Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঢাবিতে ৩৩তম জাতীয় কবিতা উৎসব শুরু

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার : | প্রকাশের সময় : ২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৪ এএম | আপডেট : ১২:৪৭ এএম, ২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

‘বাঙালির জয়, কবিতার জয়’ প্রতিপাদ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয়েছে ‘৩৩তম জাতীয় কবিতা উৎসব-২০১৯’। গতকাল শুক্রবার জাতীয় কবিতা পরিষদের আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার সংলগ্ন হাকিম চত্বরে দু’দিনব্যাপী উৎবের উদ্বোধন করেন প্রখ্যাত কবি ও সাহিত্যিক আসাদ চৌধুরী। এর আগে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন ও শিল্পী কামরুল হাসানের সমাধি এবং কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এরপর জাতীয় সঙ্গীত, জাতীয় পতাকা উত্তোলন, একুশের গান এবং উৎসব সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে উৎসব শুরু হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে দেশের সাম্প্রতিক সময়ে নিহতদের জন্য শোক প্রস্তাব ও এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। উদ্ভোধনী অনুষ্ঠানে কবিতা উৎসবের ঘোষণাপত্র পাঠ করেন জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য রুবী রহমান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন শাহাদাৎ হোসেন নিপু ও ফয়জুল আলম পাপ্পু।
৩৩তম জাতীয় কবিতা উৎসব শহীদ আসাদ, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক, শহীদ ডা. শামসুজ্জোহা ও শহীদ মতিউর রহমানের নামে উৎসর্গ করা হয়। এতে মুক্ত আলোচনা ও কবিতা পাঠ, আবৃত্তিপর্ব, সেমিনার, ছড়াপাঠ, কবিতার গান, পুরস্কার প্রদান পর্ব ও বিদেশি ভাষার কবিতার আসরসহ ১০টি পর্ব রয়েছে। সকাল ১০টায় থেকে শুরু হয়ে দু’দিনব্যাপী উৎসব আজ রাত ৯টায় শেষ হবে। গতকাল উদ্বোধনী দিনে উৎসবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি প্রফেসর কবি মুহাম্মদ সামাদ, পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তারিক সুজাত, জাতীয় কবিতা পরিষদ-২০১৯’র আহ্বায়ক রবিউল হুসাইন, উপদেষ্টা নূর আলম নূরু এবং কবি কাজী রোজী প্রমুখ।
এবারের উৎসবে বিদেশি অতিথি হিসেবে ভারত থেকে এসেছেন জ্যোতির্ময় দত্ত, মিনাক্ষী দত্ত, বীথি চট্টোপাধ্যায়, সেবন্তী ঘোষ, সুমন গুণ, দিলীপ দাস, বিমলেন্দ্র চক্রবর্তী, মৃণাল দেবনাথ ও শোভা দেববর্মণ। এছাড়া তুরস্ক থেকে তারিখ গুনেরসেল, যুক্তরাজ্য থেকে ক্লাইরি বুকার, চীন থেকে ড. তানজিয়ান চাই, শ্রীলঙ্কা থেকে জয়শংকর, ইরাক থেকে ড. আলী আল সালাহ, মালয়েশিয়া থেকে মালিম ঘোযালি, স্পেন থেকে জুলিও পাভানেট্টি, উরুগুয়ে থেকে আনাবেল ভিলার, কঙ্গো থেকে কামা কামান্ডা এবং নেপাল থেকে পুষ্প খানাল উৎসবে যোগ দিয়েছেন। উৎসবের প্রথম দিন চারটি পর্বে কবিতা পাঠ করা হয়েছে। এছাড়া ছিল আবৃত্তি পর্ব এবং মুক্ত আলোচনা।
সকাল ১০টায় উদ্বোধনী পর্বে কবি আসাদ চৌধুরী বলেন, প্রবল রাজনৈতিক সঙ্কটের মুহূর্তে জাতীয় কবিতা পরিষদ গোটা জাতির সামনে উপস্থিত হয়েছিল সামরিক স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে এবং মানবিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় নিয়ে। পল্লীকবি থেকে বিশ্বকবি দেশ বন্দনার অমর দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন যা আমাদের এক অম্লান প্রেরণা। কবিতা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তারিক সুজাত বাঙালির বিরত্বগাঁথা কবিতার মাধ্যমে হাজার বছর ধরে বেঁচে আছে উল্লেখ করে সরকারের কাছে ১ ফেব্রুয়ারিকে ‘জাতীয় কবিতা দিবস’ ঘোষণার দাবি জানান।
সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি কবি মুহাম্মদ সামাদ বলেন, বাংলাদেশে প্রতিবছর জাতীয় কবিতা উৎসব সমসাময়িক কালকে ধারণ করে। তিনি ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামীলীগের বিজয়কে বাঙালি ও কবিতার বিজয় উল্লেখ করে বাংলাদেশে যেন আর কোনোদিন মুজিব ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অন্ধকারের শক্তি মাথা তুলতে না পারে সে বিষয়ে সবাইকে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে আহ্বান জানান।
১৯৮৭ সালে এরশাদের স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে শৃঙ্খল মুক্তির ডাক দিয়ে কবিতা উৎসবের শুরু হয়। বাঙালির সকল জয়ের শিল্পিত ও সুন্দর সহযোদ্ধা কবিতার উপর সরকারের বাধাদানের প্রতিবাদে কবিরা রাজপথে নেমে আসেন। কালের পরিক্রমায় সে উৎসব আজ আন্তর্জাতিক রূপ নিয়েছে। আজ উৎসবের সমাপনি দিনে সেমিনার, কবিতা পাঠ, কবিতার গান পরিবেশন, পুরস্কার প্রদানসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে উৎসবের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ