Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বোরোর বাম্পার ফলনেও দুপচাঁচিয়ার কৃষকের কাটছে না দুশ্চিন্তা

প্রকাশের সময় : ১৩ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মো. গোলাম ফারুক, দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) থেকে
দুপচাঁচিয়া উপজেলায় চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা কে ছাড়িয়ে কৃষকরা রেকর্ড পরিমাণ জমিতে বোরো ধান চাষ করেছে। অনুকূল আবহাওয়া এবং জমিতে সেচ দিতে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কোনো প্রভাব না পড়ায় এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে ধান কাটা-মাড়াই নিয়ে কৃষকরা বিপাকে পড়েছেন। মাঠের পর মাঠজুড়ে এখন বোরো ধানের হিল্লোল। ক্ষেতের ধান পেকে গেছে। তবে কামলার (শ্রমিক) সংকট দেখা দেয়ায় কৃষকরা শঙ্কিত হয়ে পড়েছে। বগুড়ার তথা উত্তরাঞ্চলের শস্য ভা-ার হিসেবে পরিচিত দুপচাঁচিয়া উপজেলা। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে এই উপজেলায় ১৩ হাজার ২ শত হেক্টর জমিতে বোরো ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এরমধ্যে হাইব্রিড জাতের ২ হাজার ৪ শত হেক্টর এবং উফশী জাতের ১০ হাজার ৮ শত হেক্টর। এতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৫২ হাজার ৬ শত ৮৫ মেট্রিক টন নির্ধারণ করা হয়। এসব জমিতে রোপণের জন্য কৃষকরা ডিসেম্বর মাস থেকে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত বীজতলা তৈরি করে। এ লক্ষে চলতি মৌসুমে ৬ শত ৮০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের বীজতলার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। গতকাল ১০ মে মঙ্গলবার উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, এবার জমিতে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকরা জমির এই ধান কাটা-মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে। এ ব্যাপারে উপজেলা সদরের পাইকপাড়ার ফেরদৌস আলী বিশ্বাস (৪০), পূর্ব আলোহালী গ্রামের মুনছুর আলী (৪২), উত্তর সাজাপুর গ্রামের মৃত কাসেম আলীর পুত্র ফজের আলী (৬০), তরফদার পাড়ার আব্দুল মানিকের পুত্র লিটন (৪০), ইসলামপুর খাঁ পাড়ার রইচ উদ্দিনের পুত্র জিয়াউর হক জিয়া (৪২) জানান, তারা নির্ধারিত সময়ে জমিতে বোরো চারা রোপণ করেন। আবহাওয়া প্রতিকূলে থাকায় ফলনও বাম্পার হয়েছে। প্রতি বিঘাই ১৮ থেকে ২০ মণ দান উৎপন্ন হয়েছে। তবে কৃষকদের অভিযোগ কৃষি উৎপাদনের প্রধান উপকরণ সার, ডিজেল ও কীটনাশকের দাম বাড়ছে প্রতিনিয়ত। কিন্তু কৃষকদের পণ্যের দাম বাড়ছে না। আবার জমির ধান কাটার কামলারও (শ্রমিক) বড় সংকট। আধুনিক এ যান্ত্রিক যুগে বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়ন হলেও ধান কাটার ক্ষেত্রে কৃষকদের এখনো ভরসা করতে হয় কামলার (শ্রমিক) ওপর। এবারো উপজেলায় কামলার (শ্রমিক) খাওয়া থাকা দিয়ে আড়াই হাজার টাকা থেকে ৩ হাজার টাকায় বিঘা প্রতি জমির ধান কাটতে হচ্ছে। এরপরও বাজারে ধানের দাম অনেক কম। বর্তমানে বাজারে স্থানীয় জিরা সাড়ে ৫শ টাকা থেকে ৬শ টাকা এবং মোটা ধান ৪শ থেকে সাড়ে ৪শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে ধানের দাম কম থাকায় কৃষকরা ধান চাষে পানি, কীটনাশক, সার, কামলা খরচ বাদে তাদের আসল খরচ উটা নিয়েই শঙ্কিত হয়ে পড়েছে। ধান চাষে লাভের চেয়ে লোকসান গুনতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোস্তফা কামাল হোসেন “দৈনিক ইনকিলাব”-কে জানান, উপজেলায় এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকরা ধান কাটা-মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে। একই সাথে তিনি জানান, এবার বোরো আবাদ নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৩ হাজার ২ শত হেক্টর। যা অতিক্রম করে ১৩ হাজার ৩ শত ৫০ হেক্টর অর্জিত হয়েছে। তাই এবার উৎপাদনও বেশি হয়েছে। বাজারে ধানের দাম নিয়ে কৃষকরা কিছুটা কম হলেও সরকারিভাবে ধান ক্রয় শুরু হলেই কৃষকদের শঙ্কিত হওয়ার কিছুই থাকবে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বোরোর বাম্পার ফলনেও দুপচাঁচিয়ার কৃষকের কাটছে না দুশ্চিন্তা
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ