Inqilab Logo

বুধবার ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১, ০৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অনিশ্চিত হাবিপ্রবি’র ভর্তি পরীক্ষা

দেড় শতাধিক শিক্ষকের দায়িত্ব পালনে বিরত থাকার ঘোষণা

দিনাজপুর অফিস : | প্রকাশের সময় : ১৯ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০২ এএম

দাবি মানা না হলে দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) আন্দোলনরত দেড় শতাধিক শিক্ষক ভর্তি পরীক্ষাসহ কোন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করবে না। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত সহকারী অধ্যাপকরা ও প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরামের শিক্ষকরা চিঠির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে বিষয়টি অবহিত করেছেন। ফলে আগামী ২০ জানুয়ারি থেকে অনুষ্ঠিতব্য ২০১৯ সালের স্নাতক ভর্তি পরীক্ষা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বলছেন- সমস্যা হলেও ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। সূত্র মতে দেশের ৪৩টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৪২টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৯ সালের স্নাতক ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু হাবিপ্রবিতে সঙ্কটাবস্থার কারণে এখনও অনুষ্ঠিত হয়নি ভর্তি পরীক্ষা। ভর্তি পরীক্ষা তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল গত ১০ ডিসেম্বর থেকে ১৩ ডিসেম্বর। কিন্তু ১৪ নভেম্বর থেকে অব্যাহত শিক্ষক আন্দোলনের ফলে ভর্তি পরীক্ষা পিছিয়ে আগামী ২০ জানুয়ারি থেকে ২৩ জানুয়ারি নির্ধারণ করা হয়। এমন সময়ে আড়াইশ’ শিক্ষকের মধ্যে দেড় শতাধিক শিক্ষক ভর্তি পরীক্ষায় দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় পুরো পরীক্ষাটিই অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। এবার হাবিপ্রবি’র ২০০৫টি আসনে ভর্তির জন্য অংশ নিচ্ছে ১ লাখ ১২ হাজার ১৯২ জন। বিরাজমান এই সঙ্কটাবস্থায় হাবিপ্রবিতে ভর্তিচ্ছু লক্ষাধিক শিক্ষার্থী অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৪ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬১ জন সহকারী অধ্যাপক বেতন বৈষম্যের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর বিধান হালদারের কক্ষে যান। সেখানে তাদের ওপর হামলা হলে সেদিন থেকে বেতন বৈষম্য দূরীকরণ, সহকারী অধ্যাপকদের লাঞ্ছিত ও নারী শিক্ষিকাদের শ্লীলতাহানিকারীদের বিচার, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, রেজিষ্ট্রার ও ছাত্র উপদেষ্টার বহিষ্কারের দাবিতে ক্লাশ-পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন করছেন ৬১ জন সহকারী অধ্যাপক। তাদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরামও। এতে করে গত ২ মাসেরও অধিক সময় ধরে অধিকাংশ ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমে সৃষ্টি হয়েছে অচলাবস্থার।
সঙ্কট নিরসনে গত ১০ জানুয়ারি দিনভর আন্দোলনরত শিক্ষকদের সাথে আলোচনায় বসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এরপর গত ১৫ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু দুদিনের এই সভাতেও উভয় পক্ষ নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকায় আলোচনা ফলপ্রসু হয়নি। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আন্দোলত শিক্ষকরা সংকট নিরসনে প্রশাসন সুরাহা করবেন এমন আশায় থাকার পরেও সুষ্ঠু সমাধান না হওয়ায় নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ভর্তি পরীক্ষায় দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত সহকারী অধ্যাপকরা ও প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরামের শিক্ষকরা চিঠির মাধ্যমে বিষয়টি প্রশাসনতে অবহিত করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বরাবর দেয়া পৃথক দু’টি চিঠিতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান সংকটের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করায় ভর্তি পরীক্ষায় দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। একইসাথে বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরামের সাথে আলোচনা সভা হওয়ার কথা থাকলেও আকস্মিক সেটি বাতিল করায় সাম্প্রতিক অচলাবস্থাকে আরো অন্ধকারে ঠেলে দেয়ার কথা উল্লেখ করেছে প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরাম। সংকটের সমাধান হলেই সকল ধরনের একাডেমিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরামের সদস্য প্রফেসর ড. মমিনুল ইসলাম জানান, শিক্ষকদের দাবি-দাওয়ার বিষয়ে সুষ্ঠু সমাধান না হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। চলমান আন্দোলনের দাবিগুলো মেনে নেয়া হলেই শিক্ষকরা ক্লাশ-পরীক্ষায় ফিরে যাবে। এ ব্যাপারে হাবিপ্রবি’র রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. সফিউল আলমের সাথে কথা বলা হলে তিনি বলেন, ‘আমি বিষয়টি জানি না, কোন কাগজ পাইনি। তবে আন্দোলনরতরা ভর্তি পরীক্ষায় দায়িত্ব পালন না করলেও পরীক্ষা হবে। তবে সব শিক্ষকদের অংশগ্রহণ করাটা জরুরি, না হলে কিছুটা সাফার হবে।’ তারপরও ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হাবিপ্রবি

২৯ জানুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ