Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সত্য পথের পথিক হও

মুনশী আবদুল মাননান | প্রকাশের সময় : ১৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

সত্য হলো আলো। আর মিথ্যা হলো অন্ধকার। এভাবেই সত্য-মিথ্যার তুলনা করা হয়। আলোর বিপরীতে যেমন অন্ধকার, তেমনি সত্যের বিপরীতে মিথ্যা। অনাদীকাল ধরে এ দু’য়ের দ্ব›দ্ব চলছে। মানব জীবনের সামনে দু’টি পথ উন্মুক্ত। একটি সত্যের পথ, অন্যটি মিথ্যার।
আল্লাহপাক সত্যের পথ অনুসরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। মিথ্যাকে পরিহার করার কথা বলেছেন। সত্যানুসরণে মুক্তি ও সফলতা। মিথ্যানুসরণে ব্যর্থতা ও বিপর্যয় অবধারিত। এ কারণেই আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেছেন, ‘হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে ভয় করা এবং সত্যের সত্য পথের পথিকদের সঙ্গে থাক। (সূরা তাওবা: ১১৯)। সত্যের সন্ধান দিতে আল্লাহ তায়ালা যুগে যুগে নবী-রাসূল সা. পাঠিয়েছেন। তারা সত্য প্রচার করেছেন, সত্যের সঙ্গে মিথ্যার ফারাক বুঝিয়ে দিয়েছেন। যারা নবী-রাসূল সা. দের অনুসরণ করেছে তারা সত্য পথের পথিক। তারা সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
আর যারা শয়তানের প্ররোচণায় মিথ্যা অবলম্বন করেছে, তারা বিপথগামী হয়েছে। সত্যের জয় ও মিথ্যার পরাজয় অবশ্যম্ভাবী। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আপনি একথা ঘোষণা দিন যে, সত্য এসে গেছে বাতিল বিলীন হয়ে গেছে। নিশ্চয়ই বাতিল বিলীন হওয়ারই কথা। (সূরা বনী ইসরাঈল: ৮১)।
কারা সত্যপতের পথিক? আল্লাহপাক বলেছে, ‘নেক কাজ এটা নয় যে, তোমরা পূর্ব দিকে বা পশ্চিম দিকে মুখ করে নিলে; বরং আসল নেককাজ হলো এই, ঈমান আনবে আল্লাহ, আখেরাতের দিন, ফেরেশতা, কিতাব ও নবীগণের ওপর। আর সম্পদ ব্যয় করবে তারই মহব্বতে আত্মীয়-স্বজন, এতিম-মিসকীন, মুসাফির-ভিক্ষুক ও মুক্তিকামী ক্রীতদাসদের এবং যারা কৃত প্রতিজ্ঞা সম্পন্নকারী এবং অভাবে-শোকে, যুদ্ধের সময় ধৈর্যধারণকারী, তারাই সত্যাশ্রয়ী আর তারাই পরহেজগার। (সূরা বাকারা: ১৭৭)।
নবী শ্রেষ্ঠ মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সা. সব সসময়ই সত্যানুসারী হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ বর্ণিত একটি হাদিসে তিনি বলেছেন, তোমরা সত্য কে নিজেদের ওপর অপরিহার্য করে নাও। কেননা সত্যবাদিতা নেকির দিকে নিয়ে যায়। একবার আবু যর রা. রাসূলুল্লাহ সা. কে বলেন, আমাকে আরো বাড়িয়ে উপদেশ দিন। জবাবে রাসূলুল্লাহ সা. বলেন, তুমি তিক্ত হলেও সত্য ও ন্যায় কথা বল।
আমাদের দেশ ও সমাজে সততা, সত্যবাদিতা এবং সত্যপথের অনুসরণ ক্রমাগত কমে যাচ্ছে। ফলে পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে নানারকম অবক্ষয় ও বিপর্যয় বাড়ছে। এ থেকে রক্ষা পেতে হলে আমাদের সত্যবাদী ও সত্যপথের পথিক হতে হবে। আল্লাহর কালাম ও রাসূলুল্লাহ সা.-এর নির্দেশনা আন্তরিকভাবে নিষ্ঠার সঙ্গে অনুসরণ করতে হবে।
রাসূলুল্লাহ সা. একটি হাদিসে বলেছেন, তোমরা আমাকে ছয়টি বিষয়ে আমানত দাও, আমি তোমাদের জন্য জান্নাতের জামিন হব। এই ছয়টি আমানত হলো, যখন তোমরা কথা বলবে, সত্য বলবে। যখন প্রতিশ্রুতি দেবে, পালন করবে। যখন তোমাদের কাছে আমানত রাখবে, দিয়ে দিবে। দৃষ্টি অবনমিত রাখবে এবং নিজেদের হস্ত আয়ত্তে রাখবে।



 

Show all comments
  • সত্য পথের পথিক ১৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৪১ এএম says : 0
    সত্যের আহ্বান তাঁরই (আল্লাহর)। যারা তাঁকে ছাড়া অন্য কাউকে আহ্বান করে, তারা তাদের ডাকে কোনো সাড়া দেয় না। তাদের দৃষ্টান্ত ওই ব্যক্তির মতো, যে তার মুখে পানি পৌঁছাবে—এ আশায় তার দুই হাত পানির দিকে প্রসারিত করে, অথচ তা তার মুখে পৌঁছানোর নয়। (অনুরূপ) কাফিরদের আহ্বান (প্রার্থনা) নিষ্ফল। (সুরা : রাদ, আয়াত : ১৪)
    Total Reply(0) Reply
  • Zulfiqar Ahmed ১৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৪১ এএম says : 0
    সৃষ্টিজগৎ আল্লাহর অসীম কুদরতের অধীন। সৃষ্টিজগতের নিজস্ব কোনো ক্ষমতা নেই। প্রকৃতি ও পৃথিবীকে মহান আল্লাহই বিশেষ ক্ষমতা দিয়েছেন। সুনিপুণ কৌশলে তিনি সৃষ্টিজগৎ পরিচালনা করেন। কাজেই এক আল্লাহর ইবাদত ছাড়া অন্য কারো ইবাদত গ্রহণযোগ্য নয়। এ বিষয়ে আলোচ্য আয়াতে বলা হয়েছে, কাফিররা বিপদাপদ ও প্রয়োজনের সময় জড়বস্তুর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করে, অথচ সৃষ্টিজগতের নিজস্ব কোনো শক্তি বা সামর্থ্যই নেই। তাদের অবস্থা ওই ব্যক্তির মতো, যে পানির কাছে পানি প্রার্থনা করে এবং পরিণতিতে পানি না পেয়ে তৃষ্ণার্ত থেকে কষ্ট পায়।
    Total Reply(0) Reply
  • আমিন মুন্সি ১৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৪১ এএম says : 0
    আসলে প্রত্যেক মানুষই স্বভাবগতভাবেই প্রকৃত স্রষ্টাকে অন্বেষণ করে, তবে এ ক্ষেত্রে অনেকেই বিভ্রান্তি ও বিচ্যুতির কারণে প্রকৃত স্রষ্টার পরিবর্তে কল্পিত স্রষ্টার নিগড়ে আবদ্ধ হয়ে পড়ে। তাদের অবস্থা পানি মনে করে মরীচিকার পেছনে ছোটার মতো। ‘সত্যের আহ্বান আল্লাহর’-এর তাফসির প্রসঙ্গে হজরত আলী (রা.) বলেন, এর অর্থ হলো তাওহিদ অর্থাৎ আল্লাহর একত্ববাদ। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, এর অর্থ ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো ইলাহ বা উপাস্য নেই।
    Total Reply(0) Reply
  • রিপন ১৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৪২ এএম says : 0
    আল্লাহকে বাদ দিয়ে সৃষ্ট বস্তুর উপাসনা করলে পরকালে এর কোনো সুফল পাওয়া যাবে না। এ প্রার্থনা ও উপাসনা তাকে সত্য পথে পরিচালিত করতে পারবে না।
    Total Reply(0) Reply
  • তানভীর আহমাদ ১৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৪৩ এএম says : 0
    ‘আপনি একথা ঘোষণা দিন যে, সত্য এসে গেছে বাতিল বিলীন হয়ে গেছে। নিশ্চয়ই বাতিল বিলীন হওয়ারই কথা। (সূরা বনী ইসরাঈল: ৮১)।
    Total Reply(0) Reply
  • তানভীর আহমাদ ১৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৪৪ এএম says : 0
    সত্যের সাথে থাকবো সত্য পথে চলবো। মাটির দেহ নিয়ে কখনও করিওনা বরাই, দুচোখ বন্দ হলে দেখবে পাশে কেউ নাই। যাকে তুমি আপন ভাবো সে হবে পর, আপন হবে নামাজ,রোজা অন্ধাকার কবর
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইসলাম

৩ মার্চ, ২০২৩
২ মার্চ, ২০২৩
১ মার্চ, ২০২৩
২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন