Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভুল প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা

এসএসসি বাংলা প্রথমপত্র

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০২ এএম

এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার প্রথম দিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে ভুল প্রশ্নপত্র দিয়ে পরীক্ষা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। । চট্টগ্রাম, মাদারীপুর, নেত্রকোনা, গাইবান্ধা ও মুন্সিগঞ্জ ও কক্সবাজারে কয়েকটি কেন্দ্র পরীক্ষার্থীদের ২০১৮ সালের প্রশ্ন সরবরাহ করা হয়। সাতক্ষীরায় একটি কেন্দ্রে ৬ ঘণ্টা পরীক্ষা দিল শিক্ষার্থীরা। মাদারীপুরের কালকিনিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা। আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো তথ্য নিয়ে এ প্রতিবেদন :
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিনে গতকাল (শনিবার) বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষায় চট্টগ্রাম বোর্ডের আওতাধীন সাতটি কেন্দ্রে ভুল প্রশ্নপত্রে অনুষ্ঠিত হয়েছে পরীক্ষা। ৭টি কেন্দ্রের বিভিন্ন কক্ষে ২০১৯ সালের সিলেবাস অনুযায়ী ‘নিয়মিত’ আংশিক পরীক্ষার্থীর মাঝে ২০১৮ সালের সিলেবাসে ‘অনিয়মিত’ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বণ্টন করা হয়। এর ফলে নিয়মিত পরীক্ষার্থীরা পড়ে চরম বিপাকে। ভুল প্রশ্নে পরীক্ষা গ্রহণের ঘটনায় বিব্রত চট্টগ্রাম বোর্ড কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট সাতটি কেন্দ্র সচিবকে কারণ দর্শাও নোটিশ প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
এসএসসির প্রথমদিনের পরীক্ষায় চট্টগ্রাম বোর্ডের আওতায় যে ৭টি কেন্দ্রে এই ভুল প্রশ্নপত্র বিতরণের ঘটনা ঘটেছে সে কেন্দ্রগুলো হচ্ছে, চট্টগ্রাম মহানগরীর মিউনিসিপ্যাল মডেল হাইস্কুল, পতেঙ্গা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, হালিশহর খাজা গরীবে নেওয়াজ উচ্চ বিদ্যালয় ও ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এবং কক্সবাজারের পেকুয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, উখিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও পালংখালী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাহবুব হাসান দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, মূলত সংশ্লিষ্ট সাতটি পরীক্ষা কেন্দ্রের কক্ষ পরিদর্শকদের ভুল বা অসতর্কতাবশত নিয়মিত পরীক্ষার্থীদের অনিয়মিত সালের (২০১৮) প্রশ্নপত্র বিতরণ করা হয় এবং সেভাবে পরীক্ষা গ্রহণও হয়ে যায়। তবে কোনো কোনো কক্ষের পরীক্ষার্থীদের মাঝে এ প্রশ্নগুলো বণ্টন হওয়ার কারণে বিক্ষিপ্তভাবে এসব পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৩শ’ থেকে ৪শ’ পর্যন্ত হতে পারে।
এ পর্যন্ত (গতকাল সন্ধ্যায়) চারটি কেন্দ্রের প্রায় ২শ’ পরীক্ষার্থীর মাঝে অনিয়মিত বর্ষের প্রশ্নপত্র বিতরণের হিসাব পাওয়া গেছে। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক জানান, পরীক্ষার্থীদের অসুবিধার দিকটি বোর্ড কর্তৃপক্ষ বিশেষ বিবেচনা সহকারে দেখভাল করবে। তাছাড়া যারা দায়ী হিসেবে চিহ্নিত হবেন তাদের বিরুদ্ধেও যথাযথ ব্যবস্থা নেবে বোর্ড।
সাতক্ষীরা : ২০১৮ সালের প্রশ্নপত্র দিয়ে চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার চাম্পাফুল এপিসি বিদ্যালয়ে কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কেন্দ্র সচিব সুখলাল বাইনকে বরখাস্ত করা হয়েছে। ২০১৮ সালের প্রশ্নপত্র দিয়ে ৪৮ জন পরীক্ষার্থীর চলতি বছরের বাংলা প্রথমপত্রের পরীক্ষা নেয়া হয়। প্রায় তিন ঘণ্টা পর নতুন প্রশ্নপত্রে তাদের আবারও পরীক্ষা নেয়া হয়। ফলে তিন ঘণ্টার পরীক্ষা ছয় ঘণ্টা দিয়েছে তারা। বিষয়টি স্বীকার করে কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহীন ।
মুন্সীগঞ্জ : মুন্সীগঞ্জে এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিন মুন্সীগঞ্জে ৭৯ জন নিয়মিত পরীক্ষার্থী ২০১৮ সালের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দিয়েছে। উপজেলার এভিজেএম সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের ৯৬১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে কে কে গভর্নমেন্ট ইনস্টিটিউশনের ৭৯ জন নিয়মিত পরীক্ষার্থী ভুল প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দেয়।
কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, পরীক্ষা শেষে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জেলা প্রশাসকের বাসভবন ঘেরাও করেন। খবর পেয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এএইচএম রকিব হায়দার ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের শান্ত করেন এবং বিষয়টি বোর্ড কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলে জানান। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক সায়েলা ফারজানা বলেন, শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে ভুল প্রশ্নে পরীক্ষা হয়েছে। আমরা বোর্ডে কথা বলেছি। বোর্ড বলেছে, এমন সমস্যা হতে পারে।
নেত্রকোনা : গতবছরের প্রশ্নপত্র দিয়েই চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে। এমন ঘটনা ঘটেছে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে। বাংলা পরীক্ষায় উক্ত পরীক্ষাকেন্দ্রে গত বছরের (২০১৮) বাংলা প্রশ্নপত্র বিতরণ করা হয়। তবে পরীক্ষা শুরুর প্রায় আধাঘণ্টা পর শিক্ষার্থীদের মাঝে নতুন প্রশ্নপত্র সরবরাহ করা হলে তারা নতুন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দেয়। মোহনগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রথমে পুরনো বছরের সিলেবাস অর্থ্যাৎ ২০১৮ সালের প্রশ্নপত্র বিতরণ করা হয়েছিল। পরবর্তীতে সঙ্গে সঙ্গে নতুন বছরের প্রশ্ন বিতরণ করা হয়েছে। তাই এই ভুলকে স্বাভাবিক হিসেবে দেখছি। স্বাভাবিক ভুল বলছি এই কারণে যে এর ফলে কোনো সমস্যা হয় নাই, সার্বিকভাবে কোনো ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষ নাই।
এছাড়া গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতেও গত বছরের প্রশ্নপত্র দিয়ে নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষা নেয়ায় ফকিরহাট দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র সচিবকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে মাদারীপুরেও। এদিকে, রংপুরের পদাগঞ্জ স্কুল কেন্দ্রে ২০১৮ সালের সিলেবাসে প্রণিত প্রশ্নপত্রে তিনটি স্কুলের দেড়শ জনকে পরীক্ষা দিতে বাধ্য করার অভিযোগে বিক্ষোভ করেছে পরীক্ষার্থী-অভিভাবকরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: এসএসসি

২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
৩০ ডিসেম্বর, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ