Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সুন্দরবনে চলছে গোলপাতা আহরণ

বাওয়ালিদের সুবিধার্থে কঠোর নিরাপত্তা

মোস্তফা শফিক,কয়রা (খুলনা) থেকে : | প্রকাশের সময় : ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:৪১ এএম

সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের ২টি ক‚পেএখন চলছে গোলপাতা আহরণ মৌসুম। নির্বিঘে গোলপাতা কাটতে পেরে খুশি বাওয়ালিরা। বন বিভাগের কঠোর নিরাপত্তা আর কড়াকড়িতে প্রথম ট্রিপের গোলপাতা কাটতে এখন অধিক ব্যস্ত বাওয়ালীরা।

জানা গেছে, সুন্দরবন থেকে বনজদ্রব্যআহরণ সঙ্কুচিত এবং চাহিদা কমে যাওয়ায় গোলপাতা সংগ্রহে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে বাওয়ালীরা। গোলপাতা আহরণের ভরা মৌসুমে এবার বাওয়ালীদের বিএলসি (অনুমতি) দেওয়ার ক্ষেত্রে কঠোর ছিল বন বিভাগ। ফলে আহরণ মৌসুমের একটু দেরিতে সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের ২ টি ক‚প(জোন) থেকে ব্যবসায়ীরা অনুমতি গ্রহণ করে সুন্দরবন অভ্যন্তরে প্রবেশ করেছে এর উপর নির্ভরশীল শ্রমজীবি মানুষেরা। তবে বনের ওপর থেকে চাপ কমাতে বনজদ্রব্য আহরণ সঙ্কুচিত করার সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছে বন বিভাগ।

খুলনা রেঞ্জের সহকারি বন সংরক্ষক (এসিএফ) মো. আবু সালেহ বলেন, নিবিঘে যাতে বাওয়ালীরা গোলপাতা কাটতে পারে তার জন্য বন বিভাগ থেকে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা। বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, পশ্চিম বিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জে ১ টি এবং খুলনা রেঞ্জে ১ টি গোলপাতা ক‚পরয়েছে। চলতি বছর খুলনা রেঞ্জের ১ টি ক‚পে গোলপাতা সংগ্রহ করার জন্য ১৬৮ টি বিএলসির অনুক‚লে বাওয়ালিরা খুলনা রেঞ্জে থেকে প্রথম দফায় ৮২ হাজার ৫শ’ মণ গোলপাতা সংগ্রহ করার অনুমতি (পারমিট) নিয়েছে। অন্যদিকে সাতক্ষীরা ক‚পে প্রথম দফায় ৩৭ টি বিএলসিতে ১৯ হাজার মন গোলপাতার অনুমতি নিয়েছে।

খুলনা ও সাতক্ষীরা গোলপাতার ক‚পকর্মকর্তা মো. সুলতান মাহমুদ ও কেএম কবির উদ্দিন বলেন, নিয়ম মেনেই গোলপাতা আহরণের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। বন প্রহরী কল্যাণ সমিতির সভাপতি অলিয়ার রহমান (মিলন) বলেন, গত ২৪ জানুয়ারি থেকে এ সকল বিএলসির অনুকুলে পারমিট দেওয়া শুরু হয়েছে এবং ৩০ মার্চ পর্যন্ত গোলপাতা আহরণ চলবে। কিন্তু ব্যবসায়ীদের আগ্রহ না থাকায় গোলপাতা আহরণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নাও হতে পারে বলে তিনি জানান।

বন বিভাগের তথ্য মতে, গোলপাতা আহরণের ক্ষেত্রে বেশ কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছে। শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে ৫০০ মণের বেশি ধারণক্ষমতার নৌকাকে বিএলসি দেওয়া যাবে না, গোলপাতা আহরণের জন্য নির্ধারিত সময়ের অতিরিক্ত সময় বনে অবস্থান করা যাবে না, নির্দেশনা সঠিকভাবে পালন করতে হবে, গোলপাতাঝাড়ের মাইজপাতা ও ঠেকপাতা কোনোভাবেই কাটা যাবে না এবং গোলপাতার আড়ালে যাতে কোনো ধরণের ‘বনজদ্রব্য পাচার না হয় সে বিষয়টি নিবিড় তদারকির মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হবে।

কয়রা উপজেলার সুতিরখালধার এলাকার বাওয়ালী নুর ইসলাম সানা জানান, ২০ বছর ধরে তিনি সুন্দরবন থেকে গোলপাতা সংগ্রহ করে আসছেন। কিন্তু বন বিভাগের এত কড়াকড়ি আগে কখনও দেখেনি। কয়রার খুচরা গোলপাতা ব্যবসায়ী সোলাইমান হাওলাদার বলেন, এখন আগের মতো আর গোলপাতার চাহিদা নেই। বিক্রি কম হওয়ায় অনেক খুচরা বিক্রেতাদের গত বছরের গোলপাতা এখনো রয়ে গেছে। তবে অনেক বাওয়ালী বলেন, গোলপাতায় যে পরিমাণ টাকা লগ্নি করা হয়, সেই তুলনায় ব্যবসা নেই। সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. বশিরুল আল-মামুন জানান, সুন্দরবনের ওপর থেকে চাপ কমানোর জন্য বনজদ্রব্য আহরণ সীমিত করা হয়েছে। তিনি প্রতিটি স্টেশনে ও ক‚পে নিয়মিত তদারকি করে বিএলসি নবায়ন করার অনুমতি দিয়েছেন। পাশাপাশি ক‚পে নৌকার মিল রেখে গোলপাতা কাটার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সুন্দরবনে চলছে গোলপাতা আহরণ

১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ