Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

লক্ষ্মীপুরে জানুয়ারীতেই সড়কে প্রাণ গেলো ১৩ জনের

বেপরোয়া গাড়ী চালক

লক্ষ্মীপুর জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৩১ জানুয়ারি, ২০১৯, ৪:৪৮ পিএম

লক্ষ্মীপুরে বেড়েছে সড়ক দুর্ঘটনা। চালকরা মানছেনা ট্রাফিক আইন। যানবাহনের চালকরা গাড়ি চালাচ্ছে বেপরোয়া গতিতে। নেই গাড়ির বৈধ কোন কাগজপত্র। প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে সড়কে অবাধে গাড়ি চালাচ্ছে তারা। এতে প্রতিনিয়তই ঘটছে সড়ক দূর্ঘটনা। 

চলতি মাসেই লক্ষ্মীপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নারী পুরুষ ও শিশুসহ প্রাণ হারিয়েছে ১৩ জন। আহত হয়েছেন প্রায় অর্ধশত যাত্রী।
অদক্ষ চালক এবং দ্রুত ও বেপরোয়া গতিতে যান চলাচলের কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটেই চলছে বলে জানায় স্থানীয়রা।
জেলা পুলিশ সুপার রাস্তার দু-পাশে গাছ কাটা, ট্রাফিক পুলিশেরও কিছু অসচেতনতার কথা স্বীকার করে বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গত বৃহস্পতিবার (২৪ জানুয়ারী) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পৌর শহরের দক্ষিণ তেমুহনী এলাকায় পিকআপ ভ্যান চাপায় মোটরসাইকেল আরোহী মিজানুর রহমান রুবেল নামে এক স্কুল শিক্ষক নিহত হয়।
এর আগে ২৩ জানুয়ারী বুধবার ভোর রাতে সদর উপজেলার মান্দারী ইউনিয়নের রতনপুর এলাকায় ট্রাক-সিএনজি’র মুখোমুখি সংঘর্ষে একই পরিবারের ৬জন ও সিএনজি চালকসহ ৭জন নিহতের ঘটনা ঘটে।
গত ২১ জানুয়ারী শনিবার পৌর শহরের টুকা মিয়া পুল এলাকায় ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা খাদে পড়ে সদর উপজেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শক কাজী সিরাজ উদ্দিন নিহত হয়। একই সময় সদর উপজেলার মান্দারী ইউনিয়নের যাদৈয়া নামক এলাকায় (আনন্দ পরিবহন) যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়। এতে বাসে থাকা অন্তত ২৫ যাত্রী আহতের ঘটনা ঘটে।
১৯ জানুয়ারী শনিবার সকালে উপজেলার নুরী গাছতলা এলাকায় লেগুনা ও পিকআপের ধাক্কায় মারা যান, আলাউদ্দিন স্বপন নামের এক পথচারী।
১৮ জানুয়ারী শুক্রবার সকালে সদর উপজেলার মজুচৌধুরীর হাট এলাকায় ট্রাক চাপায় নিহত হয় সুমি নামের এক গৃহবধূ। এসময় স্বামী জয়দল বন্দসী মারাত্মক আহত হন। একই দিন সকালে মান্দারী বাজার সড়কে নিহত হন মোঃ শাহজাহান মিয়া।
নুরুল ইসলাম, আবু জাফর, আরিয়ান শামিমসহ স্থানীয়রা জানান, ফিটনেস বিহীন গাড়ি ও লাইসেন্স বিহীন অদক্ষ চালকের কারণে দূঘর্টনা ঘটছে। অদক্ষ চালকরা বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালাতে গিয়ে দূর্ঘটনার পতিত হচ্ছে। এসব বিষয়েও সংশ্লিষ্ট বিভাগেরও তৎপরতার ঘাটতিও রয়েছে। দূর্ঘটনায় আতঙ্কিত স্থানীয়রা।
কলেজ শিক্ষক অধ্যাপক হারুন অর রশিদসহ সচেতন মহল জানান, গাড়ি চালকরা প্রশিক্ষিত ও দায়িত্বশীল হলে এসব দূর্ঘটনা কমবে। একই সাথে পথচারী ও যাত্রীরা সচেতন হতে হবে। ট্রাফিক আইন মেনে চলার বিষয়ে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
লক্ষ্মীপুর বিআরটিএর উপ-পরিচালক মো: আনোয়ার হোসেন জানান, কোন গাড়ী চালকই ট্রাফিক আইন মানছে না, নিয়ম কানুন মানছে না। বেপরোয়া গতিতে গাড়ী চালাচ্ছে। জেলায় যেহেতু সড়ক কম, তাই একই সড়কে অনেক গাড়ী চলাচলের কারণেও সড়ক দূর্ঘটনার অন্যতম কারণ। বেশিরভাগ চালকেরই ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। যদি একটু নিয়ম কানুন মেনে চলে তাহলে দূর্ঘটনায় জীবনহানীর ঘটনা কমবে।
লক্ষ্মীপুর পুলিশ সুপার আসম মাহতাব উদ্দিন জানান, সকলের বুঝা উচিত সড়কগুলোর কোথাও গতি নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থা নেই, সড়কের পাশে কোন গাছ নেই। সবাইকে একটু সতর্ক হতে হবে। কেউই চায় না দূর্ঘটনার মতো ঘটনা। আমরা চেষ্টা করছি, বিভিন্ন জায়গায় সচেতনতামূলক সভা করছি। হেলমেট বিতরণ করছি। ট্রাফিক, চালক ও যাত্রীদের সমন্বয় থাকলে দূর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বেপরোয়া গাড়ী চালক
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ