পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বর্ষা মৌসুমে সমুদ্র থাকে উত্তাল। তখন জোয়ারের সাথে লাখ লাখ টন পলিমাটি নদ নদীতে প্রবাহিত হয়। শুস্ক মৌসুমে নদীতে জোয়ার কম থাকায় অসংখ্য ডুবোচর দেখা যায়। ডুবোচরগুলো এক সময় বিশাল এলাকায় পরিণত হয়। তেমনিভাবে দক্ষিণাঞ্চলীয় হাতিয়া দ্বীপের চারদিকে মেঘনার বুকে কমপক্ষে ৪০টি চর জেগেছে। জেগে উঠা ৩টি চর নিয়ে যথাক্রমে নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন, হরণী ইউনিয়ন ও চানন্দী ইউনিয়ন গঠিত। এছাড়া আরো ১০টি ইউনিয়নের সমান ভূমি জেগেছে।
অপরদিকে, যে হারে ভূমি জাগছে তাতে করে আগামী ৪/৫ বছরে একটি জেলা আয়তনের সমান হবে। বর্তমান সময়ে জোয়ারে দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় যে পরিমান ভূমি বিলীন হচ্ছে, তেমনিভাবে দ্বীপ উপজেলার চারপাশে তার চেয়ে অন্তত আটগুণ ভূমি জাগছে। হাতিয়ার বয়ারচরের পূর্ব পার্শ্বে অবস্থিত বিশাল আয়তনের নলের চরের সীমানা পেরিয়ে পূর্ব ও দক্ষিণে কয়েকটি বিশাল চর জেগে উঠেছে। আগামী ২/৩ বছরের মধ্যে এসব চরাঞ্চলে চাষাবাদ শুরু হবে। তেমনিভাবে হাতিয়ার মূল ভূখন্ড নলচিরা ঘাট থেকে চেয়ারম্যান ঘাটের মধ্যবর্তী নদীতে জেগে ওঠা বিশাল ডুবোচর এখন রীতিমত নৌ-যান চলাচলে হুমকি সৃষ্টি করছে। বুড়িরচর ইউনিয়নের রহমত বাজারের দেড় কিলোমিটার পূর্ব ও দক্ষিণে গত এক দশকে কমপক্ষে ৩০ বর্গকিলোমিটার ভূমি জেগেছে। বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে, বুড়িরচর ইউনিয়নের পূর্ব-দক্ষিণে কালিরচর পেরিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে একটি ইউনিয়ন আয়তনের সমান ভূমিতে জনবসতি গড়ে উঠার পাশাপাশি এখানে চাষাবাদ ও শুটকি তৈরি হচ্ছে। কালির চরের পূর্ব ও দক্ষিণে সাগরের বুক চিরে আগামী এক দশকে আরো শতাধিক বর্গকিলোমিটার ভূমি জেড়ে ওঠার আশা করছে স্থানীয় জনসাধারণ। হাতিয়া উপজেলার পশ্চিমে তমরদ্দি বাজারের পশ্চিম দিকে ভোলা জেলার মনপুরা উপজেলা। কিন্তু গত ৬/৭ বছর থেকে উভয় উপজেলার মধ্যবর্তী নদীতে বিশাল চর জাগছে। আগামী এক দশকে এখানে আরো ৫০ বর্গ কিলোমিটার ভূমি জেগে উঠবে বলে স্থানীয়রা আশাবাদ ব্যক্ত করছে।
হাতিয়া উপজেলা নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের দক্ষিণ-পূর্ব পার্শ্বে বিশাল চর জাগছে। এক দশক পূর্বে জেগে ওঠা দমার চরে এখন দশ সহস্রাধিক অধিবাসী বসবাস রয়েছে। এখানে ধান, তরকারি ও রবিশস্য উৎপাদনের সুনাম রয়েছে। নিঝুমদ্বীপের দক্ষিণ ও পূর্বে দিকে গভীর সমুদ্র অর্থাৎ বিশাল বঙ্গোপসাগর অবস্থিত। জাহাজমারা নৌ-ঘাট থেকে জেলেরা দক্ষিণে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে পথিমধ্যে ৮০/৯০ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করার পর পানির গভীরতা পেয়েছে মাত্র ৮/১০ মিটার। আগামী এক দশকে এ পথে বিশাল ভূমি জেগে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জেলেদের সূত্রে জানা গেছে। অন্যদিকে নিঝুমদ্বীপের পূর্ব দিকে গভীর সমুদ্রের বুকে আরো ৮/১০ টি চরের সন্ধান পেয়েছে জেলেরা। সবকিছু মিলিয়ে আগামী এক দশকে জেলার দক্ষিণাঞ্চলীয় মেঘনায় যে পরিমান ভূমি জেগে উঠবে, তাতে একটি বিশাল আয়তনের জেলার সমান হবে।
উল্লেখ্য, দেশের অন্যান্য নদ নদীর চাইতে নোয়াখালীর দক্ষিণাঞ্চলীয় মেঘনা বছরের অধিকাংশ সময় উত্তাল থাকে। বিশেষ করে বঙ্গোপসাগর থেকে লাখ লাখ টন পলিমাটি জোয়ারের সাথে মিশে এখানকার নদ-নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে মাত্র ৩/৪ বছরের মধ্যেই নদীর স্রোত পরিবর্তন হয়। আর এভাবে প্রতি বছর হাতিয়া দ্বীপে মেঘনার বুক চিরে অসংখ্য চর জাগছে। হাতিয়া উপজেলার কয়েকজন এলাকাবাসী ইনকিলাবকে জানান, হাতিয়া দ্বীপের চারপাশে কমপক্ষে ৪০টি ডুবো চর জেগে উঠেছে। এরমধ্যে ৭/৮টিতে বসতি গড়ে উঠেছে। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে আরো ৬/৭টি চরে চাষাবাদ শুরু হবে। অর্থাৎ মেঘনায় প্রতি বছর যে হারে চর জাগছে, তাতে করে আগামী এক দশকে এখানকার ভৌগলিক মানচিত্র পাল্টে যাবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।