কিছুটা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর বাইরেও বিনিয়োগকারীদের প্রয়োজন হবে প্রকল্প নিবন্ধন, শিল্প-কারখানার গ্যাস সংযোগ, টেলিফোন ও ইন্টারনেট সংযোগ, অফিসের নিবন্ধন, ট্রেড লাইসেন্স সেবা।
বিডা বলছে, পর্যায়ক্রমে এসব সেবাও দেওয়া হবে ওয়ান স্টপ সার্ভিস থেকে। বিনিয়োগের জন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে পরিবেশের ছাড়পত্র। পরিবেশ অধিদফতর থেকে প্রকল্পের ছাড়পত্র পাওয়া অনেক কঠিন কাজ। এটি সহজ করতে বিডার পক্ষ থেকে পরিবেশ অধিদফতরকে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য অনুরোধ করে চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠির জবাবে পরিবেশ অধিদফতর বলেছে, দ্রুততার সঙ্গেই দেওয়া হবে এ ছাড়পত্র। এজন্য দরকার হতে পারে সাতদিন।
সাবেক তত্ত¡াবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম জানিয়েছেন, বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার পূর্বশর্ত হচ্ছে, সুশাসন ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা। দেশে সুশাসনের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। আর রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আপাত দৃষ্টিতে দেখা না গেলেও যথেষ্ট উৎকণ্ঠা কাজ করছে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। এই উৎকন্ঠা দ‚র না করলে শুধু ওয়ান স্টপ সার্ভিস দিয়ে বিনিয়োগ বাড়ানো যাবে না। এছাড়া বাংলাদেশে জমির দাম প্রতিবছর বাড়ছে। বিনিয়োগ না বাড়ার পেছনে এটি একটি বড় কারণ।
পলিসি রিসার্স ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৩ সাল দেশে ১৬০ কোটি ডলারের বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) এসেছে। এরপরও বিগত বছরগুলোর অবস্থা ততো ভালো না। এক্ষেত্রে তেমন উন্নতি হয়নি। ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স করপোরেশনের (আইএফসি) তথ্য অনুযায়ী, বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়ার দিক থেকে ১৮৯টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৮৮, সম্পত্তি নিবন্ধনের ক্ষেত্রে ১৮৮তম, বৈদেশিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ১৪০তম, নির্মাণকাজের অনুমতির ক্ষেত্রে ১৪৪তম, ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে ১৩১তম।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর দফতর সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নজিবুর রহমানের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় কয়েকটি সরকারি সংস্থার নিজস্ব আইনের আলোকে করা নীতিমালা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। জানা গেছে, বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতেই বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (বেপজা), বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা), বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) পৃথকভাবে সেবা দেবে। এজন্য প্রতিটি সংস্থা নিজেদের আইনের আলোকে পৃথক বিধিমালা তৈরি করেছে। ওই বিধিমালা নিয়েই মুখ্যসচিব মিটিং করেছেন।
সূত্র জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনস্ত বিডার দক্ষতা বাড়িয়ে প্রতিষ্ঠানটিকে আরও গতিশীল করার কথা ভাবছে সরকার। একই সঙ্গে এর স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও বিডার সুশাসন প্রতিষ্ঠার দিকেই নজর দেবে সরকার। জানা গেছে, ইতোমধ্যে এ বিষয়ে কাজ শুরু করেছে প্রধানমন্ত্রীর দফতর। এরই অংশ হিসেবে পরিবেশ অধিদফতর ও রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষসহ (রাজউক) সেবাদানকারী বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করেছে বিডার কর্মকর্তারা। বৈঠকের পর বিজনেস অটোমেশন কোম্পানির কাজেও গতি এসেছে।
ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু করতে এই সংস্থাটি কাজ করছে। এই সার্ভিসটি শুরু হলে একজন বিনিয়োগকারী পৃথিবীর যেকোনও প্রান্ত থেকে অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। দিন-রাত যেকোনও সময় অনলাইনে আবেদন করা যাবে। ব্যবসার ধরন অনৃযায়ী, উদ্যোক্তার কী কী সেবা দরকার তা চলে যাবে সংশ্লিষ্ট সেবা দানকারী সংস্থায়। নির্দিষ্ট দিনের মধ্যেই সংস্থাকে ওই সেবা দিতে হবে এমন বাধ্যবাধকতা রয়েছে বিডার।
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী আমিনুল ইসলাম জানিয়েছেন, বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার কাজ শুরু করেছি। এর সুফল বাংলাদেশ পাবে। অতীতে কী হয়নি, আর কী হয়েছে তা দেখে লাভ নাই। আমাদের দৃষ্টি এখন সামনে। আমাদের অনেক দূর যেতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।