Inqilab Logo

রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শীতের সকালে সরিষা ফুলের হাসি

রাউজানে কৃষকের সাফল্য

রাউজান (চট্টগ্রাম) থেকে এম বেলাল উদ্দিন | প্রকাশের সময় : ২৫ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৬ এএম

রাউজানে বছরের পর বছর সরিষা চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। শীত কাল শুরু হলে নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত হলুদ চাঁদরের সরিষা ক্ষেতে আবৃত হয় রাউজান। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেয়েছে সরিষা আবাদ। সঠিক উদ্যোগ, প্রচারণা এবং কৃষি বিভাগের তৎপরতায় প্রত্যাশার তুলনায় আশানুরুপ বৃদ্ধি পাচ্ছে সরিষা আবাদ। প্রাকৃতিক প্রাচুর্যে সমৃদ্ধ উপযোগী সরিষা ফলনের ব্যাপক মাঠ রয়েছে রাউজানে। সমতল থেকে পাহাড়ি ঢালুসহ মধ্যবর্তি বিস্তীর্ণ জনপদে সহজ ফলন নিয়মের প্রচারনা পেলেই পতিত জমিগুলো ভরে উঠতে পারে হলুদের উৎসবে। ইতোমধ্যে অনেক গ্রামে সবুজ, বেগুনী, সাদা, সোনালী নানা মৌসুমী ফলনের পাশাপশি হলুদের হাঁসি যেন অন্য সকল সুন্দরকে হার মানিয়ে মাঠজুড়ে আলোর হাঁসি হয়ে উঠেছে।

উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা আতিক জানান, উপজেলার হলদিয়া, ডাবুয়া, চিকদাইর, নোয়াজিষপুর, রাউজান পৌর এলাকা, বিনাজুরি, কদলপুর, রাউজান ইউপিতে প্রচুর সরিষা চাষ হচ্ছে। তিনি জানান পুরাতন টরি-৭ থেকে বারি-১৪.১৫.১৬ জাতের সরিষায় তেলের পরিমান বেশী বিধায় আধুনিক জাতের প্রতি কৃষকের আগ্রহ বেশী। হলদিয়া, ডাবুয়া, কদলপুর, রাউজান পাহাড়ি এলাকা সংলগ্ন অনেক জমিতেই এখন বেড়েছে সরিষার চাষ। মাঘ মাসের ঠিক এই সময়ে মাঠে ঘাটে সরিষা ফোটার ধুম পড়েছে। এখানকার মাঠগুলো এখনো মাঠ জুড়ে সরিষা আবাদ না হলে ও যেই মাঠেই সরিষা ফুটেছে, সেই মাঠই যেন সরিষার হাঁসিতে কৃষকদের ও হাসি লেগে থাকে। হলুদের চাঁদরে গাড় সোনালী আভায় গোাঁ প্রান্তর হয়ে উঠেছে প্রাণবন্ত আলোকময়। সেলফি তুলতে ধুম লেগেছে সরিষা ক্ষেতে।

সরেজমিনে সোমবার পৌর এলাকা ৯নং ওয়ার্ডের সাহেব বিবি জামে মসজিদ এলাকায় গেলে সরিষা ক্ষেত সোনালী আলোতে ঝলমল করছে দেখা যায়। দেখা হয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার চন্দের সাথে, তিনি জানান এক একর জায়গায় সরিষা আবাদ করেছে আদর্শ কৃষক তসলিম উদ্দিন চৌধুরী। এখানে খুব ভাল ফলন হয়েছে। সে এলাকার ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও পৌর প্যানেল মেয়র জমির উদ্দিন পারভেজ বলেন, আমার এলাকায় শাক সবজি, ফল-মুলসহ সরিষার উৎপাদন বেড়েছে। তিনি বলেন চারবারের সাংসদ এবি এম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি মোহদয় দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে রাউজানের কৃষকদের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করছেন। কৃষিবান্ধব এমপির সহায়তায় অনেক কৃষক এখন লক্ষ লক্ষ টাকা ক্ষেত করে উপার্জন করে সাবলম্বি হয়েছেন।

উপজেলা কৃষি অফিসার বেলায়েত হোসেন জানান, এবার রাউজানে ৭০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। সে সরিষা থেকে প্রায় ৭ টন সরিষা উৎপাদন হওয়ার আশা প্রকাশ করেন তিনি। আমন ধান কেটে সরিষা চাষ করে পুনরায় বোরো ধান আবাদ করতে পারছেন কৃষকরা।
সূত্র জানায় তুলনায় বৃদ্ধি পায়নি সরিষা চাষ। গতবছর উৎপাদন হয়েছিল ১০০ হেক্টর জমিতে। এবার তা কমিয়ে ৭০ হেক্টরে দাড়িয়েছ।

কৃষি বিভাগ থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, দেশে এখন ১৫ জাতের সরিষার ফলন হচ্ছে। এর মধ্য রাউজানে ৭ টন সরিষা উৎপাদনের আশা করছেন কৃষি বিভাগ। এ সরিষা আবাদ সম্প্রসারিত হলে দেশে সরিষার আমদানি নির্ভরতা কমবে। প্রতি কেজি সরিষা থেকে ৫০০ গ্রাম তেল পাওয়া যায়। এ সরিষা আবাদের মাত্র ৯০ দিনের মাথায় ক্ষেত থেকে কাাঁ যায়। তারপর ক্ষেতে ইরি-বোরোর আবাদ করা যায়। বারি সরিষা আবাদ করে কৃষক বাম্পার ফলনের আশা করছেন। আধুিনক পদ্ধতি ব্যবহার রাউজানে ৫টি স্থান থেকে কাঠ বক্সের সাহায্য মধুও সংগ্রহ করেছিল উপজেলা কৃষি অফিস। এবার তা করা যাচ্ছেনা রানী মৌমাছির সংকটে। সব মিলিয়ে রাউজানে সরিষা আবাদে কৃষি অফিসের তদারকি ও কৃষকের ঘামঝরা পরিশ্রমে ফসল ঘরে উঠুক সে কামনা সকলের।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রাউজানে কৃষকের সাফল্য
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ